শিক্ষার্থীরা উদ্বিগ্ন
- সম্পাদকীয় ডেস্ক
রাজধানীর সাতটি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত করার পর এসব কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছেন। এসব কলেজ দীর্ঘদিন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম অনুযায়ী এসব কলেজে পাঠদান ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পরও এসব কলেজে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাক্রম অনুসরণ করা হচ্ছে। ওদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও কোনো সিলেবাস দেয়নি। এসব কলেজে অধ্যয়নরত দুই লাখ শিক্ষার্থীর অনেকের রচনামূলক পরীক্ষা শেষ হলেও আটকে গেছে ব্যবহারিক পরীক্ষা। অন্য কলেজগুলোর ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলেও এই সাত কলেজে এখনো ব্যবহারিক পরীক্ষা হয়নি। ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন বিষয়ে মাস্টার্সের শেষ পর্ব পরীক্ষার রুটিন দেওয়া হলেও এই সাতটি কলেজের শিক্ষার্থীরা রয়েছেন অন্ধকারে। সৃষ্ট জটিলতায় নতুন করে সেশনজট দেখা দিতে পারে বলেও অনেকের আশঙ্কা।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেশে কলেজের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার ১৫০টি। এসব কলেজে বিভিন্ন বিষয়ে সম্মান ও মাস্টার্স কোর্সে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২১ লাখ। এর মধ্যে সরকারি কলেজেই শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ লাখের মতো। ২০১৪ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি কলেজগুলোকে সংশ্লিষ্ট এলাকার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৮ অক্টোবর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশের ১৮৪টি কলেজকে ২১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভাগ করে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এ বিষয়ে একটি কমিটিও গঠিত হয়। দেশের ১৭৭টি কলেজকে অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেওয়া না হলেও গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেওয়া হয় রাজধানীর সাতটি কলেজ।
স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়ানো হয় এমন কলেজ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেওয়ার আগে একটি নীতিমালা তৈরি করা প্রয়োজন ছিল। এসব কলেজের শিক্ষার্থীদের পাঠক্রম কী হবে, পরীক্ষা কিভাবে নেওয়া হবে—এসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা জরুরি ছিল। সব কলেজ একসঙ্গে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দিলে জটিলতা অনেক কমে যেত। এখন এইচএসসি পরীক্ষা চলছে, কিছুদিন পরই দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে। নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শিক্ষার্থী ভর্তি ও শিক্ষাবর্ষ শুরু করা গেলে কোনো জটিলতা থাকত না। আমরা আশা করব, শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ দূর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।