‘বিনিয়োগ আকর্ষণে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন’
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
১৯৯০ সালে বার্জার পেইন্টসে যোগ দেন প্ল্যানিং ম্যানেজার হিসেবে। মার্কেটিং, সেলস, সাপ্লাই চেইনসহ বিভিন্ন বিভাগে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে ২০০৮ সালে বার্জার পেইন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশে স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে কথা বলেছেন …
বলা হচ্ছে, নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ থেকে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ হতে গেলে আমাদের বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কিন্তু সে অনুপাতে বিদেশী বিনিয়োগ আসছে না কেন?
আমাদের বড় সমস্যা হলো, অবকাঠামোগত দুর্বলতা। কোথায় কোথায় বিনিয়োগ করা যায়, তা নিয়ে বেঞ্চমার্কিং করে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। এক্ষেত্রে দেখতে হবে আমরা এখন প্রতিযোগিতা করছি কার সঙ্গে? আমরা প্রতিযোগিতা করছি কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে। প্রথমত. প্রতিযোগী দেশগুলোর অবকাঠামো এখন অনেক ভালো। তাদের বন্দর আমাদের চেয়ে ভালো। আমরা এখন ভৌত অবকাঠামো তৈরি করছি, তারা এরই মধ্যে অবকাঠামো তৈরি করেছে এবং সেগুলো মোটামুটি একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে। সুতরাং বেঞ্চমার্কিংয়েই আমরা পিছিয়ে পড়ছি। বিদেশী বিনিয়োগের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আইনি কাঠামো (লিগ্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার)। ব্যবসা পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট অনেক আইন মানতে হয়। আমাদের দেশের ওই আইনগুলোর অধিকাংশ ব্রিটিশ আমলে করা হয়েছে, যা এখন যুগোপযোগী করা প্রয়োজন।
বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য প্রচারণা, ভৌত ও আইনগত অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং নীতিমালার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা অত্যাবশ্যক। ভৌত অবকাঠামো কবে তৈরি হবে, আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, নীতিতে সামঞ্জস্য ও ধারাবাহিকতা থাকবে কিনা প্রভৃতি ভয় থেকেই কাঙ্ক্ষিত বিদেশী বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসছে না। যেমন— কোনো বিনিয়োগকারী যদি জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করতে চান, তাহলে মূলধন ফেরত পাওয়ার জন্য তাকে অন্তত ১৫-২০ বছর ব্যবসা করতে হবে। এ খাতে মূলধনি যন্ত্রপাতিতে বিনিয়োগ অনেক বেশি। কাজেই তাদের যদি ভয় থাকে যে আমাদের জ্বালানি নীতি দীর্ঘমেয়াদে এক রকম থাকবে না, তখন বিদেশী বিনিয়োগ আসবে না।
এমন হয়েছে তা বলছি না, বলছি বিনিয়োগকারীদের শঙ্কার কথা। আরেকটি বিষয় হলো, উন্নত দেশের মতো আমাদের কোম্পানিগুলোকে যৌথ উদ্যোগে উৎপাদন খাতভিত্তিক ও রফতানিমুখী বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে। হয়তো ৩০ শতাংশ পণ্য স্থানীয় বাজারে বিক্রি হবে, বাকিটা রফতানি করতে হবে। কারণ আমাদের জনসংখ্যা বেশি হলেও ক্রয়ক্ষমতা এখনো কম। যেকোনো সেক্টরে এক বা একাধিক কোম্পানি হলেই প্রতিযোগিতা বেড়ে যায়। সেক্ষেত্রে মুনাফা কমে আসে। এক্ষেত্রে যৌথ বিনিয়োগ আমাদের জন্য একটা ভালো মডেল হতে পারে। বিনিয়োগ কমে আসার আরেকটি কারণ, আমাদের করপোরেট কর ব্যবস্থা উত্সাহব্যঞ্জক নয়।
স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা কেন বিনিয়োগ করছেন না?
