নতুন আয়েরক্ষেত্র জিমনেশিয়াম
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
রাজধানীসহ শহরাঞ্চলে অনেকের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা লক্ষ্যণীয়। এই বাস্তবতাকে অবলম্বন করে শুরু হয়েছে শরীরচর্চা বা জিমনেশিয়াম স্থাপন। অন্য পেশার পাশাপাশি এর মাধ্যমেও আয় হচ্ছে কিছু বাড়তি রোজগার।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন আয়ের উৎস বা ক্ষেত্র হতে পারে জিমনেশিয়াম। গতানুগতিক চাকরি বা ব্যবসার আশায় বসে না থেকে ভিন্নধর্মী এ পেশায় খুব সহজেই পরিবর্তন করা যায় নিজের ভাগ্য। অনেকেই টাকা থাকা সত্ত্বেও তা বিনিয়োগের সঠিক জায়গা খুঁজে পান না। তাদের জন্য চমৎকার একটি ক্ষেত্র হতে পারে এই শরীরচর্চা কেন্দ্র বা জিমনেশিয়াম। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এ ব্যবসা বা উদ্যোগ অনেকটাই নতুন। মানুষের মধ্যে আগের তুলনায় এখন স্বাস্থ্য-সচেতনতা বাড়ছে। বিশেষ করে তরুণরা স্বাস্থ্যের ব্যাপারে বেশ সচেতন। কিন্তু তাদের চাহিদা অনুযায়ী নেই শরীরচর্চা বা ব্যায়ামের জায়গা। আর এই সুযোগকে আপনি কাজে লাগাতে পারেন। প্রাথমিক শুরু : শরীরচর্চা কেন্দ্র ঘিরেই জমে উঠতে পারে আপনার ব্যবসা। এ জন্য আপনাকে মোটা অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। তবে প্রাথমিকভাবে বড় পরিসরে শুরু করতে না চাইলে স্বল্প পরিসরেও শুরু করতে পারেন। নিজে জিম স্থাপনের আগে প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি জিম ঘুরে দেখতে পারেন। প্রয়োজনে জিমের মালিক ও প্রশিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
এতে একটি ভালো ধারণা আসবে। জিমনেশিয়ামে সদস্যরা সাধারণত আসে স্বাস্থ্য ঠিক রাখা
, মডেল ফিগার তৈরি করা, বডি বিল্ডআপ করা ও মেদ বা ওজন কমানোর জন্য। মূলত এ চার ধরনের সদস্যকে লক্ষ্য রেখেই এগুতে হবে। স্থান নির্বাচন : জিমনেশিয়ামের জন্য স্থান নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাই স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভুল করলে চলবে না। স্থান বা জায়গা নির্বাচনই আসল কথা। খোলামেলা ও পর্যাপ্ত আলো-বাতাস পাওয়া যাবে এমন স্থান বেছে নিতে হবে। গ্রাহকদের যাতায়াতে সুবিধা হবে এ রকম জায়গা হলে ভালো। জিমের বেশিরভাগ গ্রাহকই তরুণ। তাই তরুণরা বেশি যাতায়াত করে এমন একটি স্থানে জিমনেশিয়াম স্থাপন করতে পারেন। প্রচারেই প্রসার : জিম স্থাপনের আগে এলাকার তরুণদের সঙ্গে কথা বলে নিতে পারেন বা তাদের মতামত, আগ্রহ এসব বিষয় যাচাই করে দেখতে পারেন। জিমনেশিয়াম স্থাপনের পর তার একটি সুন্দর নাম ঠিক করুন। তারপর একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে নিন।এলাকায় পোস্টারিং, লিফলেট, ব্যানার প্রভৃতির মাধ্যমেও প্রতিষ্ঠানের প্রচার করতে পারেন। এলাকায় বেশি চলে এ রকম কোনো দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও দিতে পারেন। আর তা সম্ভব না হলে দৈনিক পত্রিকাগুলোর ভেতর প্রচারপত্র ঢুকিয়ে তা বিলি করতে পারেন হকারের মাধ্যমে। পত্রিকার হকারদের কিছু টাকা ধরিয়ে দিলেই তারা এ ব্যবস্থা করে দেবে। উপকরণ ও অবকাঠামো : একটি জিমনেশিয়ামের জন্য ট্রেডমিল, সাইক্লিং, পুশআপ বার, ডাম্বেলসহ অনেক কিছুরই প্রয়োজন হয়। ট্রেডমিলের দাম ৫০ হাজার থেকে ছয় লাখ টাকা। পুশআপ বার ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, সাইক্লিং সাড়ে পাঁচ থেকে ১০ হাজার,ক্রস ট্রেইনার পাঁচ থেকে আট হাজার, স্টেপার ছয় থেকে ১০ হাজার এবং স্মিথ স্কট ও ক্রসবার পাওয়া যাবে এক লাখ ২০ হাজার থেকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকায়। বারবেল ও ডাম্বেল কিনতে হয় কেজি হিসেবে। লেট পুল ডাইন ৬০ থেকে ৭০ হাজার, লেগ প্রেস মেশিন ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা এবং অলিম্পিক বার বেঞ্চ প্রেস, অলিম্পিক বেঞ্চ ইনক্লায়েন্ট, ডিকলায়েন্ট প্রভৃতি পাওয়া যাবে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকায়। শরীর গরম করার স্যনা মেশিনের দাম পড়বে ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা।
টি-বারের দাম পড়বে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা
, শোল্ডার প্রেস মেশিন ৬০ থেকে ৭০ হাজার ও স্টিম বাথ পাওয়া যাবে এক লাখ ৩০ হাজার থেকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকায়। যেখানে পাবেন : এ সেক্টরের বেশিরভাগ যন্ত্রপাতি আসে চীন ও তাইওয়ান থেকে। তবে আমাদের দেশেও কিছু সরঞ্জাম তৈরি হয়। স্টেডিয়াম মার্কেট ছাড়াও ঢাকার গুলশান, বনানীর অভিজাত দোকানগুলোয় এসব ব্যায়ামের সরঞ্জাম কিনতে পাওয়া যায়। আর এসব যন্ত্রপাতি কেনার সময় দক্ষ বা অভিজ্ঞ কোনো ট্রেইনারকে সঙ্গে রাখতে হবে। যা যা লাগবে : একটি জিমনেশিয়াম ভালোভাবে পরিচালনার জন্য অবশ্যই দু‘জন প্রশিক্ষকের প্রয়োজন হবে। এদের মধ্যে একজন প্রধান প্রশিক্ষক, তিনি সদস্যদের রুটিন করে দেবেন। আর একজন প্রশিক্ষক যিনি থাকবেন তিনি রুটিন অনুসারে সদস্যদের শরীরচর্চা দেখিয়ে দেবেন। এ ছাড়া সবকিছু ঠিকঠাক করার জন্য আরও দুই-তিনজন কর্মীর প্রয়োজন। জিমনেশিয়ামে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের ব্যবস্থা রাখতে হবে। তা সম্ভব না হলে পর্যাপ্ত ফ্যানের ব্যবস্থা করতে হবে। জিমের অনেক যন্ত্রপাতি বিদ্যুৎচালিত, তাই লোডশেডিং থেকে রক্ষা পেতে রাখতে হবে জেনারেটর