টিপ নিয়ে সাইদার সফল উদ্যোগ
- উদ্যোক্তা ডেস্ক
শখের বসেই শৈল্পিক নকশায় হাতে আঁকা টিপ বানানো শুরু করেন শান্তিনগরের গৃহিণী সাইদা সুলতানা। এরপর একটি মেলায় ওই টিপ বিক্রির জন্য নিয়ে গেলে ক্রেতারা খুব পছন্দ করেন। সব বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর ক্রেতারা কীভাবে এই টিপ কিনতে পারবেন, জানতে চান তাঁর কাছে। এ সময় সাইদা কোনো ঠিকানা দিতে পারেননি।
সাইদা এরপর তাঁর মেয়ের নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘দয়ীতা’ নামে একটি পেজ খোলেন। সেখান থেকেই শুরু হয় তাঁর ব্যবসা।
ছোটবেলা থেকেই আঁকতে ভালোবাসতেন সাইদা সুলতানা। সেই শখকেই উপার্জনে কাজে লাগান তিনি। পরিবারের সহযোগিতায় অল্প মূলধন নিয়ে নেমে পড়েন মাঠে। আলপনা টিপ, চারুলতা টিপ, অ্যাপ্লিক টিপ—এই তিন ধরনের টিপ তৈরি করেন তিনি। নানা রং, আকার ও ধরনের হয় এসব টিপ।
শুরুটা মেলা থেকে হলেও ফেসবুকেই জনপ্রিয় বেশি সাইদার টিপ। ফেসবুক পেজে নানা রং ও ডিজাইনের টিপের ছবি দেওয়ার পর অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ শুরু করেন তাঁর সঙ্গে। সাইদা নিজের লোকজন দিয়েই এসব টিপ ক্রেতার বাসায় পৌঁছে দেন। তাঁর হাতে আঁকা অ্যাপলিক টিপ বেশ জনপ্রিয় হয়েছে বলে জানান তিনি।
নামকরা কয়েকটি ফ্যাশন হাউসেও টিপ সরবরাহ করেন সাইদা। তাঁর টিপ যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ কয়েকটি দেশেও।
সাইদা সুলতানা বলেন, ‘ঘরে বসেও যে অল্প পুঁজিতে একজন উদ্যোক্তা ও সফল ব্যবসায়ী হওয়া যায়, তা আমি প্রমাণ করেছি। আমার করা টিপ আলাদা ও নিখুঁত, তাই সবাই টিপের প্রশংসা করেন। যে যেমন চায় সেভাবে টিপ তৈরি করি।’
দয়ীতা ফেসবুক পেজে ফেরদৌস কান্তা নামের একজন লিখেছেন, ‘টিপের প্রতি ভালোবাসা বেড়ে যায় যখন দয়ীতার টিপ পরি। অদ্ভুত সুন্দর।’ শাফিনুর লিখেছেন, ‘দয়ীতার টিপ পরার পর সবাই বলেছে আমাকে অন্য রকম লাগছে।’
যুগে যুগে পরিবর্তন এসেছে টিপের রং, আকার ও ধরনে। আগে মেয়েরা কপালে গোল টিপ এঁকে নিত। নানা বিবর্তন পেরিয়ে আস্তে আস্তে টিপ আজকের অবস্থায় এসেছে। হয়ে উঠেছে একটা শিল্প। দোকান, ডালা থেকে প্রযুক্তির হাত ধরে উঠে এসেছে অনলাইনে। সাজঘর, বিবি’স প্রোডাকশনও অনলাইনে বিক্রি করছে টিপ। ফেসবুকে আছে আরও কিছু ছোটখাটো উদ্যোগ।
সাইদা সুলতানা বলেন, ‘আমিও আমার তৈরি করা টিপের ডিজাইনে বৈচিত্র্য এনেছি। আশা করি, এক দিন দয়ীতা ব্র্যান্ড হয়ে উঠবে।’
লেখক ও নির্মাতা শারমিন শামস বলেন, ‘দয়ীতার টিপগুলো খুব সুন্দর ও শৈল্পিক। অর্ডার দেওয়ার পর অল্প সময়ে সুন্দরভাবে পৌঁছেও দিয়েছে তারা। ছবিতে যেমন দেখা গেছে, ঠিক তেমনই। ভালো কাজ। বোঝাই যায় যত্ন নিয়ে করেছে। দামও সেই তুলনায় অনেক কম।’
শহীদ সুরকার আলতাফ মাহমুদের মেয়ে শাওন মাহমুদ বলেন, ‘টিপ আমার নিত্যদিনের সাজের সঙ্গী। আমি লাল টিপ খুব পছন্দ করি। অর্ডার দেওয়ার পর দয়ীতা থেকে আমাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় অদ্ভুত সুন্দর রকমারি লাল টিপ। দয়ীতা নামের টিপের কারখানা সফল হোক।’