সেটারও অনেক কারণ থাকতে পারে। ২০০৭-০৮ সালে আমাদের দেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। তখন থেকে স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে ভয় পেয়ে আসছেন। আমার মনে হয়, স্থানীয় বিনিয়োগ কমার ক্ষেত্রে এটি একটা বিরাট ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে। আরেকটি বিষয় হলো, আমাদের বাজার সীমিত। উচ্চ ক্রেতাদেশের শিল্পপণ্যে আমরা যেতে পারছি না। আরেকটি সমস্যা হলো, প্রায় সব কাঁচামালই আমদানি করতে হয়। সেখানে অবশ্য সরকার অনেক সহায়তা করছে যেমন— ৫ শতাংশ শুল্কে সরকার কাঁচামাল আমদানি করতে দিচ্ছে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরেকটি সমস্যা হলো, ভূমির অপ্রতুলতা। আমি মনে করছি, এটা গিভেন ফ্যাক্টর। অর্থনৈতিক অঞ্চল থাকলে সব অবকাঠামো থাকবে বলে আশা করছি। তখন গ্যাস, পানি, বিদ্যুতের জন্য একেক কর্তৃপক্ষের কাছে যেতে হবে না। আমাদের সরকার সবেমাত্র গ্যাসনীতি ঘোষণা করল। সরকার বলছে, এলএনজি আসছে। এলএনজি না এলে জ্বালানি খরচ অনেক বেড়ে যাবে।
সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়াচ্ছে, অথচ শিল্প-কারখানায় সেভাবে সংযোগ দিতে পারছে না। গ্যাসের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। এটাকে কীভাবে দেখেন?
১৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা হলেও আমরা বিতরণ করতে পারি ৮ হাজার মেগাওয়াটের কিছু বেশি। বিদ্যুৎ এমন নয় যে, উৎপাদন করতে পারলে তা দীর্ঘদিন ধরে রাখা যাবে। যখনই উৎপাদন হবে তখনই তা বিতরণ করতে হবে। আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু বিতরণক্ষমতা বাড়েনি। এজন্যই এমন হচ্ছে। আর গ্যাস সংযোগে গত পাঁচ বছরে আমাদের উন্নতি ঘটেনি। যাদের গ্যাস সংযোগ আছে, তাদের আবার গ্যাসের চাপ নেই। গার্হস্থ্য কাজে বা যানবাহন চালানোর জন্য গ্যাসের ব্যবহার কমিয়ে শিল্পে এর সরবরাহ বাড়ানো উচিত।
সরকার যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করছে। আপনার কি মনে হয় তাতে সুফল পাওয়া যাবে?
মনে হয় সুফল পাওয়া যাবে। বিদেশী উদ্যোক্তাদের বাদ দিন, অর্থনৈতিক অঞ্চল হলে দেশীয় উদ্যোক্তারাও সেখানে যাবেন।
কিন্তু অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিদ্যুৎ-গ্যাস সংযোগ কোত্থেকে দেবে?
যেহেতু গ্যাস ও বিদ্যুৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের পূর্বশর্ত, আমরা আশা করি, সরকার যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে গ্যাস-বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে পারবে।
বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগ কোথায় কোথায় আসতে পারে?
অনেক ক্ষেত্র আছে, যেখানে বিদেশী বিনিয়োগ আসতে পারে। ভৌত অবকাঠামো, জ্বালানি, অটোমোবাইল, আইসিটি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি শিল্পে বিদেশী বিনিয়োগ আসতে পারে।
টাটা, ইয়ামাহা, এমনকি স্যামসাংয়ের মতো কোম্পানি আসার আগ্রহ দেখিয়েছিল। পরবর্তীতে তারা আগ্রহ হারাল কেন?
উল্লিখিত কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ প্রস্তাব ও সরকারের পর্যালোচনা সম্পর্কে আমার পর্যাপ্ত ধারণা নেই। তবে এ ধরনের প্রস্তাবকে যথাযথ বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিবেচনা করে বাংলাদেশে এই মানের বিনিয়োগ ধরে রাখা দেশের জন্য মঙ্গল।
প্রবাসীরা বাইরে অনেক বিনিয়োগ করছেন। তাদের বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশ কী করতে পারে?
