প্রতিষ্ঠার ২০ বছর : অর্জন অনেক, এগিয়ে যাবে আরও বহুদূর

প্রতিষ্ঠার ২০ বছর : অর্জন অনেক, এগিয়ে যাবে আরও বহুদূর

  • মোঃ আনোয়ার হাবিব কাজল

বিশ্বজুড়ে পরিচিত ফুল ড্যাফোডিলের নামে প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০০২ সালের ২৪ জানুয়ারি। বিশ বছর পর বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থী মুখরিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল মাত্র ৬৮জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে। মাত্র ক’বছরে সবাইকে অবাক করে দিয়ে ড্যাফোডিল উঠে আসে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক মূল্যায়িত মানসম্পন্ন সেরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায়। শুধু বাংলাদেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে।

জন্মলগ্ন থেকেই অবিরত প্রযুক্তিভিত্তিক কার্যক্রমের সংশ্লিষ্টতা এবং তরুণ উদ্যোক্তা সৃষ্টিই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে আজ সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটিতে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছে। ‘ব্লেন্ডেড লার্নিং’ শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে ইতিমধ্যে অলাইন শিক্ষায় বাংলাদেশে রোল মডেল হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। আমার প্রিয় দার্শনিক রুশো। রুশো বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় হবে শহর থেকে দূরে নির্জন কোনো জায়গায়, যেখানে থাকবে না কোলাহল, পরিবেশ হবে মুক্ত, শিক্ষার্থীরা বেড়ে উঠবে অপরূপ প্রকৃতির কোলে আর প্রকৃতি হবে তাদের শিক্ষক।’ সেই আদলেই প্রায় দু’শো একর জায়গার উপর তৈরি করা হয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস। সুতরাং ভালো না লেগে উপায় নেই।

ঢাকার অদূরে ছায়াঘেরা, পাখির কলকাকলিতে মুখরিত ছায়া সুনিবঢ় শান্তিময় সবুজ পরিবেশে আশুলিয়ায় ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটিতে ২০০ শত একর জায়গার উপর ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় এর সবুজ ক্যাম্পাস। খেলামেলা পরিবেশে সবুজ ক্যাম্পাসটি প্রকৃতি প্রেমিক যে কাউকেই খুব সহজেই আকৃষ্ট করবে। পুরো ক্যাম্পাসকে ঘিরে সৌন্দর্য্য বর্ধনে কর্তৃপক্ষ নানা আয়োজনের যেমন কোন কমতি রাখেননি তেমনি শিক্ষার্থীরাও তাদের প্রাণের উচ্ছ্বাস শতধারায় উৎসারিত করে আনন্দ সঞ্জীবনীর অমৃত সুধা গ্রহণে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করে না। শিক্ষার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা পরখ করে নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যরে আধার নলেজ ভ্যালি, বনমায়া, ফুড কোর্ট, ফোয়ারা, এয়ারক্র্যাফ্ট, গ্রীন গার্ডেন, জিমনেশিয়াম, সুইমিং পোল, ইনোভেশন ল্যাব, গলফ কোর্স। লেখাপড়ার পাশাপাশি সর্বত্র চলে জম্পেস আড্ডা। আর যারা ক্রীড়ামোদী তাদের জন্য রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট মাঠ, বাস্কেটবল কোর্ট, ভলিবল কোর্ট, ব্যাডমিন্টন কোর্ট, ইনডোর কমপ্লেক্স। স্বচক্ষে না দেখলে ‘স্টেট অব দি আর্ট’ ক্যাম্পাসের এ বিশালতাকে কথার ফুলঝুড়ি আর উপভোগ্য বর্ণনায় ফুটিয়ে তোলা খুবই দূরহ কাজ।

কবি বন্দে আলী মিঞা’র ভাষায় বলতে হয়, ‘আমাদের গ্রামখানি ছবির মতন/ মাটির তলায় এর ছড়ানো রতন/ আমগাছ জামগাছ বাঁশঝাড় যেন/ মিলেমিশে আছে ওরা আত্মীয় হেন/ পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই/ একসাথে খেলি আর পাঠশালে যাই। ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক এমন বিশ্ববিদ্যালয় ছবির মতোই সব যেন চোখের সামনে।

