সাইকোলজিক্যাল বানিজ্য কৌশল
- মো. সাইফ
বেশ অনেক দিন আগে মফঃস্বলে একটি নতুন দোকান দেখেছিলাম। রকমারি জিনিস দিয়ে সাজানো সেই দোকানের নাম “ওয়ান টু নাইন্টি-নাইন শপ”! এই দোকানে সব পন্যের দাম নাকি ১ থেকে ৯৯ টাকার মধ্যে। শহরে এই ধরনের দোকান এক সময় খুবই জনপ্রিয়তা পায়। প্রতিটি পাড়া মহল্লায় এমনকি অভিজাত এলাকায় ও চোখে পড়ে এ ধরনের দোকান।
আজকাল অনেক ধরনের পন্য কিংবা সেবাখাতেও বাজার মূল্যে বৈচিত্র আনা হয়েছে। মুঠোফোন,গিফট আইটেম কিংবা অন্য যেকোনো ধরনের পন্যে ৫০০০ কিংবা ১০০০০ না লিখে লিখা হয় ৪৯৯৯ অথবা ৯৯৯০ ! এটিকে বর্তমানে গুরুত্বপূর্ন এক বানিজ্য কৌশল হিসেবে ধরা হয়। দামের সামান্য এই হেরফের গ্রাহক এর মন-কে প্রভাবিত করে। একটি গবেষনায় দেখানো হয়, প্রতিষ্ঠান এই কৌশলকে ব্যবহার করে বিক্রির পরিমান পূর্বের তুলনায় ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি করতে পারেন।
কেনো পন্যে এই ৯ সংখ্যাটির ব্যবহার? এটিকে অর্থনীতিবিদরা বলছেন,”সাইকোলজিক্যাল প্রাইসিং”। অর্থাৎ, একই সময়ে দুটি পন্যের দাম যদি ১০০ এবং ৯৯ হয় সাইকোলজিক্যাল প্রাইসিং এর কারনে ক্রেতা অবশ্যই যে পন্যের দাম ৯৯ টাকা হবে সেটির দিকেই আগ্রহী হবেন।
কোনো পন্যের দাম “রাউন্ড ফিগার” অর্থাৎ ৫০০ কিংবা ১০০০ হলে ক্রেতাদের ধারনা হয় পন্যটির দাম অযৌক্তিক ভাবে বেশি রাখা হচ্ছে। ৯৯ কিংবা ৯০ হলে ক্রেতারা সাধারনত মনে করেন পন্যটি ন্যায্য মূল্যে বিক্রয় হচ্ছে।
দামদরে ৯৯ থাকলেও অধিকাংশ সময়ে খুচরা না থাকার কথা বলে ক্রেতাকে এক টাকা ফিরিয়ে দেন না দোকানিরা। ৯৯ টাকা দিয়ে আকর্ষন সৃষ্টির পাশাপাশি বাড়তি এক টাকা করেও রেখে দিচ্ছেন তারা।
সবদিক মিলিয়ে গ্রাহকের মনোভাবকে প্রভাবিত করে এই ধরনের বানিজ্য নীতি অনুসরন করছেন ব্যবসায়ীরা। অধিকাংশ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান এই ধারনাকে কেন্দ্র করেই এখন দাম নির্ধারন এর ক্ষেত্রে কৌশলী ভূমিকা অবলম্বন করছে।