প্রবাসীরা শিল্পে না হোক, আমাদের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারেন। আমাদের শেয়ারবাজার অনেক ওঠানামার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে একটি স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় থাকলে অনেক বিনিয়োগকারীই আসবেন বলে বিশ্বাস। প্রবাসীদের বিনিয়োগের জন্য বাড়তি কোনো সুবিধা দেয়া যায় কিনা, সরকার তা ভেবে দেখতে পারে। বিভিন্ন স্কিমের মাধ্যমেও তাদের বিনিয়োগ আকর্ষণ করা যেতে পারে।
বেশির ভাগ কর্মসংস্থান হচ্ছে অনানুষ্ঠানিক খাতে। পরবর্তীতে এটা কি চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে না?
আনুষ্ঠানিকভাবে মৌসুমভিত্তিক কর্মসংস্থানের হার ৩০-৩৫ শতাংশ। আমাদের মৌসুমি কর্মসংস্থান হয় নির্মাণ খাতে। তবে তা খুব কম দক্ষতার। প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ থেকে যেসব শিক্ষার্থী পাস করছে, তাদের কর্মসংস্থান হতে পারে সেবা খাতে। আমাদের শিল্পেই আসতে হবে, হোক সেটা সেবা বা পর্যটন। কৃষিতে কর্মসংস্থান যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। কর্মসংস্থান আরো সৃষ্টি করার জন্য আমাদের ভিন্ন অ্যাপ্রোচ নিতে হবে।
বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগ না আসার পেছনে জঙ্গিবাদের নেতিবাচক প্রভাব আছে কি?
জঙ্গিবাদ সারা বিশ্বের প্রপঞ্চ। এটি কখনো বাংলাদেশে বড় মাত্রায় ছিল না, এখনো নেই। ফলে আমরা একে সেভাবে দেখেনি। কাজেই সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা আমাদের জন্য একটা ওয়েক আপ কল। আমরা দেখলাম কোনো জায়গায় জনগণ একে সমর্থন করে না। জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের পদক্ষেপ প্রশংসনীয় এবং সরকার ভিজিলেন্ট থাকলে বিনিয়োগের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম।
কস্ট অব ডুয়িং বিজনেসে আমাদের অগ্রগতি খুবই শ্লথ। এক্ষেত্রে ভারত খুব ভালো করছে। আমাদের কী করতে হবে?
ডুয়িং বিজনেস ইনডেক্সে আমাদের অবস্থান সামান্য এগিয়েছে কিন্তু অন্যান্য দেশ এক্ষেত্রে আরো ভালো করছে। ব্যবসাবান্ধব আইনকানুন, সমন্বিত অবকাঠামো এবং দক্ষ জনবল সৃষ্টির মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যেতে পারি।
বিনিয়োগের জন্য দক্ষ জনশক্তি দরকার। সেটা তৈরি হচ্ছে কি?
দেশী বা বিদেশী বিনিয়োগের মাধ্যমে শিল্প হলেই দক্ষতা তৈরি হয়। যারা শিল্পপ্রতিষ্ঠান করেন, তারাও শর্তসাপেক্ষে কিছু পরামর্শক (কনসালট্যান্ট) নিয়ে আসেন, সেটা দেশী বা বিদেশী হোক। শিল্প-কারখানা স্থাপন করা হলে পরোক্ষভাবে আমাদের একটা প্রাযুক্তিক ও কারিগরি জ্ঞান তৈরি হবে।
গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতে কোন দিকে নজর দিতে হবে?
প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে অবশ্যই বেশি নজর দিতে হবে। উচ্চ মাধ্যমিকে আইসিটি অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে শিক্ষার্থীরা আরো ব্যবহারিক হবে। আমাদের শিক্ষার সঙ্গে বাজারের চাহিদার তেমন সম্পর্ক নেই।
সরকার প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের একটা নতুন থিম তৈরি করেছিল। এটা কার্যকর হলো না কেন?
বড় অবকাঠামো তৈরি করতে প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপ কাজে আসবে। আলোচ্য থিমের আওতায় কয়েকটি প্রকল্পের আলোচনা কিছুদূর এগোলেও শেষ পর্যন্ত কাজ এগোয়নি। আমাদের দেশে এ ধরনের প্রকল্পে কাজ করার জন্য একটা স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং সিস্টেম তৈরি করতে হবে।
রাষ্ট্রায়ত্ত লোকসানি প্রতিষ্ঠানের লোকসান কমাতে সরকারের করণীয় কী বলে মনে করেন?