শুধুমাত্র সৌর্ন্দ্যবর্ধনে নয় গুণগত শিক্ষার অনন্য আধার হিসেবেও এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। অতিসম্প্রতি তথ্যপ্রযুক্তির অলিম্পিকখ্যাত বিশ্ব সম্মেলন ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজিতে (ডব্লিউসিআইটি-২০২১) ‘ই-এডুকেশন এন্ড লার্নিং’ এ “গ্লোবাল আইসিটি এক্সসেলেন্স এওয়ার্ড” পাওয়ার গৌরব অর্জন করেছে এটি যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্যের মুকুটে আর একটি পালক সংযুক্ত করেছে। শুধু তাই নয়, এ অর্জনের মধ্য দিয়ে অনলাইন এডুকেশনে শুধুমাত্র বাংলাদেশে একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে নয় বরং বিশ্ব দরবারেও শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করল ডিআইইউ। কিউএস এশিয়া ইউনিভার্সিটি র‌্যাঙ্কিং ২০২১ এ এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বাংলাদেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এর অবস্থান ৪র্থ। এছাড়াও ইউআই গ্রিনমেট্রিক ওয়ার্ল্ড র‌্যাঙ্কিং ২০২১ এবং টাইম্স হায়ার এডুকেশন ইউনিভার্সিটি ইমপ্যাক্ট র‌্যাঙ্কিং ২০২০’-এ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে। আন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত ও স্বীকৃত সবকটি র‌্যাংকিং এ বিশ্ববিদ্যালয়টি তার অবস্থান ধরে রেখেছে।

শুধুমাত্র ক্যাম্পাস নয় গুণগত শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের থাকা, খাওয়ার পরিবেশের গুরুত্বও কম নয়। শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দূরীকরণে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যশনাল ইউনিভার্সিটিতে রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের হোস্টেল সুবিধা। শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ, মানসম্পন্ন খাবার, ইন্টারনেট, ওয়াইফাই, শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ বর্তমানে প্রায় ১০,০০০ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে এ বিশ্বদ্যালয়ে। শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ডিজিটাল ক্লাশ রুম, কম্পিউটার ল্যাব, টেক্সটাইল ল্যাব, ফিজিক্স ল্যাব, ফার্মাসি ল্যাব, ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ল্যাব, ফ্যাব ল্যাব (ডিজিটাল ফেব্রিকেশন), জেএমসি ল্যাব, সিসকো ল্যাব, মাইক্রোসফট আইটি একাডেমি, লিনাক্স, রেডহাট ও ওরাকল, মাল্টিমিডিয়া ল্যাব, ইনোভেশন ল্যাব।

মহামারীর এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১০-১৫% অতিরিক্ত বিশেষ বৃত্তি প্রদান এবং স্প্রিং ২০২১ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের জন্য ২২ কোটি টাকার প্রনোদনা প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অর্থের অভাবে একজন শিক্ষার্থীরও যেন পড়ালেখা বন্ধ না হয় এ ব্যপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট রয়েছেন। তাই ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সকল শিক্ষার্থীকে এবং তাদের অভিভাবকদের  জীবনবীমার আওতায় এনেছে কর্তৃপক্ষ। অনাকাঙ্খিত যে কোনো দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক মারা গেলে তার শিক্ষার বাকী ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তপক্ষের। তেমনিভাবে অধ্যয়নরত একজন শিক্ষার্থী অকালে মারা গেলে তার পরিবারকেও বীমা সুবধার আওতায় এককালীন আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয় যা বাংলাদেশে বিরল। 

