নয় প্রকল্পে ভারতের সম্মতি
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
ভারতীয় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার ক্রেডিট লাইনের আওতায় প্রস্তাবিত ১১ প্রকল্পের মধ্যে ৫ প্রকল্পে সম্মতি মিলেছে। এর আগে আরও ৪টি প্রকল্প অনুমোদন হয়। সব মিলিয়ে অনুমোদিত প্রকল্পের সংখ্যা দাঁড়াল ৯টিতে। বাকি দুটি প্রকল্পের সম্মতির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে। সম্প্রতি এসব প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। নয়টি প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১৫৯ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার। এরমধ্যে ভারতীয় এলওসি থেকে ১২২ কোটি ১৫ লাখ ৪০ হাজার এবং সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৭ কোটি ৪৪ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার ব্যয় করা হবে।
এ প্রসঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করেননি। তবে, সবগুলো প্রকল্পে সম্মতি পেলে তারপর জানানো হবে বলে জানিয়েছেন।
অন্যদিকে ভারতীয় নতুন ও পুরনো উভয় ঋণের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে বৈঠকে বসছেন দু’দেশের কর্মকর্তারা। নিয়ম অনুযায়ী দশম এলওসি পর্যালোচনাসংক্রান্ত এ বৈঠকটি নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দুটি সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে ভারতের কাছে। নির্ধারিত সময় হল- ২৮ থেকে ৩০ নভেম্বর অথবা ১৪ থেকে ১৬ ডিসেম্বর। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এখনও চূড়ান্ত সময় জানায়নি বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত বছর ঢাকা সফরকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নতুন করে ২০০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার ঘোষণা দেন। এর আগে ২০১০ সালে প্রথম দফায় ১০০ কোটি ডলার ঋণ দেয় ভারত। তৎকালীন ভারতীয় অর্থমন্ত্রী বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি ওই ঋণের ২০ কোটি ডলার পরে অনুদান হিসেবে ঘোষণা করেন। এর আওতায় ১৪টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এরমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে ৭টি প্রকল্প।
নতুন সম্মতি পাওয়া ৫ প্রকল্প : ১ নভেম্বর ভারতীয় এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (এক্সিম ব্যাংক) থেকে ইআরডিতে পাঠানো এক চিঠিতে ৫ প্রকল্প অনুমোদনের কথা জানানো হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- কনস্ট্রাকশন অব ডাবল লাইন ট্র্যাক ইন খুলনা-দর্শনা জংশন সেকশন অব বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৩৯ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার। এরমধ্যে ভারত অনুমোদন দিয়েছে ৩১ কোটি ২৪ লাখ মার্কিন ডলার। কনভারসন অব মিটার গেজ লাইন টু ডুয়েল গেজ লাইন ইন পার্বতীপুর-কাউনিয়া সেকশন অব বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১৪ কোটি ২৭ লাখ ৩০ হাজার ডলার। এরমধ্যে ভারতীয় ঋণ থেকে ব্যয় করা হবে ১২ কোটি ৪ লাখ মার্কিন ডলার। বড়পুকুরিয়া-বগুড়া-কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি লাইন প্রজেক্টটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৩৬ কোটি ৬৩ লাখ ১০ হাজার ডলার, এরমধ্যে ভারতীয় ঋণ ২১ কোটি ৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার। এস্টাবলিস্টমেন্ট অব ইন্ডিয়ান ইকোনমিক জোন ইন মংলা, বাগেরহাট অ্যান্ড ভেড়ামারা প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৮ কোটি ৮২ লাখ ডলার। এর মধ্যে ভারতীয় ঋণ ৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার ব্যয় হবে এবং প্রকিউরমেন্ট অব ইকুইপমেন্ট অ্যান্ড মেশিনারিজ অব কনস্ট্রাকশন, রিপিয়ার অ্যান্ড মেইনটেনেন্স অব রোড ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৭ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার ডলার। এর মধ্যে ভারতীয় ঋণ থেকে ব্যয় করা হবে ৫ কোটি ৯৮ লাখ ৪০ হাজার ডলার।
প্রথম ধাপে অনুমোদন পাওয়া ৪ প্রকল্প : ইতিমধ্যেই যেসব প্রকল্পে অনুমোদন পাওয়া গেছে সেগুলো হচ্ছে- প্রকিউরমেন্ট অব ট্রাকস ফর বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (বিআরটিসি) প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ২ কোটি ৭৯ লাখ ৪০ হাজার ডলার। এরমধ্যে ভারতীয় ঋণ বাস্তবায়নে ২ কোটি ৩ লাখ ৬০ হাজার ডলার। বাকি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। প্রকিউরমেন্ট অব ডাবল ডেকার অ্যান্ড সিঙ্গেল ডেকার এসি অ্যান্ড নন-এসি বাসেস ফর বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশন (বিআরটিসি) প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৭ কোটি ৪৬ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ভারতীয় ঋণ ৫ কোটি ৫৮ লাখ ৩০ হাজার ডলার। কনস্ট্রাকশন অব নিউ ক্যারেজ ওয়ার্কশপ ইন সৈয়দপুর রেলওয়ে ওয়ার্কশপ ইনক্লুডিং ফ্যাসিবিলিটি স্টাডি প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ৮ কোটি ৭১ লাখ ১৫ হাজার ডলার। এর মধ্যে ভারতীয় ঋণ ৭ কোটি ২ লাখ ৮০ হাজার ডলার। ইমপ্রুভমেন্ট অব আশুগঞ্জ রিভার পোর্ট-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া ল্যান্ড পোর্ট রোড অ্যাজ চার লেন ন্যাশনাল হাইওয়ে প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ৩৩ কোটি ৪৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার। এরমধ্যে ভারতীয় ঋণ থেকে ২৮ কোটি ৩৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার ব্যয় হবে।
অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা ২ প্রকল্প : ক্রিয়েটিং ফ্যাসিলিটিজ ফর এডিশনাল ওয়ান লাখ স্টুডেন্টস ইনরোলমেন্ট ইন ডিফারেন্ট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট প্রকল্পে ২৪ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চেয়ে ২০ জুনে প্রস্তাব পাঠানো হয় এবং এস্টাবলিস্টমেন্ট অব আইটি পার্ক অ্যাট ডিস্ট্রিক্ট লেবেল (১২ ডিস্ট্রিক্ট) প্রকল্পে ১৯ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার চেয়ে ২১ জুলাই প্রস্তাব পাঠানো হয়।