স্টার্টআপের দশ পরামর্শ
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
গুগল, ফেসবুকসহ অনেক নামী প্রতিষ্ঠানেরই শুরু হয়েছিল বন্ধুত্বের হাত ধরে। এসব গল্পে অনুপ্রাণিত হয়ে আপনিও হয়তো ভাবছেন, বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শুরু করবেন। কিন্তু সব উদ্যোগই যে সফল হয় তা তো নয়। আবার পাছে ব্যবসায় নেমে না-জানি বন্ধুত্বটা নষ্ট হয়! কী করণীয়? এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সাবেক সভাপতি ও ফেনক্স ভেঞ্চার ক্যাপিটালের জেনারেল পার্টনার শামীম আহসান
১. দুজন দুই রকম: দুই বন্ধু মিলে যদি স্টার্টআপ করেন, একজনকে ‘লেফট ব্রেইন’ ও অন্যজনকে ‘রাইট ব্রেইন’ হিসেবে কাজ করতে হবে। বুঝিয়ে বলি। মানুষের মস্তিষ্কের বাম পাশটা যুক্তি, বিশ্লেষণ, চিন্তা, গাণিতিক হিসাব বোঝার সামর্থ্য রাখে। অন্যদিকে সৃজনশীলতা, শিল্প, অনুমান, অনুভূতি—এসব গুণ থাকে মস্তিষ্কের ডান পাশে। দুটোর সমন্বয়ে মানুষ সিদ্ধান্ত নেয়, পথ চলে। দুই বন্ধুকেও এই রীতি অনুসরণ করতে হবে।
২. শুরু হোক ছোট কিছু দিয়ে: বড় প্রকল্প হাতে নেওয়ার আগে ছোট কোনো প্রকল্পে একসঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকা ভালো, যার মাধ্যমে বুঝতে পারবেন আপনাদের মধ্যে বোঝাপড়া কেমন। একসঙ্গে কোনো উদ্যোগ গড়ে তোলা ঠিক হবে কি না, সেটা যাচাই করে নিতে পারবেন।
৩. পরিকল্পনা ও মূল্যবোধ: উদ্যোগের সুনির্দিষ্ট ব্যবসায়িক পরিকল্পনা এবং ব্যবসার প্রতি মূল্যবোধ থাকতে হবে। বন্ধুদের কোনো একজন যদি মূল্যবোধের জায়গা থেকে পিছিয়ে থাকেন, তাহলে পরে সমস্যা তৈরি হতে পারে।
৪. প্রস্তুত থাকা: খরচ ও আয়ের যে পরিকল্পনা করবেন, ভবিষ্যতে হয়তো দেখা যেতে পারে তিন-চার গুণ বেশি খরচ হয়ে গেছে। অন্যদিকে আয় হয়েছে প্রত্যাশার পাঁচ ভাগের এক ভাগ। এমন মুহূর্তের জন্য প্রস্তুত থাকুন।
৫. কাজ ভাগ করে নিন: বন্ধুদের মধ্যে কার কাজ কী, কাকে কী করতে হবে, প্রতিষ্ঠানে কে কতটুকু সময় ব্যয় করবেন—এসব বিষয় আগে থেকে ঠিক করে নিন।
৬. পরামর্শক বা উপদেষ্টা: বন্ধুরা যখন একসঙ্গে কোনো প্রতিষ্ঠান শুরু করবেন, একজন পরামর্শক বা উপদেষ্টা থাকা দরকার। তিনি হতে পারেন দুজনেরই কোনো শিক্ষক কিংবা পরিচিত বড় ভাই, কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে যাঁর কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া যাবে।
৭. পরিষ্কার চুক্তি: আইনজীবীর সাহায্যে নিজেদের মধ্যে চুক্তির বিষয়টা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। বন্ধুদের একে অপরের প্রতি বিশ্বাস তো আছেই। তবু শুধু মৌখিক চুক্তির ওপর ভরসা করা ঠিক হবে না। সবার সম্মতিতেই একটা লিখিত চুক্তিতে আসতে হবে।
৮.প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা: কারও যদি বেরিয়ে আসতে হয়, সেটা যেন স্বাভাবিকভাবে হয়, তার জন্য প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা ঠিক করে রাখতে হবে। অর্থাৎ কে কতটুকু ছাড় দেবেন অথবা প্রতিষ্ঠানে কে থাকবেন এই সম্পর্কিত বিষয়গুলো জানা থাকতে হবে।
৯. বন্ধুত্বের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি: বন্ধুত্বকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, ব্যবসার জন্য বন্ধুত্ব যেন নষ্ট না হয়। কে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা চেয়ারম্যান হবেন—এসব নিয়ে বিরোধ যেন না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
১০. বাইরের কেউ যুক্ত হতে পারে: প্রতিষ্ঠানে বন্ধুর বাইরেও যদি কাউকে যুক্ত করা দরকার হয় তাহলে তাঁকে যুক্ত করতে পারেন। হতে পারে সেটা প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দিয়ে কিংবা অন্য কোনোভাবে।