নবীন উদ্যোক্তাদের গল্প নিয়ে স্টোরিয়া
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
নাগরিক কোলাহল ও জ্যামের এই নগরীতে অনলাইনে কেনাকাটার দিকে ঝুঁকছেন অনেক ক্রেতা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অনলাইনে বিক্রেতার সংখ্যা। বিশাল একটি বাজার তৈরি হচ্ছে এই খাতে। কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হচ্ছে এক শ্রেণির তরুণ-তরুণীদের। অনেকেই আবার অনলাইনে বিভিন্ন উদ্যোগের মাঝে খুঁজে পাচ্ছে নিজেদের উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন। আর এই কাজকে সহজ করে দিয়ে ই-কমার্স সাইটের ইচ্ছাকে পরিপূর্ণতা দিতে কিংবা মার্কেটপ্লেসে নিজের একটি ব্র্যান্ডেড ওয়েবসাইট তৈরির সবচেয়ে সহজ সমাধান স্টোরিয়া।
কোনো টেকনিক্যাল জ্ঞান নয়, কোনো ওয়েব ডেভেলপমেন্ট জ্ঞানও নয়। একটি মেইল অ্যাড্রেসের মাধ্যমে কয়েকটি ক্লিকেই ই-কমার্স ওয়েবসাইটের মালিকানা নিয়ে অনলাইন বিক্রেতা হয়ে যেতে পারেন যে কেউ। অ্যাডমিন প্যানেল থেকে সাজাতে পারবেন নিজের ওয়েবসাইট নিজের মতো করে। নিজের ডোমেইনের সঙ্গে সংযোগ খুব সহজেই করা সম্ভব। আপলোড করা যাবে পণ্যের ছবিসহ বিস্তারিত বর্ণনা। আছে ইন্টিগ্রেটেড পেমেন্ট গেটওয়ে, যা দিয়ে খুব সহজেই যেকোনো ক্রেতা তার পছন্দমতো কার্ড দিয়ে কেনাকাটা করতে পারবেন। এছাড়া সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ও ই-মেইল মার্কেটিংয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ অনলাইন মার্কেটিং অনুষঙ্গও এখন আছে এক প্লাটফর্মেই। অ্যামাজনের বিশ্বখ্যাত ক্লাউড সার্ভার সুবিধা ও হোস্টিং স্পেসের সমন্বয়ে আছে উচ্চতর নিরাপত্তা প্রযুক্তি। একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট বিক্রেতাকে দেয় অনলাইনে বিক্রি করার অবাধ স্বাধীনতা। আছে নিজের ব্র্যান্ড ভ্যালু প্রতিষ্ঠা করার মতো সুযোগ।
কানাডা প্রবাসী দুই তরুণ শাওন ও হাসিবের সঙ্গে তাদের দেশের বন্ধু আরমান ও তারিফের সমন্বয়ে তারা তৈরি করা শুরু করেন স্টোরিয়া ওয়েবঅ্যাপ্লিকেশন তৈরির কাজ। ২০১৫ সালের রোজার ঈদে প্রথম তারা তাদের ওয়েব সাইটের পরীক্ষামূলক সংস্করণ বের করেন। এই ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনকে সবার জন্যে উন্মুক্ত রাখা হয় যাতে করে তরুণ উদ্যোক্তারা নিজেদের ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। এরপর নতুন নতুন ফিচারের সমন্বয়ে তারা চালু করেন ‘স্বপ্ন’ ও ‘সাহস’ প্যাকেজ। ২০১৬ সালের আগস্টের শুরুতেই আরও সুবিধা নিয়ে আসেন ‘সফল’ প্যাকেজে। আধুনিক ই-কমার্স ব্যবসার সব সুবিধাই পাওয়া যায় এই প্যাকেজে।
আমাদের দেশে এখনো প্রচলিত রীতিতেই ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানিয়ে যাচ্ছে আমাদের উদ্যোক্তারা। এতে লাগছে বাড়তি সময় ও অর্থ। আধুনিক বিশ্ব এই ধরনের ম্যানুয়াল কাজগুলোকে ডিজিটালাইজ করেছে, যেকোনো অনলাইন উদ্যোগ তৈরির পুরো প্রক্রিয়া যদি এক জায়গা থেকেই উপভোগ করা যায় তবে পণ্য ব্যবস্থাপনা ও বিপণনের মতো ব্যবসার আদি বিষয়গুলোর উপর মনোযোগ দেওয়ার ব্যাপারটি সহজ হয় উদ্যোক্তাদের জন্য। এই চিন্তা থেকেই এই তরুণেরা এরকম একটি ওয়েব সফটওয়্যার তৈরির আইডিয়া নিয়ে মাঠে নেমে পড়েন।
স্টোরিয়ার চোখ এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সীমানার ওপারে। বিশ্বের বুকে একটি স্বনামধন্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্টোরিয়াকে দাঁড় করানো তাদের লক্ষ্য।
স্টোরিয়া কাজ করে মূলত বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের নিয়ে। যারা বিভিন্নভাবে অনলাইনে তাদের পণ্য বিক্রি করেন। আমাদের দেশে সাধারণত প্রযুক্তি ভিত্তিক উদ্যোগের প্রতি একটি অনীহা কাজ করে। কারণ প্রাথমিক পুঁজির একটি সংকট থাকে। সঙ্গে থাকে দ্রুত মূলধন তুলে নেওয়ার তাড়া। তাও দেশের জন্য কিছু করার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে স্টোরিয়ার তরুণরা নেমে পড়েছেন মাঠে। দ্রুত বর্ধনশীল এই খাতে পেয়েছেন খাত সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা।