মুকুলের হারিকেন হ্যাচারি
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
একসময় এক বেলা-আধা বেলা খেয়ে দিন কাটলেও হারিকেন বাতির সাহায্যে হ্যাচারি করে বর্তমানে এক সফল হ্যাচারি ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন মুকুল। প্রতিমাসে যাবতীয় খরচ বাদ দিয়ে তার উপার্জন আশি হাজার থেকে একলাখ টাকা। মুকুলের সাফল্য দেখে উৎসাহিত হয়ে উপজেলার কাজিপুর, বলভা ও কুশাবাড়ি গ্রামের অন্তত দশজন হারিকেন বাতির সাহায্যে হ্যাচারি ব্যবসায় নেমে পড়েছেন।
তাড়াশের কাজিপুর গ্রামের আবু বক্কারের ছেলে মুকুল তার হ্যাচারি দুই হাজার ডিম দিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে প্রতি আটাশ দিনে পঞ্চাশ থেকে ষাট হাজার ডিম থেকে হাঁসের বাচ্চা ফোটানো হচ্ছে তার হ্যাচারিতে।
মকুল দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উন্নত জাতের হাঁসের পরিপূর্ণ ডিম সংগ্রহ করে চোখের আন্দাজে সেগুলো যাচাই-বাছাই করে মাটির ঘরের মধ্যে তৈরি বাঁশের মাঁচার উপর সারিবদ্ধভাবে বসিয়ে দেয়। এরপর ডিমগুলো লেপ দিয়ে ঢেকে দিয়ে মাচার নীচ থেকে হারিকেন বাতি জ্বালিয়ে পরিমাণমত তাপ দিতে থাকে। এভাবে পঁচিশদিন পার হবার পর ডিমগুলো ফুটতে শুরু করলে লেপের আবরণ তুলে দেয়া হয়। আটাশ দিনের মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়। প্রতিটি একদিন বয়সী বাচ্চা বিশ থেকে ত্রিশ টাকায় বিক্রি হয়। তবে ডিমের বাজার ওঠা-নামায় বাচ্চার দাম কম-বেশি হয়। এলাকা ছাড়িয়ে এসব হাঁসের বাচ্চা এখন বাজারজাত হচ্ছে বিভিন্ন জেলায়। দেশের বেকার যুবকদের শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে এ ধরনের কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন মুকুল ।
দেশের চাহিদার তুলনায় হাঁসের বাচ্চার উতৎপাদন খুবই সীমিত। তাই মুকুলের ক্রেতার অভাব হয় না। ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার আগেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তার কাছে হাঁসের বাচ্চার জন্য বায়না আসতে শুরু করে। সরকারি সহায়তা পেলে হ্যাচারির পরিধি বাড়িয়ে চাহিদানুযায়ী হাঁসের বাচ্চা ফুটানো সম্ভব হত বলে জানান মুকুল।