‘প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে উদ্যোক্তারা’
উদ্যোক্তা ডেস্ক
পাটজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারতের আরোপিত এন্টি-ডাম্পিং শুল্ক প্রত্যাহার করতে কলকাতা সফরে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। তৃতীয় বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে অংশগ্রহণের জন্য তিনি আগামীকাল কলকাতা যাচ্ছেন। সফরকালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীসহ ভারত সরকারের নীতি নির্ধারকদের সাথে তিনি এ বিষয়ে কথা বলবেন।
গতকাল বুধবার শিল্পমন্ত্রীর সাথে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) পরিচালনা পর্ষদ সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে মন্ত্রী এ আশ্বাস দেন। এ সময় শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আবুল কাসেম খান, ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি হোসেন এ সিকদার, পরিচালক ইঞ্জিঃ আকবর হাকিম, ইমরান আহমেদ, খ. আতিক-ই-রাব্বানী, রাশেদুল আহসান, মামুন আকবর এবং মো. আলাউদ্দিন মালিকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, বিশ্বের ১৫০ কোটি মুসলমানের জন্য হালাল খাদ্যের বিশাল বাজার রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি খাদ্যপণ্য রপ্তানির জন্য বিএসটিআই এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আওতায় হালাল সার্টিফিকেশনের ব্যবস্থা করা হবে। শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিসিক শিল্প নগরী এবং নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য আলাদাভাবে প্লট বরাদ্দ দেয়ার পাশাপাশি সিঙ্গেল ডিজিটে সুদে অর্থায়নের ব্যবস্থা করা হবে। পাটের পাল্প থেকে কাগজ তৈরির লক্ষ্যে কাঁচামাল প্রাপ্তির বিষয়টি অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, সম্প্রতি ভারত সরকারের অর্থমন্ত্রণালয় কর্তৃক বাংলাদেশি পাট ও পাটজাত পণ্যের উপর ক্ষেত্রভেদে ৬ দশমিক ৩০ ডলার হতে ৩৫১ দশমিক ৭২ মার্কিন ডলার এন্টি ডাম্পিং শুল্প আরোপ করেছে। এতে দেশি পাট পণ্য রপ্তানি বাধাগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ সমস্যা সমাধানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের উপর জোরারোপ করেন তিনি। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি জানান, ডিসিসিআই’র পক্ষ হতে নীতি-নির্ধারক, ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এবং বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি গবেষণা ও উন্নয়ন প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হবে। বর্তমান ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, ট্রেড লাইসেন্স-এর ফি বৃদ্ধি, ঋণ সুদের উচ্চ হার, ঘন ঘন বিদ্যুত্ ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি এবং পণ্য পরিবহনের ব্যয় বাড়ার কারণে পণ্য উত্পাদনের খরচ বাড়ছে। এতে দেশের শিল্প উদ্যোক্তারা পণ্য প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না। এ প্রেক্ষিতে ব্যবসা পরিচালনায় ব্যয় কমানোর জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারী উদ্যোক্তাদের বিকাশের লক্ষ্যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে (এসইজেড) প্লট বরাদ্দ রাখা এবং এসইজেডের শিল্প-কারখানায় স্থানীয় কাঁচামাল এবং ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ ইন্ডাস্ট্রি স্থাপনের জন্য একটি নীতিমালা প্রণয়নের প্রস্তাব করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি। তিনি দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য শিল্পখাতে কয়লার ব্যবহার বৃদ্ধি এবং জাতীয় কয়লা নীতিমালা দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
ডিসিসিআই সহ-সভাপতি হোসেন এ সিকদার বলেন, কেরানীগঞ্জের বিসিক শিল্প অঞ্চলে অসংখ্য শিল্প-প্রতিষ্ঠান গ্যাস সংযোগের অভাবে পণ্য উৎপাদন করতে পারছে না। তিনি এ সমস্যা সমাধানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উক্ত শিল্প এলাকায় গ্যাস সংযোগ প্রদানের আহ্বান জানান। ঢাকা চেম্বারের সহ-সভাপতি ২০২১ সাল পর্যন্ত প্যাকেজ ভ্যাট বহাল রাখার প্রস্তাব করেন এবং ব্যবসায়ীরা যেন ভ্যাটের কারণে হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকে সরকারের বিশেষ নজর দেওয়ার আহ্বান জানান।