 শিক্ষার্থীদের কর্ম উপযোগী করে গড়ে তুলতে ‘ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ (সিডিসি) বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি সুসম্পর্ক এবং সেতুবন্ধন তৈরির মাধ্যেমে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে যাচ্ছে। এছাড়াও ইন্টার্নশিপ প্লেসমেন্ট, ক্যারিয়ার গ্রুমিং, ফিল্ড ভিজিটসহ নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একবিংশ শতাব্দির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যোগ্য করে গড়ে তুলছে ‘ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার।

শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী মেধাকে জাগ্রত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ‘ইনোভেশন ল্যাব’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই ইনোভেশন ল্যাবে মার্কেট স্পেস, রোবটিক জোন, থ্রি-ডি প্রিন্টার, আইওটি নির্ভর বৈদ্যুতিক বাল্ব, ফ্যান, শীতাতপযন্ত্র, আর্কিটেকচারাল ডিজাইন জোন, বুক রিডিং জোন, বিজনেস ইনকিউবেটর, মিটিং রুম, অ্যানড্রয়েড ও উইনডোজ সুবিধা সম্বলিত অল ইন ওয়ান টিভি ইত্যাদি রয়েছে। এসব সুবিধা ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ভাবনী আইডিয়াকে বাস্তবে রূপ দান করতে পারবে।

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের নিয়ে যেতে শুরু থেকেই নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। এ পর্যন্ত বিশ্বের ৪৫০টির ও অধিক স্বানামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। এশিয়া সামার প্রোগ্রাম, শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিনিময় প্রোগ্রাম, স্কলারশীপ, ইন্টার্নশিপ, রিসার্স, জয়েন্ট কনফারেন্স, বিভিন্ন প্রতিযোগীতাসহ চুক্তিবদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে সারাবছরই নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী।        

গত কয়েক বছর যাবৎ বিদেশী শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আঙ্গিনা। ইতোমধ্যে আমেরিকা, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিন আফ্রিকা, নেপাল, দক্ষিণ কোরিয়া, সোমালিয়া, নাইজেরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ৪০০’র অধিক শিক্ষার্থী ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে বিভিন্ন বিভাগে পড়াশোনা করছে।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন অনুষদ থেকে নিয়মিতভাবে জার্নাল প্রকাশিত হচ্ছে এবং শিক্ষক শিক্ষার্থীদের গবেষণাকর্মে আরো বেশী উদ্বুদ্ধ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে রিসার্চ ডিভিশান এবং রিসার্চ ফান্ড। ২০২১ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে গবেষণাকর্মে সর্বোচ্চ অর্থ ব্যয় করার রেকর্ড রয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির।    

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কথায় নয় কর্মে বিশ্বাসী। শিক্ষার্থীরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের গর্ব এবং প্রাণ। ইতোমধ্যে দেশ এবং দেশের বাহিরে বিশেষ করে গুগল, ইয়াহু সহ অনেক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত রয়েছে। বিসিএস ক্যাডারে ডিআইইউ শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত ভালো ফলাফল অর্জন করছে এবং সরকারী বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মরত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আ্যালমনাই এসোসিয়েশনের মাধ্যমে সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতু বন্ধন তৈরি হয়। দেশ এবং দেশের বাইরে আ্যালমনাইরা ড্যাফোডিল আ্যালমনাই এসোসিয়েশন নেটওয়ার্ককের মাধ্যমে যুক্ত রয়েছে। ফলে বর্তমান শিক্ষার্থীরা আ্যালমনাইদের কাছ থেকে সবপ্রকার সুবিধা পেয়ে থাকে।

করোনা অতিমারীকালে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রায় ১৮ মাসেরও বেশি সময় বন্ধ ছিল। অথচ এমন ক্রান্তিকালেও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিই দেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় যা সার্বক্ষণিক সচল ছিল। একটি মূহুর্তের জন্যও শিক্ষার্থীদের লেখা পড়া বিঘ্নিত হয়নি শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ব্লেন্ডেড লার্নিং সেন্টার’ ও ‘গো-এডু’র মতো প্ল্যাটফর্ম সক্রিয়ভাবে কার্যকর থাকায় এবং শিক্ষার্থীরা আগে থেকে অভ্যস্থ থাকার কারণে। করোনা মহামারির এই কঠিন সময়ে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘ব্লেনডেড লার্নিং সেন্টারের (বিএলসি)’ সর্বোচ্চ সুবিধা উপভোগ করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।  

