বিক্রয় বাড়ানোর ৫ কৌশল

বিক্রয় বাড়ানোর ৫ কৌশল

  • আফসানা সুমী

সময়ের মূল্য আপনার জন্য হিসেব হয় টাকায়। প্রতি মিনিটের হিসেব আপনাকে দিতে হয় কোম্পানিকে। কোম্পানির পণ্য বিক্রির জন্য যেমন নানান পরিকল্পনা আপনাকে করতে হয় তেমনি গ্রাহকের কাছে কীভাবে পণ্যকে তুলে ধরলে তা বিক্রি হবে সেই কৌশলও আপনাকে ঠিক করতে হয়। প্রতিমাসের টার্গেট নিশ্চিতভাবে পূরণের জন্য আপনি অনুসরণ করতে পারেন এই কৌশলগুলো:

১. কঠিন কাজগুলো আগে করুন

প্রত্যেকটি মানুষেরই এমন কিছু কাজ থাকে যা সে কোনমতেই করতে পছন্দ করেন না। কেউ কেউ গ্রাহককে ফোন করে আপডেট দিতে অপছন্দ করেন। কেউ আবার মেইলের উত্তর দেওয়া বা মেইলে আলোচনা করা পছন্দ করেন না। কারও মিটিং ডেকে কাজ বুঝিয়ে দিতে হবে এটা ভাবতেই গায়ে জ্বর আসে। কারও হয়ত প্রেজেন্টেশন তৈরি করতে কষ্ট হয়। আপনার কাছে এগুলো কঠিন কাজ। আর এগুলোর কারণেই হয়ত পরের কাজগুলো যা করা খুবই জরুরি সেগুলো বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।

আপনি যদি সময় ব্যবস্থাপনায় মাস্টার হতে চান তাহলে ‘ইচ্ছে করে না’ জাতীয় সমস্যা থেকে আপনাকে বেরিয়ে আসতে হবে। সেই কাজগুলোই আগে দ্রুত গতিতে করে ফেলুন যা আপনার মূল কাজের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

২. মাল্টিটাস্কিং বন্ধ করুন

একজন মানুষ একসাথে অনেক কাজ করতে পারেন এটাকে খুব গৌরবের মনে করি আমরা। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি আপনার দক্ষতার পথকে আটকে দেয়। মনোযোগ ভাগ হয়ে গেলে আপনার কাজের গতিও ধীর হয়ে আসে। যে পার্ফরমেন্স আপনার একটি কাজে দেওয়ার কথা ছিল তা ভাগ হয়ে যায়।

আপনি যদি মনে করেন, এমন হয় না, আপনি সব কাজ সমান দক্ষতার সাথে করতে পারেন তাহলে আপনি জানেন না আপনি আরো কত চমৎকারভাবে আপনার মেধার ব্যবহার করতে পারতেন যদি আপনি একটি কাজ করতেন! অন্য একটি কাজে হাত দেওয়ার আগে প্রথম কাজটি শেষ করুন। যখন যে কাজটি করবেন সে কাজে পূর্ণ মনোযোগ দিন। এতে আপনার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অবশ্যই পূরণ হবে।

৩. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ রাখুন

প্রতিষ্ঠানের কাজ করার সময় শুধু কাজগুলোই করুন। এসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার বন্ধ করুন। এখন আমাদের হাতে হাতে স্মার্ট ফোন হওয়ায় এখন মেইল, ফেসবুক নোটিফিকেশন সব কিছুই প্রতিমুহুর্তে তাদের আগমন জানাতে থাকে। এতে তৈরি হয় মনোযোগের বিচ্ছিন্নতা। তাই ইন্টারনেটের ব্যবহার বন্ধ রাখুন, অন্তত মোবাইলে।

অনেক সেলস পার্সনই এই কাজ করতে ভয় পাবেন কারণ তাদের মনে হবে এই সময় গুরুত্বপূর্ণ কোন গ্রাহকের বার্তা আসতে পারে বা দরকারি কোনকিছু মিস হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি এমন একটি একাউন্ট ব্যবহার করতে পারেন যেখানে শুধু গুরুত্বপূর্ণ মানুষেরাই থাকবেন। দেখবেন অনেকটা সময় বেঁচে যাবে, একই সাথে পণ্যের বিক্রিও বাড়াতে পারবেন সানন্দে।

৪. কার্যকরি কাজটি করুন

আজকের দিনে কোন ধরণের যোগাযোগটি বেশী কার্যকরি সেটি বেছে নিন। যেমন ইমেইলের চেয়ে এখন ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ জনপ্রিয়। ফোনে কল করার চেয়ে ভাইবার বা হোয়াটস এপ্স এ ভিডিও কল বেশী স্মার্ট। তবে কোন কোন কোম্পানি পুরাতন যোগাযোগের ধরণকেই প্রফেশনাল মনে করতে পারেন। খেয়াল করুন কার জন্য কোনটা বেশী কার্যকরি।

একজন গ্রাহক যে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারে তেমন অভ্যস্ত নন তাকে মেসেজ না দিয়ে কল করুন। যে গ্রাহক সারাক্ষণ মিটিং এ থাকেন, খুবই ব্যস্ত মানুষ, তিনি নিশ্চয়ই নিয়মিত মেইল চেক করেন। তাকে কল করে বিরক্ত না করে মেইল করুন। এভাবে আপনার যোগাযোগের ধরণ গ্রাহকের মাঝে এক প্রকার সন্তুষ্টি তৈরি করবে এবং তিনি আপনার সাথেই যোগাযোগে আগ্রহী হবেন সবসময়।

৫. প্রতিদিনকার কাজে গুরুত্বের ক্রম তৈরি করুন

আপনার প্রতিদিনকার কাজ ঠিকমত হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য কাজগুলো লিখে ফেলুন এবং অবশ্যই গুরুত্ব অনুসারে লিখুন। সবচেয়ে দরকারি কাজটি আগে লিখুন। ক্রম অনুসারে তালিকা তৈরি করুন। এটি করতে আপনার হয়ত প্রতিদিন সকালে ১০ মিনিট ব্যয় হবে। কিন্তু এই কাজটি নিয়মিত করলে আপনি অপ্রত্যাশিত অনেক ত্রুটি বিচ্যুতি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন। ফলে আপনার পার্ফরমেন্স হবে দিনে দিনে দূর্দান্ত।

সূত্র : প্রিয় ডটকম

Sharing is caring!

Leave a Comment