ছোট ব্যবসায়ীদের কেন অনলাইনে আসা উচিত?
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
বাংলাদেশ একটি অসংগঠিত বাজার ও ছোট ব্যবসায়ী ও বিক্রেতাদের দেশ। ই-কমার্স শুরু হলেও ছোট ব্যবসায়ীরাই এখনও বাংলাদেশের সিংহভাগ দখলে রেকেছে। এবং এই পরিস্থিতি সহজে বদলানোর না। বাংলাদেশের মাত্র ১ শতাংশ মানুষ অনলাইন জিনিসপত্র কেনেন। তবে আশার কথা হচ্ছে, সংখ্যাটা বাড়ছে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই দুটো ধারা আরও বেশি করে মিলবে একে অপরের সঙ্গে। বিষয়টা অনলাইন বনাম অফলাইন বা বৃহৎ ইকমার্স বনাম ছোট ব্যবসায়ী নয়।
ব্যবসা ক্ষেত্রটিকে সংগঠিত করার জন্য আসছে প্রযুক্তি ও সেটা দুপক্ষের জন্যই লাভজনক। বাংলাদেশের সবথেকে বড় ৫ টি ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের অন্যতম মূল লক্ষ্য ছোট ও মাঝারি ব্যবসায় ঢোকা, সেই জন্য সকলকে ইন্টারনেট পরিষেবার আওতায় আনার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে তারা।
এই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে ভারতেও। সম্প্রতি ভারতের সবচেয়ে বড় অনলাইন বাজার ফ্লিপকার্ট ‘আপনে স্বপনে জী কে দেখো’ নামে একটি ক্যাম্পেইন শুরু করেছে। উদ্যোগপতি, উৎপাদনকারী ও ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ীদের অনলাইন ব্যবসার সুযোগ সুবিধা সম্পর্কে অবহিত করাই এই ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য।
ভারতে মোবাইল কেন্দ্রিক ব্যবসা করে পেটিএম নামের একটি প্রতিষ্ঠান, যারা সহজে ঋণ নেওয়ার সুবিধা তৈরি করার জন্য ক্যাপিটাল ফ্লোটের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। তাদের তালিকায় থাকা ৫০ হাজার বিক্রেতাদের সহজে ও সুলভে মূলধন সংগ্রহ করতে সাহায্য করবে তারা। এর ফলে পেটিএমের এই বছরের মধ্যে ১ লক্ষ ব্যবসায়ীকে নিজেরে মঞ্চে আনার লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ হবে ও ব্যবসা বাড়বে।
ই-কমার্স কোম্পানিগুলির লক্ষ্য আরও বেশি সংখ্যক ব্যবসায়ীকে নিজেদের মঞ্চে নিয়ে আসা, কিন্তু ছোট ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য বিক্রি বাড়ানো। অনলাইন এর জন্য অত্যন্ত উপযোগী একটি পথ। এই ধরণের মঞ্চে নাম নথিভুক্ত করার পাশাপাশিই ডট-কম ডোমেন রেজিস্ট্রেশন করে নিজেদের ওয়েবসাইট লঞ্চ করাটাও জরুরি।
বাংলাদেশের মোট জিডিপির ৬০ শতাংশ আসে ছোট ও মাঝারি ব্যবসা থেকে, কিন্তু বাংলাদেশের মোট তথ্য-প্রযুক্তির ব্যয়ের মাত্র ৩০ শতাংশ খরচ করে তারা। এই সংখ্যা থেকেই বোঝা যায় ছোট ব্যবসায়ীদের ডিজিটাল শিক্ষা কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে!
ইন্টারনেটের ব্যবহার বহুলাংশে বাড়লেও ছোট ও মাঝারি ব্যবসায় ইন্টারনেটের ব্যবহারের বৃদ্ধির হার বেশ খানিকটা ধীর। ছোট ব্যবসায়ীদের বাজারে প্রাসঙ্গিক থাকতে হলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের বদলাতে হবে।
কেন বদলাতে হবে? তার জন্যও উদাহরণ হতে পারে ভারত। ভারতের মাইস্মার্টপ্রাইস অনলাইন ও অফলাইনের মধ্যে সেতুবন্ধনে সক্ষম হয়েছে ও অ্যাক্সেল পার্টনারসের নেতৃত্বে ও হেলিয়ন ভেঞ্চার পার্টনারসের অংশগ্রহণে ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সিরিজ বি রাউন্ড বিনিয়োগ সংগ্রহ করেছে। এই বিনিয়োগের মাধ্যমে তারা স্থানীয় কেনাকাটার পরিষেবাকে ভারতে ৫০টি শহরে ছড়িয়ে দিতে পারবে ও ১ লাখ স্থানীয় খুচরো ব্যবসায়ীকে অনলাইনে ব্যবসা করার সুযোগ করে দিতে পারবে।
এ ব্যাপারে ভারতীয় গণমাধ্যমে মাইস্মার্টপ্রাইসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও সুলক্ষণ কুমার বলেছেন, “আমরা একটি এমন মঞ্চ তৈরি করছি, যেখান থেকে গ্রাহক, যে কোনো দোকান, অনলাইন বা অফলাইন থেকে জিনিস খুঁজে, বেছে কিনতে পারবেন। লক্ষ লক্ষ ছোট খুচরো ব্যবসায়ী ও উদ্যোগপতিরা যাতে প্রযুক্তির সুযোগ নিয়ে তাদের ব্যবসার উন্নতি ঘটাতে পারে সেটাও আমাদের লক্ষ্য”।
এই অগ্রগতিগুলিই পরিস্কার করে দেয় কীভাবে আরও বেশি সংখ্যক ব্যবসায়ীকে অনলাইন নিয়ে আসার চেষ্টা হচ্ছে। এমন কী গুগলও আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে ২০ মিলিয়ন ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীকে অনলাইন নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। জেপোর নীতিন বললেন, “ব্যবসা বাড়ানো যদি পরিকল্পনায় থাকে, অনলাইন আসা ছাড়া উপায় নেই।
আপনি যদি উৎপাদনকারী, ডিলার, বিক্রেতা ইত্যাদি হন এবং অনলাইনে যাওয়া উচিত কী না সে বিষয় ভাবনা চিন্তা করছেন, তাহলে এটাই সঠিক সময়। সঠিক ডোমেনটি বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ফোর্বসের একটি প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে সার্চমেট্রিকসের একটি গবেষণা অনুযায়ী ওয়েবের মাত্র ১১ শতাংশ আসলে দৃশ্যমান। তারা ১ লাখ ডোমেন নাম বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, ৭৫ শতাংশ ডট-কমে ফিরে যায়, কিওয়ার্ড সার্চে এটিই সব থেকে বেশি দৃশ্যমান টিএলডি।
বাজারে প্রচুর সুযোগ রয়েছে, আপনাকে শুধু ডট-কম ডোমেন বুক করে একটি নিজের ওয়েবসাইট বানিয়ে ফেলতে হবে, তারপরই শুরু করে দিন অনলাইন ব্যবসা।
অতএব আপনি যদি একজন ছোট ব্যবসায়ী হয়ে থাকে তবে এখনই নিচের পদক্ষেপগুলি নিন:
- ভাবনাচিন্তা করে একটি নাম ঠিক করুন!
- উচ্চস্তরের সঠিক ডোমেন বেছে নিন
- রেজিস্ট্রার ঠিক করুন