বড় ব্যবসায়ীদের দিয়ে শুরু অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন কার্যক্রম
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
নতুন মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ব্যবসায়ীদের অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন কার্যক্রমের প্রস্তুতি নিয়েছে রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা এড়াতে শুরুতে কেবল বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করতে চায় ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। অর্থাত্ শুরুতে বৃহত্ করদাতা ইউনিটে (এলটিইউ-ভ্যাট) ভ্যাট প্রদান করেন এমন ব্যবসায়ীদের নিবন্ধন কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে। এর পর ধীরে ধীরে অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন শুরু করা হবে।
এনবিআরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আগামী বছরের জুলাই থেকে যে কোনো উপায়ে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন শুরু করতে হবে। এ জন্য প্রধান কাজ হলো ব্যবসায়ীদের যাবতীয় তথ্যসহ অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন নম্বর সংগ্রহ করা। গত জুলাই থেকে নতুন আইনটি বাস্তবায়নের কথা থাকলেও ব্যবসায়ীদের বিরোধিতার পাশাপাশি অনলাইনে নিবন্ধন কাজের প্রস্তুতিতেও ঘাটতি ছিল। এ জন্য শেষ সময়ে আইনটি কার্যকরে সরকার পিছিয়ে আসে।
ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইত্তেফাককে বলেন, নিবন্ধনের জন্য আমরা প্রায় প্রস্তুত। আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি কিংবা শেষদিকে এ কার্যক্রম শুরু করতে চাই। তবে শুরুতে দেশব্যাপী এটি চালু করতে গেলে সার্ভারে চাপ সৃষ্টি হওয়ার কারণে নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় বিড়ম্বনার আশঙ্কা রয়েছে। এর আগে আয়করের ক্ষেত্রেও এ ধরনের বাজে উদাহরণ রয়েছে। এ জন্য আমরা শুরুতে স্বল্প পরিসরে অর্থাত্ বৃহত্ করদাতাদের জন্য তৈরি করতে চাই। এ জন্য এলটিইউভুক্ত ভ্যাটদাতাদের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হবে।
এদিকে নতুন ভ্যাট আইন নিয়ে ব্যবসায়ীদের সচেতন করতে দেশব্যাপী প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালানো হবে। এনবিআর ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন যৌথভাবে এ কাজটি করবে বলে জানা গেছে। এ লক্ষ্যে দেশের ৫৪টি স্থানে ব্যবসায়ীদের একদিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
গত কয়েক মাস আগে নিবন্ধনের লক্ষ্যে তথ্য দেওয়ার আহ্বান জানানো হলেও তাতে খুব একটা সাড়া মেলেনি। আবার যারা তথ্য দিয়েছেন, তারাও পুরো তথ্য দেননি। বর্তমানে প্রায় সাড়ে আট লাখ নিবন্ধিত ব্যবসায়ী (ব্যবসায় শনাক্তকরণ নম্বর বা টিন নম্বরধারী) রয়েছেন। তাদের মধ্যে মাত্র ১২ হাজার ব্যবসায়ী তথ্য দিলেও পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিয়েছেন ২ হাজার! কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাড়ে আট লাখ নিবন্ধিত ব্যবসায়ী হলেও তাদের মধ্যে নিয়মিত ভ্যাট রিটার্ন জমা দেয় ৩০ হাজার। এ ৩০ হাজারকে এনবিআর সম্ভাব্য নিবন্ধনকারী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বেশকিছু ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হয়। এর ফলে অনেক ব্যবসায়ী বিভ্রান্তির মধ্যেও রয়েছেন বলে জানা গেছে। এ কারণে ভ্যাট নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় সতর্কতার সঙ্গে এগুতে চায় এনবিআর।