মোহাম্মদপুরে শতাধিক ডেইরি ফার্ম
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
রাজধানীতে দুধের জোগান দিতে মোহাম্মদপুরে গড়ে উঠেছে ছোট–বড় শতাধিক ডেইরি ফার্ম। ঢাকায় বিভিন্ন মিষ্টির দোকান ছাড়াও এই ফার্মগুলো অনেকের ব্যক্তিগত চাহিদা মেটাচ্ছে।
মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধের পশ্চিম পাশে মূল সড়ক লাগোয়া জাকের ডেইরি ফার্ম। মূল সড়ক থেকে একটু ঢালে নামতেই বড়সড় দুটো মুরগি এগিয়ে এল, সঙ্গে রাজহাঁসের দল। এক পাশে কিছু ছাগল ও গরু বাঁধা। কবুতর উড়ে বেড়াচ্ছে। ছাদের ওপরে অনেক গাছ। বাড়িটিতে ঢুকতেই খামারবাড়ির আবহ টের পাওয়া যায়। ভুসির ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন ২৬ বছর আগে জাকের ডেইরি ফার্ম চালু করেন। ভুসি ব্যবসার পাশাপাশি নিজেরও গরু ছিল। এ ছাড়া কাজ করেছেন বিদেশের বিভিন্ন ডেইরি ফার্মে। জাকের ডেইরি ফার্মে এখন আছে ৫০০ গরু ও ৩০০ মহিষ।
এ থেকে প্রতিদিন দুধ উৎপাদিত হয় ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ লিটার।
গতকাল রোববার আনোয়ার হোসেন জানান, এ দুধ তিনি কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বা পাইকারের কাছে বিক্রি করেন না। লোকে যেন খাঁটি দুধ পায়, সে জন্য সরাসরি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। প্রতি লিটার ১০০ টাকা। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়।
জাকের ডেইরি ফার্মে দই, মিষ্টি, দুগ্ধজাত বিভিন্ন সামগ্রী এবং মুরগির ডিমও পাওয়া যায়। গতকাল এক গাড়িচালক কাইয়ুম এসেছেন শ্যামলী থেকে। টক দই আর মাঠা কিনতে। তিনি বলেন, ‘আমার ম্যাম পাঁচ বছর ধরে আমাকে এখানে পাঠান। এদের জিনিস ভালো।’
জাকের ডেইরি ফার্মে ১০০ জন লোক কাজ করেন। প্রত্যেকের কাজ ভাগ করা। এ খানে গবাদিপশু ছাড়াও টার্কিশ মুরগিসহ আছে নানা জাতের মোরগ-মুরগি। প্রতিদিন উৎপাদিত ডিমের সংখ্যা প্রায় ১০০। বিক্রি হয় ৪০ টাকা হালি। আনোয়ার হোসেন বলেন, মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় ছোট-বড় শতাধিক ফার্ম আছে। এর বেশির ভাগই নতুন গড়ে উঠেছে।
বেড়িবাঁধের ভাঙা মসজিদের পশ্চিম দিকে পাওয়া গেল আরেকটি ফার্ম—‘দ্যা হাম্বা ফ্যাক্টরি’। একতলা একটি আধখোলা ভবন। গরুকে খাওয়ানো ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। তিন বছর আগে শুরু হওয়া এ ফার্মে গরু-মহিষ প্রায় ৮০টি। এর এক কর্মচারী আতিক হাসান বলেন, ‘পাঁচ বন্ধু মিলে শুরু করেছেন এটি। আমরা কর্মচারীরা দেখাশোনা করি।’ প্রতিদিন দুধ উৎপাদিত হয় প্রায় ৩০০ লিটার। খুচরা বিক্রিসহ বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভান্ডারেও এ ফার্ম দুধের জোগান দেয়।