বাংলাদেশ ডিজিটাল শিক্ষার প্রথম পর্যায়, ফেস-টু-ফেস অতিক্রম করে ২য় পর্যায় অর্থ্যাৎ ব্লেন্ডেড ডিজিটালে আছে। যার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন ইতিমধ্যে ব্লেন্ডেড লার্নিং পলিসি ২০২১ অনুমোদন দিয়েছে। পরবর্তী ধাপ হলো অনলাইন ডিজিটাল শিক্ষা। আক্ষরিক অর্থে বাংলাদেশ এখনও বৈশ্বিক অনলাইন শিক্ষা ইন্ডাষ্ট্রিতে তার উপস্থিতি জানান দিতে পারেনি। যদিও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অনলাইন ডিগ্রি চালুর ব্যাপারে তাদের সামর্থ্য বিশ্বদরবারে জানান দিয়েছে। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের তৃতীয় স্তরের শিক্ষায় প্রথমবারের মত প্লাটফর্ম ভিত্তিক শিক্ষাদান শুরু করেছে।

বর্তমানে শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষায় যেন কোন ব্যাঘাত না ঘটে সেজন্য ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অনলাইন ডিগ্রি শুরু করতে আগ্রহী এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের কাছে ইতিমধ্যে অনলাইন ডিগ্রি প্রদানের অনুমতি চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি আবেদনও করেছে। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে আমাদের পার্শ্ববর্তী অনেক দেশেই এখন অনলাইন ডিগ্রি প্রদান শুরু করেছে, সম্প্রতি ভারতের ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্টস কমিশন তাদের দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়কে অনলাইন ডিগ্রি প্রদানের অনুমোদন দিয়েছে। উন্নত বিশ্ব এটি শুরু করেছে অন্তত ১০ বছর আগে।

অর্থনৈতিক মাপকাঠিতে অনলাইন শিক্ষার বাজারমূল্য ২০২৬ সালের মধ্যে ৩৭৫ বিলিয়ন ডলার হবে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রযুক্তিগুলো (যেমন-কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক এল এম এস, লার্নিং এনালিটিক্স) সিস্টেমের মধ্যে কার্যকরভাবে যোগ করা গেলে এটি সহজেই  রেমিটেন্স এবং গার্মেন্টসের পরে আমাদের আয়ের তৃতীয় সর্বোচ্চ উৎস হতে পারে। আশা করব, দেশের পরিকল্পনাবিদ ও নীতিনির্ধারকরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সম্পর্কিত গবেষণা ও উদ্ভাবনকে অগ্রাধিকার দিয়ে শিক্ষানীতিতে যুগোপযোগী পরিবর্তন আনবেন যাতে বৈশ্বিক শিক্ষার বাজারে বাংলাদেশ একটি ব্র্যান্ড হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।  

দুই দশক সময় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, উদ্ভাবন, উন্নয়ন ও গবেষণাকে দৃষ্টি আকর্ষণ ও ফলপ্রসূ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জন্য খুব বেশী একটা সময় নয়, তথাপি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ও বাংলাদেশের বাইরে তার অবস্থান জানান দিতে সক্ষম হয়েছে। প্রায় ৪০ হাজার গ্র্যাজুয়েট ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়েছে যারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অবদান রাখছে। এই স্বল্প সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন অনেক, আগামীতে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে এ ড্যাফোডিলের সৌরভ আরো অনেক দূর ছড়িয়ে পড়বে, বিশ্বময় সুগন্ধি ছড়াবে আজ বিশতম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে এই প্রত্যাশা রইল।                                                                                                                                                                                                                                                 

লেখক:

মোঃ আনোয়ার হাবিব কাজল

ঊর্ধ্বতন সহকারি পরিচালক (জনসংযোগ)

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

Sharing is caring!

Leave a Comment