ফেলনা কাগজে শৌখিন সামগ্রী
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার মজুমদারকান্দি গ্রামে প্রায় ৫০টি পরিবারের নারীরা ফেলে দেওয়া পুরনো কাগজ দিয়ে তৈরি করছে মোড়া, জলচৌকি, পিঁড়ি, ধামা, টুপি, ফুলদানি, ব্যাগসহ নানা রকমের আসবাব ও শৌখিন সামগ্রী। প্রথমে শখের বশে এ কাজ করলেও এখন এটি অনেকেরই বাড়তি আয়ের উৎস। কাগজের তৈরি এসব আসবাব দিন দিন রাজৈরে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। যে কারণে কোনো কোনো পরিবারের তিন-চারজনও ব্যস্ত থাকে কাগজের আসবাব ও শৌখিন সামগ্রী তৈরির কাজে। নারীদের পাশাপাশি পুরুষরাও আগ্রহ দেখাচ্ছে এ কাজে।
যেভাবে তৈরি হয়
মজুমদারকান্দি গ্রামের মফিজা, নূরজাহান, কামিনীরা জানান, রাস্তায় ফেলে দেওয়া কাগজ কুড়িয়েই তৈরি করা হয় আসবাবপত্র। একটা মোড়া তৈরিতে তিন থেকে চার কেজি কাগজের দরকার হয়, ছোট বসার চৌকি তৈরি করতে লাগে দুই থেকে তিন কেজি কাগজ। আসবাব তৈরির জন্য প্রথমে কাগজ একটি পাত্রের মধ্যে পানিতে ভেজানো হয়। পরে গুলিয়ে মণ্ড করা হয়। রোদে মণ্ড শুকিয়ে তার সঙ্গে মেশানো হয় ভাতের মাড়। এরপর মণ্ডকে ধীরে ধীরে আসবাবের আকৃতি দিতে হয়। পরে শুকাতে হয় রোদে। একটি মোড়া তৈরি করতে সাত-আট দিন লাগে। ভালো করে শুকাতে পারলে খুব শক্ত আসবাব তৈরি সম্ভব। পানিতে না ভিজলে কাগজের তৈরি এসব আসবাবপত্র অনেক বছর ব্যবহার করা সম্ভব।
কারিগরদের কথা
মজুমদারকান্দি গ্রামের নূরুন্নাহার মনে করেন, ‘অবসরে বাড়তি আয়ের জন্য পুরনো কাগজ দিয়ে যে কেউ তৈরি করতে পারেন আসবাবপত্র। এ ছাড়া নিজের প্রয়োজন বা শৌখিন সামগ্রী তৈরি করা সম্ভব এই পুরনো কাগজ দিয়ে।’
একই গ্রামের গৃহবধূ সীমা বেগম বলেন, ‘আমরা নিজেরাই নিজেদের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র তৈরি করি। এখানকার অনেক পরিবার তাদের তৈরি পণ্য বিক্রি করে আয় করছে।’
জাহানারা বেগম বলেন, ‘প্রথম প্রথম শখ করে এসব আসবাবপত্র তৈরি করেছি। তবে এগুলো সংসারে অনেক কাজে লাগে। নিজেরা তৈরি করছি বলে প্রয়োজনীয় অনেক জিনিস বাজার থেকে কিনতে হচ্ছে না। তাতে আমাদের টাকা বেঁচে যাচ্ছে। তবে এসব বাইরে রপ্তানি করতে পারলে অনেক ভালো হতো।’