দেশেই তৈরি হচ্ছে ড্রোন
- নিউজ ডেস্ক
দেশে অন্তর্জাতিক মানের ড্রোন তৈরি হচ্ছে। খেলনা থেকে অত্যাধুনিক সব ধরনের ড্রোন বানানো হচ্ছে। এসব ড্রোনে রয়েছে বিভিন্ন মানের ক্যামেরা, সেন্সর ও সফটওয়ার। বিদেশ থেকে যন্ত্রাংশ এনে সংযোজন করা হচ্ছে দেশে। উড়তে সক্ষম এসব ড্রোনে ক্যামেরা সংযোজন করে নাটক-সিনেমা ও বিজ্ঞাপনের শুটিং, সেলফি, রাস্তার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, শস্যক্ষেতে পোকামাকড় নজরদারী, পরীক্ষার নকল রোধসহ অনেক কাজে ব্যবহার সম্ভব হবে।
ড্রোন তৈরি করছে এমন একটি প্রতিষ্ঠান এমএমআরসি টেকনোলজি লি.-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মারুফ ইসলাম বলেন, উন্নত দেশগুলো ড্রোন সেক্টরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কিছু প্রতিবন্ধকতার কারণে দেশে এ খাত উন্নতি হচ্ছে না। বর্তমানে প্রত্যেক দিন কেউ না কেউ কোনো না কোনো জায়গায় ড্রোন উড়াচ্ছে। আমরা চাই ড্রোনের বিষয়ে সরকারের অবহিত থাকা দরকার। এর নিয়ন্ত্রণ সরকারের কাছে থাকা দরকার। সরকারের পৃষ্টপোষকতা পাওয়া গেলে এ খাত শিল্পে রূপ নিতে পারবে। প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রাও আয় হবে। কর্মসংস্থান তৈরি হবে অনেকের।
সরেজমিন রাজধানীর সাইন্সল্যাব সুবাস্তু মার্কেটের ৮ম তলায় গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে ড্রোন তৈরির কাজ হচ্ছে। বিভিন্ন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের ড্রোন একাডেমিক প্রকল্পের জন্য তৈরি বা মেরামতের জন্য সেখানে আসছে। ড্রোন তৈরির সঙ্গে জড়িত প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টেলিভিশন চ্যানেলের স্পট থেকে সরাসরি সম্প্রচার, রোগীর জন্য নির্ধারিত সময়ে ওষুধ আনা-নেয়ার কাজেও এর ব্যবহার করা যেতে পারে। তাদের মতে, থাইল্যান্ডে ঘরে ঘরে তৈরি হচ্ছে ড্রোন। এই শিল্প আমেরিকা ও ইউরোপের বাজার দখল করে নিয়েছে।
এদিকে নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, বুয়েটসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী বিভাগের শিক্ষার্থী এমনকি অপেশাদার ব্যক্তিরাও ড্রোন তৈরি করছে। সারা বিশ্বে দিন দিন এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এটি ব্যবহার করে দুঃসাধ্য জিনিসকে সহজতর করা হচ্ছে। আমাদের দেশেও এটি ব্যবহার ও আমদানি হোক। তবে কে আমদানি করছে, কেন আমদানি হচ্ছে, কোথায় ব্যবহার হবে, সে সম্পর্কিত নিয়ম-কানুন জানা থাকা দরকার।
জানা গেছে, সিভিল এভিয়েশন ড্রোন উড়ানোর বিভিন্ন ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে সম্প্রতি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। ড্রোন বৈধ ভাবে উড়ানোর জন্য সিভিল এভিয়েশন অথরিটি থেকে রেজিস্ট্রশন বা লাইসেন্স করতে হবে। আর এই রেজিট্রেশন বা লাইসেন্স করতে কোনো টাকা খরচ করতে হবে না। এছাড়া নীতিমালায় বলা আছে, বিমানবন্দরের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে উড়ানো যাবে না। ভিআইপি স্থাপনার উপরে উড়ানো যাবে না। ১৮ বছরের নিচে কেউ ড্রোন উড়াতে পারবে না। আর পাঁচ কেজি ওজনের বেশি এমন ড্রোন উড়ানো যাবে না।
এ প্রসঙ্গে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি পরামর্শক তারেক সিরাজ যুগান্তরকে বলেন, অনুমতি ছাড়া অবৈধ ভাবে ড্রোন কেউ উড়াতে পারবে না। এর জন্য সিভিল এভিয়েশন অথরিটির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। আর এই ড্রোন উড়ানোর নীতিমালা সংস্থাটির ওয়েবসাইটে দেয়া আছে। চাইলেই যে কেউ এই নীতিমাল ডাইনলোড করে দেখতে পারবে। এছাড়া সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাণিজ্যিক ভাবে বানানো শুরু হয় ২০১২ সালে। এর মধ্যে ঢাকাতে বেশি তৈরি হচ্ছে। ড্রোনগুলো মূলত প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ অনেকেই শখের বসে তৈরি করছে। আর এই খাতে বিনিয়োগের পরিমাণও অনেক।