বর্তমান বিশ্বে সরকারের আকার যথাসম্ভব ছোট রাখার চেষ্টা করা হয়। লোকসানি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বেসরকারি করা অথবা নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে ঢেলে সাজানো— যেটাই হোক দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা দরকার।
বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের বড় শক্তি কী?
বাংলাদেশী উদ্যোক্তারা অসম্ভব সৃজনশীল (ক্রিয়েটিভ), সাহসী। স্থানীয় উদ্যোক্তা ও শিল্পপতিদের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা আছে। তারা যখন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেন তখন তাদের সামনে অভীষ্ট ধরা ছিল যে, দেশ মধ্যম আয়ে যাচ্ছে। ভোগ বাড়বে। নগরায়ণের প্রসার ঘটবে। আমাদের নির্মাণসামগ্রী ও যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। আমাদের খাদ্যসামগ্রী দরকার। জনগণের জন্য বিলাসী পণ্য দরকার। প্রয়োজনীয় এসব পণ্য জোগান দিয়ে চলেছে ব্যক্তিখাত। ব্যক্তি উদ্যোক্তার সাহস ও উদ্যমের আমি প্রশংসা করি। আউটসোর্সিংয়ে বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থান গড়ে উঠছে, যা আমাদের তরুণ উদ্যোক্তাদের সৃজনশীলতা ও আন্তর্জাতিক মানের দক্ষতার প্রমাণ।
নতুন উদ্যোক্তাদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী?
নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একটা তহবিল গঠন করেছে। নারীদের ক্ষেত্রে একটি নিয়ম করেছে, ২৫ লাখ টাকার জন্য কোনো জামানতের প্রয়োজন হবে না। আইডিয়ার জন্যও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল একটা ফান্ড করেছে। কেউ আইডিয়া দিলে তারা কিছু ফান্ড দেবে। বাংলাদেশের তরুণ-যুবকরা এখন কম্পিউটার গ্রাফিকসে কাজ করছে। ফিল্ম মেকিংয়ে কাজ করছে, ক্যামেরায় কাজ করছে। ডাটা জেনারেশনে কাজ করছে। এ ধরনের কাজে সরকার যদি যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে এবং তারা যদি ছোটখাটো কোম্পানি করে তাহলে ভালো করবে।
নারী উদ্যোক্তারা কেমন পারফর্ম করছেন?
এ সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য আমার কাছে নেই। বুটিকের মতো কিছু ক্ষুদ্র শিল্পে নারীদের উপস্থিতি দেখি। কিন্তু বড় আকারে খুব একটা দেখি না।
নারী উদ্যোক্তাদের সমস্যা কোথায়? তারা কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন?
পুরুষ উদ্যোক্তাদের তুলনায় নারীর সমস্যা দ্বিগুণ। প্রথমত. তাকে লড়াই করতে হচ্ছে পরিবারের সঙ্গে। দ্বিতীয়ত. সমাজের সঙ্গে। তবে আমি মনে করি, নারী উদ্যোক্তাদের সমস্যা হচ্ছে এখানে এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপের ট্রেনিং হচ্ছে না। বাইরে এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ পাস করে নিজেরা একটা স্টার্টআপ করে। তার পর তারা বিভিন্ন জায়গায় প্রেজেন্টেশন দেয়। কোনো একটা কনগ্লোমারেট ওদের আইডিয়াকে ফান্ডিং করল। আমাদের আইডিয়ার ওপর ভিত্তি করে পর্যাপ্ত ফান্ডিংয়ের ব্যবস্থা নেই।
দেশী কিংবা বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াতে সরকারের প্রতি আপনার কী পরামর্শ থাকবে?
সরকারের প্রতি পরামর্শ হলো, প্রতিষ্ঠান ডেভেলপ করতে হবে। এর কাজগুলো সরলীকরণ করতে হবে এবং সেগুলো দৃশ্যমান করতে হবে। প্রতিটি বিভাগের মধ্যে সমন্বয় আনতে হবে। সবকিছু একটি ব্যবস্থার অধীনে আনতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, সব বিভাগের কাজ দৃশ্যমান করতে হবে এবং জবাবদিহিতা থাকতে হবে।