এক বছরে একটি বই
- জেফ শোর
বই লিখে কী ধনী হওয়া যায়? অধিকাংশ জনই উত্তর দেবেন, ‘না’। তবু পৃথিবীজুড়ে অনেকেই বই লিখছেন। বই লিখে ধনী হওয়া না গেলেও এর রয়েছে আনুসঙ্গিক কিছু সুবিধা।যেমন:
বিশ্বাসযোগ্যতা : যখন আপনার একটি বই থাকবে মানুষ আপনাকে আরো গম্ভীরভাবে নিবে। অন্যের কাছে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হবে।
মার্কেটিং : বই ছোট পুস্তিকার চেয়ে অনেক বেশী শক্তিশালী হয়। এবং প্রকাশ করতে একই খরচ হয়। মানুষ বইকে ছুড়ে ফেলে দিতে পারে না।
বিশ্বাস : অনেকের জন্য একটি বই লেখা একটি দীর্ঘ স্বপ্ন পূরন করার মতো আনন্দদায়ক।
আর এসব কারণে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি এক বছরে একটি বই লিখতে। আমি এখন পর্যন্ত পাঁচটি বই লিখেছি, এবং আমি বর্তমানে ৬ এবং ৭ নম্বর বইয়ের কাজ করে যাচ্ছি। আমি যা লিখেছি তা হলো ব্যবসায়িক বই, কথাসাহিত্য না, এবং আমার পদক্ষেপসমূহ যা প্রাক্তনকে নির্দেশ করে, পরেরটির না, কীভাবে বই লিখতে হয় ধাপগুলো এই সম্পর্কিত, কিভাবে বিক্রি বা বাণিজ্য করতে হয় তা নয়।
অতএব, আপনি কি বিস্মিত হতে চান প্রকৃতপক্ষে কীভাবে বসতে হয় এবং আপনার প্রথম বই লিখতে হয়? তাহলে ৮ টি ধাপ আপনার জন্য।
১. একটি ধারনা নির্ধারন করুন
আপনি হয়ত ভাবছেন আপনি ইতিমধ্যে দুর্দশাগ্রস্থ, কিন্তু মৌলিক বিষয় হলো কয়েকজন সৎ এবং বিশ্বস্ত উপদেষ্টা থেকে ধারনার সচ্ছতা জেনে নিন। এমন মানুষকে খুজুন যে আপনাকে সত্য সম্পর্কে বলবে এবং তাদের পরামর্শ শুনুন। মাঝে মাঝে আমরা আমাদের নিজস্ব ধারনার প্রেমে পড়ে যাই, প্রকৃতপক্ষে মানুষ কি পড়তে চায় তা খুঁজি না।
২. ‘অবতার’ আপনার পাঠক
আপনার টিপিক্যাল পাঠকের প্রোফাইল নকশা করুন। সে কে? কী এবং কীভাবে ব্যাক্তি পড়তে পছন্দ করে? আপনি কীভাবে পাঠককে প্রভাবিত করতে চান? আপনি যখন আপনার পাঠককে বুঝতে পারবেন, তখন কীভাবে বই লিখতে হবে তার স্বচ্ছ ধারনা পেয়ে যাবেন। পাঠক কী পছন্দ করে সেভাবে পদক্ষেপ নিন। আপনি কী চান তাকে সূদুর পর্যন্ত হাঁটাতে?
৩. চিহ্নিত করুন প্রধান বিভাগসমূহ
আপনার থিম এবং অভীষ্ট পাঠককে মাথায় রেখে, বইকে বেশ কয়েকটি প্রধান অংশে বিভক্ত করে ফেলুন। এর উদ্দেশ্য হলো বইটি লেখার জন্য আপনাকে সহজ করে তোলা, এবং পাঠকের কাছে সহজ করে দেওয়া।
৪. চিহ্নিত করুন অধ্যায়ের থিম
আপনার বড় ধারনাটি অনুসন্ধান করতে শুরু করুন। আমার বর্তমান প্রজেক্ট এ আমি আক্ষরিক অর্থে বড় ধারনাগুলো প্রতিটি অধ্যায়ে রেখেছি, যা একটি বাক্য দিয়েই বোঝা যায়। প্রতিটি ক্ষেত্রে লেখার পূর্বে এই প্রধান বিষয় চিহ্নিত করেছি। এটি মেসেজ এর প্রতি আমাকে মনোনিবেশ করে রাখে এবং চাপ থেকে দূরে রাখে। অধ্যায়ের শিরোনাম দেয়ার জন্য চিন্তিত হবেন না। এটা যেকোন সময় লেখা হয়ে যেতে পারে।
৫. রুক্ষ লেখা
অনেক ব্যবসায় লেখক প্রথম লেখাতেই একটি নিখুত বাক্য নৈপুন্যতায় মাথা ঘামান। এটা বড় ভুল। শব্দ শ্রুতিমধুর হতে পারে, আপনি প্রভাব হারাতে পারেন কারণ বড় পয়েন্ট হারিয়ে যায়। আমি অনেক সফলতা পেয়েছি ‘ব্রেইন ডাম্প’ পদ্ধতি অবলম্বন করে। কোন মনোযোগ, শব্দ নির্বাচন, বিরামচিহ্ন ইত্যাদি ছাড়াই অনায়াসে লিখে যাওয়া। ফলশ্রুতিতে দেখা যাবে শেষপর্যন্ত এটি জগাখিচুরি হয়েছে, মুক্তলেখা পরিমানস্বরুপ বাস্তব লেখা থেকে অনেক সহজ।
৬. ফর্ম লিখুন
যখন সমগ্র বইয়ে আমি রুক্ষভাবে লিখি আমি ফিরে যাই শৈলী, পাঠযোগ্যতা, শব্দ পছন্দের জন্য। আমি চিন্তার সুবিন্যাস করি যেখানে প্রয়োজন যোগ এবং অপ্রয়জনে বিয়োগ করি। মৌলিক কাঠামো(ধাপ ৫) দিয়ে শুরু করুন এবং তারপর বিচার বুদ্ধি যোগ করুন।
৭. সুরুচিসম্পন্ন লেখা
আমার ফর্ম লেখা শেষে আমি ফিরে আসি এবং বিষয়গুলোকে রুচিসম্পন্ন করি। প্রথম পর্যায়ে লেখাটি কেমন ছিল তা শব্দ করে পড়ুন। যখন আপনি এই কাজটি করবেন আশ্চর্যজনক ফল পাবেন। কিছু লেখক তাদের পান্ডুলিপি শেষ করার পূর্বে ৩/৪ বার শব্দ করে পড়ে।
৮. একটি কপি বা সম্পাদক
একটি বড় ভুল হচ্ছে নিজের লেখা নিজে এডিট করা। দ্বিতীয় বড় ভুল হচ্ছে আপনার স্ত্রীকে এটি করতে দেওয়া। তাদের কাজ আপনার রচনা নিয়ে সমালোচনা করা না, তাদের কাজ আপনাকে নিশ্চিত করা যেন আপনাকে স্টুপিড দের মত না দেখায়। আর কীভাবে বলতে হবে তা আমি জানি না। আচ্চঅ, এই ধাপটি বাদ দিন, আপনি শেষমেষ বোকা বনে যাবেন।
লেখক : প্রতিষ্ঠাতা, শোর কনসাল্টিং। ব্যবসায় বিশেষজ্ঞ, লেখক ও উদ্যেক্তা।
অনুবাদ : রিক্তা রিচি।