জাপানে উচ্চ শিক্ষার হাতছানি
-
রাজীব বিশ্বাস
উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে থাকে জাপান। উন্নত গবেষণার অন্যতম তীর্থস্থান হিসেবে জাপানকে বিবেচনা করা হয়। জাপানে রয়েছে বিশ্বমানের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী পড়তে আসে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু জাপান বাংলাদেশের তুলনায় অনেক ব্যয়বহুল, তাই স্কলারশিপের কোনো বিকল্প নেই। যদিও বাংলাদেশ থেকেও অনেক শিক্ষার্থী জাপানে পড়তে আসে কিন্তু একটু সচেষ্ট হলেই এই সংখ্যা অনেকগুণ বাড়িয়ে নেওয়া যায়।
জাপান সরকারের মনবু-কাগাকু-শো (MEXT) পৃথিবীর অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ শিক্ষাবৃত্তি। ১৯৫৪ সনে জাপান সরকার এই শিক্ষাবৃত্তি প্রতিষ্ঠা করে। আজ পর্যন্ত প্রায় ৬৫,০০০ শিক্ষার্থী এই বৃত্তি নিয়ে জাপানে পড়াশুনা করেছে। এই বৃত্তির আওতায় একজন শিক্ষার্থী প্রতিমাসে পাবেন ১,৪৭,০০০ ইয়েন এবং সাথে বাংলাদেশ থেকে জাপানে আসা-যাওয়ার বিমান টিকেট। দু’ভাবে এই বৃত্তি অর্জন করা সম্ভব। প্রথমত, বাংলাদেশে জাপানি দূতাবাসের সুপারিশ অনুযায়ী এবং দ্বিতীয়ত, জাপানি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপারিশের প্রেক্ষিতে। জাপানি দূতাবাস প্রতিবছর নির্দিষ্ট সংখ্যক বৃত্তি প্রদান করে থাকে। প্রতি বছর এপ্রিল মাসে শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারে। দুইটি ওয়েবসাইটে (www.moedu.gov.bd এবং www.bd.emb-japan.go.jp) এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়।
প্রথমে লিখিত পরীক্ষা এবং পরবর্তীতে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে তারা প্রার্থী নির্বাচন করে থাকে। তবে নির্দিষ্ট সংখ্যক বৃত্তি হওয়ার কারণে এই উপায়টি তীব্র প্রতিযোগিতামূলক। বরং দ্বিতীয় উপায়ে এই বৃত্তি অর্জন করা তুলনামূলক সহজ। এক্ষেত্রে আপনাকে জাপানি প্রফেসরকে লিখতে হবে। প্রফেসরকে রাজি করানোর জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করলে সফলতার সম্ভাবনা বেশি। প্রথমে আপনি যে বিষয়ে গবেষণা করতে আগ্রহী ঐ বিষয়ে প্রফেসরদের একটি তালিকা তৈরি করতে হবে। এরপর ঐ প্রফেসরদের প্রোফাইল ভালো করে ঘেটে তাদের সম্বন্ধে ভালোভাবে জানতে হবে। তাদের বিস্তারিত ই-মেইল করতে হবে যাতে তারা বুঝতে পারে তাদের গবেষণায় আপনার অপার আগ্রহ এবং কিছুটা দখল রয়েছে। ই-মেইলে আপনার প্রোফাইল খুব ভালোভাবে তুলে ধরতে হবে। মেইল করার আগে ব্যাচেলর কোর্সে কোনো রিসার্চ থাকলে সেটা প্রকাশনার চেষ্টা করতে হবে এবং আইএলটিএস পরীক্ষা দিয়ে রাখা ভালো।
প্রফেসরদের সুপারিশ পেয়ে গেলে এই বৃত্তি অর্জন করা খুবই সহজ। মনবু-কাগাকু-শো বৃত্তি ছাড়াও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংক উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বৃত্তি প্রদান করে থাকে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের বৃত্তির ক্ষেত্রে প্রার্থীর দুই বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকা বাধ্যতামূলক। তবে এই বৃত্তিগুলোর সুযোগ-সুবিধা মেক্সট এর থেকে কিছুটা বেশি হয়ে থাকে। তো আর দেরি কেন, সবাই শুরু করে দিন ইমেইল করা। সবার জন্য শুভ কামনা।
লেখক : শিক্ষার্থী, টোকিও ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, জাপান