নারীদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের হার বাড়ছে
- নিউজ ডেস্ক
দক্ষিণ এশিয়ায় নারীদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের হার ধীরে ধীরে বাড়ছে। অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের ফলে পরিবারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। তবে নারীর পূর্ণ ক্ষমতায়ন নিশ্চিতে বাল্যবিবাহ, চলাচলে নিয়ন্ত্রণ, পরিবারে লিঙ্গবৈষম্য ও রক্ষণশীল মানসিকতা এখনো বাধা হিসেবে কাজ করছে।
গতকাল শনিবার এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে এক গবেষণা সেমিনারে এসব কথা বলা হয়। পরিবারে নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের অবস্থান সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়টির করা এক গবেষণার ওপর সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গবেষণায় পাওয়া বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ভারুনি গনেপলা, ফাহিম হোসেইন ও মো. শহীদুল্লাহ কায়সার। সেমিনারে প্যানেল অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আফগানিস্তানের সমাজসেবক আনিতা হায়দারী ও সীমা ঘানি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সোনিয়া হক, মানবাধিকারকর্মী হুমায়রা আজিজ, ভারতের অধ্যাপক জানকি শ্রীনিবাসন, কিন্নেরা মুরথি, পাকিস্তানের নারী অধিকার আন্দোলন নেত্রী নিঘাত দাদ, কাওসার খান প্রমুখ। সেমিনারে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের গবেষণা স্টাডির সমন্বয়ক মাশিয়াত মোস্তফা।
সেমিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ১১১টি পরিবারের ৩০৭ জন সদস্য ও স্বতন্ত্র ৩ হাজার নারী-পুরুষের সাক্ষাৎকার নিয়ে গবেষণাটি করা হয়েছে। এতে নারীর শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের বিষয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের মতামত, কর্মজীবী নারীদের অভিজ্ঞতার বিষয় উঠে এসেছে।
সেমিনারে চার দেশের নারীদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, বাংলাদেশে নারীদের শিক্ষার বিষয়ে প্রায় প্রতিটি পরিবারে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। মুসলিমপ্রধান দেশ হওয়া সত্ত্বেও নারীদের চাকরির ক্ষেত্রে ধর্ম তেমন কোনো প্রভাব ফেলছে না। তবে অবস্থাপন্ন অনেক পরিবারেই নারীরা চাকরি করার অনুমতি পাচ্ছেন না। এ ছাড়া চাকরির ক্ষেত্রে নারীদের পিছিয়ে থাকার পেছনে ঘুষ দিতে না পারা কিংবা তদবিরের জোর না থাকাও একটি কারণ। আফগানিস্তানে তালেবান শাসনের সময় নারীরা শিক্ষা ও কাজের সুযোগ পাননি। তবে এখন অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হচ্ছে। আফগানিস্তানে পরিবারগুলো নারীদের শিক্ষার পেছনে এখনো বিনিয়োগ করতে আগ্রহী নয়। এ ছাড়া ভারত ও পাকিস্তানেও নারী নির্যাতন ও কুসংস্কার নারীর শিক্ষা ও ক্ষমতায়নে বাধা হিসেবে কাজ করছে।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, এ দেশগুলোতে সরকার ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা নারীদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য কাজ করছে। নারীর কর্মসংস্থানের কারণে পরিবারগুলোতে আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য যোগ হচ্ছে। তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীরা এখনো পুরুষের সমান সুযোগ পাচ্ছেন না। অনেক পরিবারেই নারীর চাকরি করা নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে। এ ছাড়া চাকরি ও সংসার দুটোকে একসঙ্গে সামলানোর জন্য নারীরা শিক্ষকতাকে সবচেয়ে ভালো পেশা মনে করছেন। নারীদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পরিবারগুলোকে আরও ইতিবাচক করে তুলতে হবে।