তরুণ উদ্যোক্তা মেলায় ৭০ হাজার দর্শক
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
দেশের প্রথম তরুণ উদ্যোক্তা মেলায় ৭০ হাজার দর্শনার্থী প্রবেশ করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ দর্শক-ক্রেতা ছিল তরুণ ও শিক্ষার্থী, যারা ভবিষ্যতে তরুণ উদ্যোক্তা হয়ে উঠবে।
আর মেলায় অংশ নেওয়া ৭০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ছিল নতুন, যারা প্রথম কোনো মেলায় অংশ নিয়েছে। সেই বিবেচনায় প্রথম আয়োজন সফল হয়েছে বলে মনে করছে আয়োজক জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) চিটাগাং কসমোপলিটন। অন্য শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো তরুণদের সাহসী আয়োজনের প্রশংসা করেছে।
জেসিআই চিটাগাং কসমোপলিটনের সভাপতি জসীম আহমেদ বলেন, ‘মেলায় ৭০ হাজার দর্শক-ক্রেতা প্রবেশ করেছে, যার বেশির ভাগই সাধারণ দর্শক নয়, এর বেশির ভাগ তরুণ ও শিক্ষার্থী। তাদের একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা এবং ভবিষ্যৎ উদ্যোক্তাদের ব্যাপক অংশগ্রহণই মেলার সফলতা।’ তিনি বলেন, ‘কেমন বেচাকেনা হয়েছে, সেটা আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। অংশগ্রহণকারীরাও চেয়েছে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ডিং করতে। চট্টগ্রামে একই সময়ে একাধিক মেলা চলার পরও আমাদের সাড়া ছিল অবাক করা।’ তরুণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে কানেকটিভি বাড়ানো, তরুণদের ব্যতিক্রমী ও উদ্ভাবনী উদ্যোগগুলোকে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামসংলগ্ন মাঠে দেশের প্রথম ‘তরুণ উদ্যোক্তা মেলা’ শুরু হয়। গত ১৮ নভেম্বর মেলা শুরু হয়ে চলে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে মেলার ভেন্যু হিসেবে সাড়া কেমন—জানতে চাইলে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ ইয়াজদানি রবিন বলেন, ‘মেলার জন্য এটি ভালো স্থান। আগামীতেও এই স্থানে মেলা আয়োজনের সাড়া পাচ্ছি বেশি। তবে মেলার মেয়াদ ১৮ দিন থেকে বাড়িয়ে ৩০ দিন করতে পারলে আরো বেশি জমজমাট হবে। কারণ একটি স্টল বানাতে এক সপ্তাহের যে খরচ ৩০ দিন থাকলেও একই খরচ।’
মেলার অনলাইন শপ সেবার স্টলে সাড়া ছিল সবচেয়ে বেশি। প্রতিষ্ঠানের কো-অর্ডিনেটর অসীম কুমার দাশ বলেন, এক ক্লিকে ঘরে বসে সব সেবা নিতে সেবা সার্ভিস চট্টগ্রামে যাত্রা শুরু করেনি। এর পরও অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি, যা এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা জোগাবে।
জানা গেছে, প্রথম উদ্যোগ হলেও আকর্ষণীয় ও ব্যতিক্রমী করতে আয়োজকরা মেলার ভেতর গেমস জোন ও স্থায়ী একটি প্ল্যাটফর্মে প্রতিদিন গান, নাচ, ব্যান্ড শো, বিভিন্ন বিষয়ে পাওয়ার প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেছে। তীরন্দাজ, দি ট্রি, নাটাই এবং রায়হান ও ফ্রেন্ডস দলের পরিবেশনা যেমন ছিল, তেমনি ছিল দেশের শীর্ষ ব্রান্ড এলআরবির তাত্ক্ষণিক পরিবেশনা। মেলা পরিদর্শনে এসে তিনি এতটাই মুগ্ধ হয়েছেন, তাদের উদ্দীপ্ত করতে দেড় ঘণ্টা পরিবেশনা করেছেন।
এ বিষয়ে জুনিয়র চেম্বার নির্বাহী সভাপতি গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘এসব ব্যতিক্রমী উদ্যোগে দর্শকদের ভালো সাড়া মিলেছে। আমাদের জেসিআই ওয়ার্ল্ড প্রেসিডেন্ট পাসকেল ডাইক মেলা সফরে এসে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন, যা আমাদের বড় প্রাপ্তি।’
শীর্ষ চেম্বারগুলোর নেতারাও সফর করেছেন তরুণদের এই মেলা। মেল সফর করে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘প্রথম আয়োজনেই তারা বেশ ভালো করেছে। তরুণ উদ্যোক্তাদের দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখার সুযোগ রয়েছে, মেলার মাধ্যমে তারা জানান দিয়েছে। তাদের এগিয়ে আসতে হবে, সফল হতে হবে। এ জন্য আমরা তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিচ্ছি। ’
মেলা সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে গিয়ে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ চট্টগ্রামের প্রেসিডেন্ট এস এম আবু তৈয়ব বলেন, ‘মেলায় ব্যতিক্রমী অনেক প্রতিষ্ঠান নজর কেড়েছে। এত অল্প বয়সে তারা যে উদ্যোক্তা হতে উৎসাহ দেখাচ্ছে, তাতেই আমি আশাবাদী। তারা ছোট ছোট ব্যবসা দিয়ে বড় ব্যবসার সহযোগী হিসেবে তারা এগিয়ে যাক। অর্থনীতির গতিপ্রবাহে তাদের আমরা স্বাগত জানাই। ’
গতকাল সোমবার মেলায় চট্টগ্রামের সফল পাঁচ তরুণ উদ্যোক্তাকে সম্মাননা জানিয়েছে আয়োজকরা। তাঁরা হলেন বারকোড রেস্টুরেন্ট গ্রুপের কর্ণধার মনজুরুল হক, ম্যাফ সুজের কর্ণধার হাসনাত মোহাম্মদ আবু ওবায়দা, ক্যাটারিং সার্ভিসে সাবিনা ইকরাম সিরাজি, বাতিঘরের দীপংকার দাশ ও র্যাংগস গ্রুপের মাহবুব সোবহান জালাল।