ব্যবসায় ব্যর্থতার যত কারণ
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
ব্যবসা আপনার সারা জীবনের স্বপ্ন। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে। কিন্তু আপনার স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে পারেননি আজও। হয়ত চেষ্টা করেছেন। ভেবেছেন আমার দ্বারা হবেনা। নিজেকে সময়ের সাথে তৈরী করুন আত্মবিশ্বাসী, ধৈর্য্যশীল, উদ্যোমী, আর পরিশ্রমী হিসেবে।
আদিম যুগ থেকেই মানুষের ব্যবসায় করার প্রবণতা ছিল। আর আজ বিশ্বায়নের এ সময়ে যখন পুরো পৃথিবী আপনার হাতের মুঠোয় তাহলে আপনি কেন ব্যবসা শুরু করতে পারছেন না? আপনার চিন্তা ভাবনার সময় একটু সংক্ষিপ্ত করুন যদি নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চান।
ব্যবসায় সফল হতে না পারার কিছু কারণ:
সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যের অভাব
যার কাছে চমৎকার কিছু আইডিয়া আছে, তার নতুন কিছু করার অনুপ্রেরণার অভাব হয় না। ব্যবসায় সাফল্য বলতে মূলত অর্থনৈতিক মুনাফাকে বোঝালেও কোম্পানির সাফল্য কেবল অর্থনৈতিক উন্নতিই নয়, আরো অনেক কিছু। নতুন কিছু করতে পারা, নতুন পথের সন্ধান দেয়া, নিজের লালিত স্বপ্নের বাস্তবায়ন, কাছের মানুষদেরকে সাফল্যের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দেয়া, সামাজিক দায়বদ্ধতা মেটানো, এরকম অনেক কিছুই একজন সফল উদ্যোক্তার পক্ষে করা সম্ভব।
নির্দিষ্ট লক্ষ্য
উদ্দেশ্য কিংবা দিক নির্দেশনা ছাড়া একজন উদ্যোক্তা সফল হতে পারে না। একজন উদ্যোক্তার কৌশলী দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে হবে। ব্যবসায়ে অনেক কৌশল বিবেচনা করতে হতে হয়। চারপাশের ব্যবসায়িক পরিবেশ বুঝে তাকে এগিয়ে যেতে হয় তার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে।
অক্ষমতা
আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। দুনিয়ার প্রভাবশালী, সম্পদশালী আর ক্ষমতাবান মানুষের মধ্যে যদি একটা মিল থাকে তো ঐ আত্মবিশ্বাসের জোর। একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে আত্মবিশ্বাসের এভারেস্টে চড়ে বসতে হবে এর কোনো বিকল্প নেই। আমি অক্ষম, আমার দ্বারা হবেনা, এটা মনে যদি কাজ করে তাহলে উদ্যোক্তা কোনো কিছুতে সফল হতে পারবে না।
সর্তক বা সাবধান
সফল উদ্যোক্তা হবার জন্য ব্যবসায় সাবধান থাকতে হবে। কোম্পানিটি শুরু থেকেই ক্ষতির মুখ দেখবে এবং কিছুদিন পর্যন্ত লস দিয়েই চলবে সেই ‘কিছুদিন’ আসলে দিন মাস পেরিয়ে কয়েক বছরও হতে পারে। এর জন্য উদ্যোক্তাকে তার ব্যবসায় সর্তক হতে হবে।
অধ্যবসায়ের অভাব
কাজের প্রতি অটল থাকা, ধারাবহিক কাজের প্রতি নিষ্ঠাবান হওয়া, কাজে সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করাই একজন সফল উদ্যোক্তার লক্ষ্য। সফল হতে গেলে অধ্যবসায়ের কোন বিকল্প নেই।
কৌশলী দৃষ্টিভঙ্গির অভাব
ব্যবসায়ে অনেক কৌশল অবলম্বন করতে হয়। একটি মাত্র সিদ্ধান্তই একটি ব্যবসাকে সর্বোচ্চ সফলতায় নিয়ে যেতে পারে আবার ব্যর্থতায় পর্যভূষিত করতে পারে। সে ক্ষেত্রে উদ্যোক্তার ব্যবসায়ে কৌশলী হওয়ার বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ।
অপর্যাপ্ত মূলধন
ব্যবসার শুরুর মূলধন জোগাড় করা হবে মূলত জমানো এবং ধার করা টাকায়, ব্যাংক লোন নিয়ে কিংবা অন্য কোনো উপায়ে। কাছের ও পরিচিত মানুষেরা এইক্ষেত্রে মূখ্য ভূমিকা রাখন। তবে নিজের ও পরিবারের সর্বস্ব কখনোই খোয়ানো যাবে না|
ব্যবসায়ে সুযোগ তৈরি না হওয়া
বিভিন্ন ব্যবসায়িক সুযোগ সুবিধা তৈরি না হওয়ার কারনে অনেক উদ্যোক্তাই ঝরে পড়ে। দেখা যায় ভালো আইডিয়া কিংবা ভালো প্রোডাক্ট থাকা সত্ত্বেও অনেক ব্যবসায়ী সফল হতে পারছেন না। ব্যবসায়ে সুযোগ তৈরি হওয়ার একটা ব্যাপার আছে আবার সুযোগ তৈরি করারও একটা ব্যাপার আছে। একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে সুযোগ তৈরি হওয়ার পাশাপাশি তৈরি করার প্রতি বেশী মনোনিবেশ হতে হবে।
বিশ্বাসের অভাব
বিশ্বাসের অভাব হলে কোন কিছুই সফল ভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। একজন সফল উদ্যোক্তা তার লক্ষ্যের প্রতি বিশ্বাস থাকতে হবে। বিশ্বাস হারিয়ে ফেললে তার ব্যবসায়ে সফলতা আসবেনা।
পরিচালনায় ব্যথর্তা
ব্যবসায়িক মনোভাব এবং ব্যবসয়ে পরিপক্কতা অর্জন খুব জরুরী বিষয়। অনেকেরই প্রচুর অর্থ ইনভেস্ট করার ক্ষমতা আছে কিন্তু একজন ব্যবসায়ী হিসেবে সেই অর্থ সঠিক ভাবে ব্যবস্থাপনা এবং পরিচালনা ব্যবসায়ের ভবিষৎ নির্মান করে। পরিচালক হিসেবে দক্ষ না হয়ে উঠলে ব্যবসা তার উদ্দেশ্য হারাবে।
গতিকীয়তার অভাব
সাফল উদ্যোক্তা হবার জন্য আবশ্যকীয় কোনো পূর্বশর্ত নেই। যেকোন অভিজ্ঞতা বা সাফল্যের কারণ হচ্ছে গতিকীয়তার। আমি কোন দিকে যাব কি আমার উদ্দেশ্য এ নির্দিষ্ট গতি উদ্যোক্তাকে ঠিক করে নিতে হবে। তা না হলে উদ্যোক্তা ব্যর্থ হবেন।
অনভিজ্ঞ সহকর্মীর অভাব
ব্যবসায়ে সহকর্মী নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একজন অনভিজ্ঞ সহকর্মী ব্যবসায়ে শুধু অকার্যকরই নয় সে ব্যবসায়ে বয়ে আনে ক্ষতি যা ব্যবসাকে দিন দিন নামিয়ে নিয়ে যায় অনেক নিচে। তাই ব্যবসা ক্ষতির আর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে অনভিজ্ঞ সহকর্মী।
উপরের সব অভাব দূর করতে পারলে একজন ব্যবসায়ী জীবনে সফলকাম হতে পারবে।