খুঁজেফিরি বিনিয়োগকারী
শূন্য থেকে শুরু করে স্বল্প সময়ের মধ্যে ১ দশমিক ২ মিলিয়ন পাউন্ড সম্পদের মালিক হয়েছেন ব্রিটিশ তরুণ উদ্যেক্তা এন্ড্রু নিধাম। তিনি সৃজনশীল ব্যবসায়ীদের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম হেডবক্স এর প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও। পাশাপাশি তরুণ উদ্যেক্তাদের জন্য নিয়মিত নিবন্ধ লেখেন স্টার্টআপস ওয়েব পোর্টালে। এন্ড্রুর তেমনই একটি নিবন্ধ অনুবাদ করেছেন মারুফ ইসলাম।
ব্যবসা শুরু করতে গেলে পুঁজি লাগে। কিন্তু যারা তরুণ উদ্যেক্তা তাদের পকেটে সব সময় পর্যাপ্ত পুঁজি থাকে না। তাই বাধ্য হয়ে খুঁজতে হয় বিনিয়োগকারী। অনেক খুঁজেফিরে যদিওবা একজন বিনিয়োগকারী পাওয়া যায়, তাকে ব্যবসার আইডিয়া বোঝাতে গিয়ে হতে হয় গলদঘর্ম। এরকম বিপদে পড়তে না চাইলে কিছু বিষয় আগে থেকেই মাথায় রাখুন। যেমন :
অভিনব আইডিয়া
- আপনি যখন কোনো বিনিয়োগকারীর কাছে কোনো ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে যাবেন তখন তিনি স্বভাবিকভাবেই জানতে চাইবেন, আপনার অতীত সাফল্য এবং ব্যর্থতা সম্পর্কে। তিনি দেখতে চাইবেন, যে ব্যবসা আপনি শুরু করতে চাইছেন তার প্রতি আপনার কতটুকু একগ্রতা এবং কর্মস্পৃহা রয়েছে। শুধু তাই নয়, ব্যবসায় সন্তোষজনক সাফল্য না এলে আপনি কীভাবে সংকট মোকাবেলা করবেন সেটিও তিনি পরিষ্কারভাবে জানতে চাইবেন। সুতরাং এইসব বিষয়ে বিনিয়োগকারীকে সন্তুষ্ট করতে চাইলে প্রথমেই আপনাকে যা করতে হবে তা হচ্ছে, একটি অভিনব ব্যবসায়িক আইডিয়া উদ্ভাবন করা- যেন আপনার আইডিয়া শুনেই তিনি পুরো ব্যবসার কৌশল জানতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
এক বাক্যে ব্যাখ্যা চাই
- আপনার ব্যবসায়িক ধারনাপত্র (প্রপোজাল) নিশ্চয় অনেক লম্বা-চওড়া হবে তাতে সন্দেহ নেই। হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আপনি যখন আপনার ব্যবসা সম্পর্কে বিনিয়োগকারীর কাছে মুখে বলতে যাবেন তখন যেন সেটা তিরিশ মিনিটব্যাপী ক্লাস লেকচার না হয়ে যায়! চেষ্টা করবেন এক বাক্যে পুরো আইডিয়া বলতে। আপনার আইডিয়া শুনেই যেন তার মুখ থেকে অজান্তে বের হয়ে যায়-‘আরে বাহ! দারুণ আইডিয়া তো!’
গল্প আকারে পণ্যের বয়ান
- আপনার আইডিয়ার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীকে মুগ্ধ করতে পেরেছেন তো! এবার আপনার পণ্য বা সেবা কী হবে, কীভাবে গ্রাহক/ভোক্তাকে মুগ্ধ করবেন সেসব বিষয় বলুন গল্পের মতো করে। আর গল্প বলার সময় কৌশল করে নিজের অতীত সাফল্য তুলে ধরুন। বলুন, ভার্সিটিতে পড়ার সময় আপনি অমুক ব্যবসা করে এভাবে সফল হয়েছিলেন। সব সময় যে ব্যবসার উদাহরণই দিতে হবে তা নয়, আপনি পরীক্ষার খাতায় কী কৌশল অবলম্বন করে বেশি নম্বর পেতেন সেসবও হতে পারে গল্পের উদাহরণ।
রাজস্ব আয়ের স্পষ্ট ধারনা
- আপনি আপনার ব্যবসা থেকে কীভাবে মুনাফা অর্জন করবেন এবং কীভাবে সরকারকে রাজস্ব দেবেন সে ব্যাপারে স্পষ্ট ধারনা থাকা চাই। এ বিষয়ে আপনার বিনিয়োগকারী আপনার কাছে অবশ্যই বিস্তারিত জানতে চাইবেন। কেননা যিনি বিনিয়োগ করবেন তিনি তো মুনাফার আশাতেই বিনিয়োগ করতে চাইবেন। অতএব, ব্যবসার আইডিয়া দাঁড় করোনোর আগেই ব্যবসার আয়-ব্যায়ের ভারসাম্য বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে ছক কাটুন।
না থামুক নেটওয়ার্ক নির্মাণ
- এখন সময়টাই তো পার্সোনাল নেটওয়ার্কিংয়ের। আপনার যোগাযোগ যত বিস্তৃত হবে ব্যবসায়িক সাফল্য আসবে তত দ্রুত। তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে যতভাবে পারা যায় মানুষের সঙ্গে বিস্তৃত যোগাযোগ গড়ে তুলুন। ভুলে যাবেন না, আপনার বিনিয়োগকারী আপনার যোগাযোগ দক্ষতার ওপরও নজর রাখবে নিঃসন্দেহে। কাজেই বিনিয়োগকারীকে সহজে আয়ত্বে আনতে আপনার যোগাযোগ দক্ষতার বিষয়টিও সংক্ষেপে তুলে ধরুন। এছাড়া বিস্তৃত নেটওয়ার্ক আপনার আর একটি উপকার করবে, সেটা হচ্ছে বিনিয়োগকারী খুঁজে পেতে সাহায্য করবে। আপনি হয়ত জানেন না আপনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বন্ধু তালিকায় এমন কেউ আছেন যিনি আপনার ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। আপনার ব্যবসায়িক আইডিয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েই দেখুন না, কেউ না কেউ নিশ্চয় সাড়া দেবে।