বিনিয়োগের বুনিয়াদী পাঠ

বিনিয়োগের বুনিয়াদী পাঠ

সাত-পাঁচ না ভেবে অনেক কিছুই হয়তো করা যায় কিন্তু ব্যবসা কদাচিৎ নহে। ব্যবসায় বিনিয়োগ করার আগে অন্তত দশবার ভাবতে হয়, সে যত ছোট ব্যবসাই হোক না কেন। তাই ব্যবসায় নামার আগে বিনিয়োগ বিষয়ে প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করে নিন। এ জন্য আপনার হাতের কাছে আছে অনেক বই, চাইলেই সেগুলো পড়তে পারেন। এছাড়া ইন্টারনেটের অসীম দুনিয়া তো আছেই! সেখানেও ঢু মারতে পারেন যখন তখন। বিনিয়োগ বিষয়ে নিয়মিত পরামর্শমূলক নিবন্ধ লিখে থাকেন জন ডি ফিয়ো। তাঁর একটি নিবন্ধ অনুবাদ করেছেন মারুফ ইসলাম


বিনিয়োগ পরামর্শক জন ডি ফিয়ো
বিনিয়োগ পরামর্শক জন ডি ফিয়ো

বিনিয়োগ কী ভয়ের বিষয়?

ব্যাপারটা খেয়াল করেছেন কী, বেশির ভাগ মানুষ বাড়িতে টাকা পয়সা নিয়ে খুব একটা কথা বলতে চায় না। মনে হয় টাকা পয়সা, বিনিয়োগ, ব্যবসা ইত্যাদি বিষয়গুলো ঠিক ঘরের বিষয় নয়। এগুলো বাইরে আলোচনার বিষয়। কিংবা ব্যবসা, বিনিয়োগ ইত্যাদি শব্দ মনে হয় খুবই ভীতি-উদ্রেককারী! এসব ভয় জাগানিয়া বিষয় বাড়িতে আলোচনা না করাই ভালো! কিন্তু প্রকৃত সত্য হচ্ছে এই, ব্যবসা সংক্রান্ত আলোচনা সবার আগে ঘরের মানুষের সঙ্গেই করতে হয়। মনে রাখবেন, তারাই আপনার সবচেয়ে আপনজন। সুতরাং তাদের সঙ্গে আগে আলোচনা ও পরামর্শ করুন। বিনিয়োগ কোনো ভয়ের বিষয় নয়। কী বিষয়ে বিনিয়োগ করতে চাইছেন তা পরিবারের মানুষের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করুন।

বিনিয়োগের লক্ষ্য

নিঃসন্দেহে প্রত্যেক বিনিয়োগকারীরই আলাদা আলাদা লক্ষ্য থাকে। আপনি যত অধ্যয়ন করবেন তত বেশি লক্ষ্য খুঁজে পাবেন। কিন্তু সামনে এগোবার জন্য আপনার অবশ্যই একটি প্রধান লক্ষ্য থাকা চাই। এক দশক ধরে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আমি কিছু টাকা পয়সা কামিয়েছি। তারপর আমি সেসব অর্থ ব্যায় করেছি কিছু ভিন্ন ভিন্ন বিনিয়োগ খাতে। আমার অবসরের সময় আমি চাইব আমার কিছু নগদ টাকা থাকুক, যাতে আমার বিনিয়োগ বিক্রি ছাড়াই বেঁচে থাকতে পারি।

সুতরাং বুঝতেই পারছেন, বিনিয়োগের প্রথম অংশের নাম কঠোর পরিশ্রম। ধনী মানুষরা কখনো তাদের সম্পদ বিক্রি করে টাকা কামায় না। যদি তারা তাই করত তবে এক নাগাড়ে বেশি দিন ধনী থাকতে পারত না। তারা দিনের পর দিন ধনী থাকেন কারণ তারা তাদের সম্পদকে কাজে লাগিয়ে অর্থ উপার্জন করেন।

কোথায় বিনিয়োগ করা উচিত

বেশিরভাগ মানুষই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে থাকেন। এটা আসলে নির্ভর করে আপনার পছন্দের ওপর। কেউ কেউ অবশ্য বসতি বাণিজ্যেও (রিয়েল স্টেট) বিনিয়োগ করে থাকেন। ইদানিং বন্ধকী ব্যবসা (মর্টগেজ), ক্রেডিট কার্ড, শিক্ষা লোন ইত্যাদি খাতেও বিনিয়োগ করছেন কেউ কেউ। আপনি যে খাতেই বিনিয়োগ করুন না কেন, সবার আগে সেই বিষয়ে আপনার আগ্রহ এবং জানার পরিধি কতটুকু সে ব্যাপারে নিশ্চিত হোন। তারপর বিনিয়োগ করুন।

সঞ্চয় ও বিনিয়োগের পার্থক্য কী

কোনো খাতে বিনিয়োগ করার আগে সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মধ্যে পার্থক্য জানুন। যদি আপনার শেয়ার বাজারে ধস নামে তখন আপনি কী করবেন, যদি আপনার কোনো সঞ্চয় না থাকে? অতএব, বিনিয়োগের পাশাপাশি সঞ্চয় করুন। ব্যবসায় খারাপ সময় আসবেই, কিন্তু দুঃসময়ে কখনোই বিনিযোগ ভাঙবেন না।

বিনিয়োগের বিদ্যা

শেখার কোনো শেষ নেই। আপনি যত বড় বিনিয়োগকারীই হোন না কেন, আপনাকে প্রতিদিন কিছু না কিছু শিখতে হবে। এ পর্যন্ত জগতে যারা সফল বিনিয়োগকারী হয়েছেন তারা কখনো শেখা থামাননি। সফল বিনিয়োগকারী হতে হলে সবার আগে প্রয়োজন আত্মবিশ্বাস। আর অত্মবিশ্বাস বাড়ায় বই। আপনাকে বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রচুর বই পড়তে হবে। আপনি নিশ্চয় জানেন, ওয়ারেন বাফেট তার বার্ষিক পত্রে তার শেয়ার হোল্ডারদের বই পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

দ্য স্ট্রিট অবলম্বনে।

Sharing is caring!

Leave a Comment