ই-শপের জন্য তৈরি হচ্ছে এক হাজার উদ্যোক্তা
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে অনলাইনে কেনাকাটার সুযোগ করে দিতে প্রতি জেলায় একটি করে ‘ই-শপ’ স্থাপন করতে যাচ্ছে সরকার। ফিউচার সলিউশন ফর বিজনেস বা এফএসবির কারিগরি সহায়তায় ‘ই-শপ’ প্রকল্পের মাধ্যমে এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের মোট ব্যয় হবে ৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়িত হবে এক বছর মেয়াদি এই উদ্যোগ। এই সময়ের মধ্যে দেশের ৬৪ জেলার এক হাজার উদ্যোক্তাকে ‘ই-শপ’ পরিচালনার জন্য পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর মধ্যে ৫০ ভাগ নারী প্রশিক্ষণ পাবেন।
৬৪ জেলায় যে ই-শপ প্রতিষ্ঠা করা হবে, সেগুলোর উদ্যোক্তাদের একটি করে ডেস্কটপ, ল্যাপটপ, ইউপিএস, ডিজিটাল ক্যামেরা, প্রিন্টার, মডেম, ওয়্যারলেস রাউটার, মাল্টিপ্লাগ, পিসি টেবিল, পিসি চেয়ার, হোয়াইট বোর্ড, ফাইল কেবিটেন ও ১০টি ভিজিটর চেয়ার দেওয়া হবে।
ই-কমার্স ওয়েবসাইটটির মাধ্যমে অনলাইনে পণ্য কেনা ও মূল্য পরিশোধের ব্যবস্থা সংযুক্ত থাকবে। এতে সব উদ্যোক্তার ছবি, পণ্যসহ তালিকা দেওয়া থাকবে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামের সব স্বল্প আয়ের মানুষের অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধান করা হবে। এটি সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর ব্যবসাসংক্রান্ত সমস্যাও নিরসন করবে।
এ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ বলেন, ‘দেশের প্রতিটি জেলায় এই ই-শপ তৈরি করা হবে। এর ফলে প্রান্তিক মানুষও ই-কমার্সের আওতায় আসবে। এই উদ্যোগের ফলে প্রাথমিকভাবে এক হাজার তরুণের কর্মসংস্থান হবে। কর্মসংস্থানের সংখ্যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলেও জানান তিনি।
কারা প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন: কর্মসূচি পরিচালক আক্তার হোসেন জানান, কর্মসূচি পরিচালনা করতে ইয়াং বাংলার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করা হচ্ছে। ইয়াং বাংলার স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্য থেকে তরুণদের বেছে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৫০০ জন পুরুষ, ৫০০ জন নারী। তাঁরাই হবেন ই-শপ কর্মসূচির উদ্যোক্তা। এই উদ্যোক্তারা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে ই-শপ চালাবেন। যে যে জেলার বা এলাকার, তাঁদের সেই জেলার জন্য নির্বাচন করা হবে। উদ্যোক্তারা জেলার অলিতে-গলিতে ঘুরে পণ্য সংগ্রহ করে ক্রেতার ফরমায়েশ অনুযায়ী সরবরাহ করবেন। এর মধ্যে ৪৫টি জেলার ৮৫৩ জনের নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। বাকি জেলাগুলো থেকে শিগগিরই নিবন্ধন করা হবে। তাঁরা পাঁচ দিন করে প্রশিক্ষণ পাবেন। প্রশিক্ষণ দিয়েছে ফিউচার সলিউশন ফর বিজনেস (এফএসবি)। আমার দেশ আমার গ্রাম কেন্দ্রীয় ওয়েবসাইট অপারেশনে সহযোগিতা করবে।
ইয়াং বাংলার সদস্য ছাড়াও যেকোনো তরুণ শর্ত সাপেক্ষে এ প্রশিক্ষণ নিতে পারছেন। প্রশিক্ষণ পেতে হলে বয়স ১৮ থেকে ৩৫-এর মধ্যে হতে হবে। কমপক্ষে মাধ্যমিক পাস ও কম্পিউটারের সাধারণ দক্ষতা থাকতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, স্থানীয় জেলার অধিবাসী হতে হবে। ইয়াং বাংলার স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে কিংবা সেমিনারে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে প্রশিক্ষণের জন্য নাম নিবন্ধন করতে হবে। প্রতি জেলায় ১৭ জনকে নির্বাচন করা হবে। তাঁদের পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে তাঁদের মধ্য থেকে সেরা দুজনকে জেলাভিত্তিক সেন্টার চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে। বাকিরা উদ্যোক্তা হিসেবে নিজ অঞ্চলের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবেন। ই-কমার্স ব্যবসার সেবাকেন্দ্র হিসেবে তাঁরা তাঁদের লাভ বুঝে পাবেন।
ই-শপে যা থাকবে
১. প্রতি জেলায় একটি করে ই-শপ থাকবে, যা দুজন পরিচালনা করবেন। উদ্যোক্তারা এই ই-শপের মাধ্যমে সারা দেশে পণ্য কেনাবেচা করবেন। উদ্যোক্তারা তাঁদের জেলার বিভিন্ন পণ্য ই-কমার্সের মাধ্যমে বিক্রি করবেন। আরও উদ্যোক্তা তৈরি করবেন। কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য ই-শপে তুলে ধরবেন। ক্রেতার ও বিক্রেতার মধ্যে প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবেন।
২. কেন্দ্রীয় একটি ই-শপ থাকবে, যার মাধ্যমে সারা দেশের ই-শপগুলো নিয়ন্ত্রণ করবে সরকার।
৩. ৬৪ জেলায় এক হাজার উদ্যোক্তাকে নিয়ে ডিসেম্বরে এই প্রকল্প চালু হবে।
৪. পণ্য বিক্রি করতে ই-শপ উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে। ক্রেতারা অনলাইনে পণ্য দেখে ফরমায়েশ দিলে তা হাতে পাবেন। অনলাইনে পেমেন্ট করবেন।