বৃত্তি নিয়ে এমআইটিতে তাফসিয়া
- ক্যাম্পাস ডেস্ক
বাংলাদেশি অভিবাসী পরিবারের মেয়ে তাফসিয়া শিকদার। তারা যুক্তরাজ্যে বসবাসরত একটি নিম্ন আয়ের পরিবার। নানা প্রতিকূলতা কাটিয়ে তাফসিয়া শিকদার যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) অধ্যয়নের সুযোগ পেয়েছেন। বোস্টনভিত্তিক এমআইটিতে তাফসিয়া প্রকৌশল ও পদার্থবিজ্ঞানে পড়াশোনা করবেন।
১৯৯০ সালে তাফসিয়ার পরিবার বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে চলে যান। তাফসিয়ার বাবা মাহমুদ শিকদার একজন আইটি সাপোর্ট কর্মী এবং মা লায়লা সুলতানা গৃহিণী। তাফসিয়ার তিন ভাই আছে। পরিবারে আয় খুব কম হওয়ায় তাফসিয়া এমআইটির বৃত্তি পাচ্ছেন। তাফসিয়াকে মোট ২ লাখ মার্কিন ডলারের শিক্ষাবৃত্তি দেবে এমআইটি।
এমআইটিতে বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন বাজ অলড্রিন। যিনি ইতিহাসে চাঁদে যাওয়া দ্বিতীয় মানুষ হিসেবে খ্যাত। স্নাতকোত্তরের পর অলড্রিন ১৯৬৩ সালে এমআইটি থেকে নভোবিজ্ঞানে ডক্টরেট ডিগ্রি পান। সেই প্রতিষ্ঠানে এখন চন্দ্রমানব অলড্রিনের সেই পদাঙ্কই অনুসরণ করতে যাচ্ছেন তাফসিয়া। তার ভাষায়, ‘এমআইটির জন্য নির্বাচিত হওয়ার অনুভূতি ছিল যেন চাঁদে চলে যাওয়ার মতোই! এটা অনেক বড় স্বপ্নপূরণ!’
এমআইটি বিশ্বের সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর একটি। র্যাংকিংয়ের দিক থেকে বিশ্বের সেরা ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে এটি। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছেন অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি। তাফসিয়া তাদের প্রত্যেককেই অনুসরণ করতে চান। তিনি বলেন, ‘বিখ্যাত ব্যক্তিদের জীবনী অনুপ্রেরণার উৎস। এটা অনেক আত্মবিশ্বাসও জোগায়।’ তিনি আরও জানান, পরিবেশগত বিষয় নিয়ে কাজ করার আগ্রহ রয়েছে তার। আর দীর্ঘদিন ধরেই নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত নিয়ে কাজ করার ইচ্ছাও আছে। কলেজজীবনেই তাফসিয়া জাপানের নাগোয়া শহরে পরিবেশবিষয়ক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছেন।
তাফসিয়া বর্তমানে ইস্ট লন্ডনের নিউহাম কলেজিয়েট সিক্সথ ফর্ম সেন্টারে পড়াশোনা করছেন। গণিত, উচ্চতর গণিত, পদার্থ, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান বিষয়ে ‘এ’ লেভেল পরীক্ষা দেবেন তিনি। তিনি বলেন, ‘যে যে বিষয়ে কাজ করতে চায়, তাকে সে বিষয়ে ভালোভাবে পড়াশোনা করতে হবে। সাফল্যের জন্য এটাই সবচেয়ে বড় কথা। এমআইটির পক্ষ থেকে ভর্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে তাফসিয়াকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাছাই প্রক্রিয়ায় ইনস্টিটিউটের ইতিহাসে আপনি সবচেয়ে প্রতিভাবান ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের একজন। এমআইটি মনে করে আপনি ও এমআইটির সেতুবন্ধন হবে দারুণ।’
এর আগে একবার সমস্যা সমাধানে অনন্য দক্ষতার কারণে ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটির উইম্যান ইন এসটিইএম সামার স্কুল-এ নির্বাচিত হন তাফসিয়া। তখন প্রাক-বাছাইয়ে পদার্থ বিজ্ঞানে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিলেন তিনি।
বাংলাদেশি অভিবাসী পরিবারের এই মেয়ে ভবিষ্যতে আরও অনেকের অনুপ্রেরণার উৎস হতে যাচ্ছেন। এমআইটিতে স্থান করে নেওয়ার পর নিশ্চয় নিজের মেধা দিয়ে তিনি আরও অনেককিছু জয় করে নেবেন, এটাই প্রত্যাশা।