নতুন এমপিও নীতিমালা : পদোন্নতির সুযোগ বাড়ল শিক্ষকদের
- সংবাদ ডেস্ক
দেশের বেসরকারি স্কুল ও কলেজের শিক্ষকেরা আগের চেয়ে বেশি সংখ্যায় পদোন্নতি পাবেন। তবে উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও উচ্চমাধ্যমিক কলেজে সহকারী অধ্যাপকের পদ থাকবে না। পদটি জ্যেষ্ঠ প্রভাষক হিসেবে পরিবর্তিত হবে।
এ রকম কিছু বিধান যুক্ত করে রোববার নতুন ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ) জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১’ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর আগে ২০১৮ সালে এ নীতিমালা করা হয়েছিল।
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, যুদ্ধাপরাধী বা ফৌজদারি অপরাধে দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নামে থাকা প্রতিষ্ঠান বা নেতিবাচক নামের কারণে সমাজে প্রভাব পড়তে পারে, এ রকম কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত (বেতন বাবদ সরকারি অনুদান) হতে পারবে না। ভাড়াবাড়িতে পরিচালিত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও এমপিওভুক্তির সুবিধা পাবে না।
শিক্ষকদের পদোন্নতি নিয়ে নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, স্কুল অ্যান্ড কলেজ বা উচ্চমাধ্যমিক কলেজে এমপিওভুক্ত প্রভাষকেরা এমপিওভুক্তির তারিখ থেকে পরবর্তী আট বছর সন্তোষজনকভাবে চাকরি করলে প্রভাষক বা জ্যেষ্ঠ প্রভাষকের মোট পদের অর্ধেক (৫০ শতাংশ) ‘জ্যেষ্ঠ প্রভাষক’ পদে পদোন্নতি পাবেন। অন্য শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির ১০ বছর পূর্তিতে বেতনস্কেলে এক ধাপ উন্নতি (গ্রেড ৯ থেকে ৮) হবে এবং পরবর্তী ছয় বছরের মধ্যে, অর্থাৎ এমপিওভুক্তির ১৬ বছর পূর্তিতে তাঁরাও ‘জ্যেষ্ঠ প্রভাষক’ পদে পদোন্নতি পাবেন। বিভিন্ন যোগ্যতা বিবেচনায় মোট ১০০ নম্বরের সূচকের ভিত্তিতে কমিটির মাধ্যমে পদোন্নতির বিষয়টি ঠিক করা হবে।
২০১৮ সালের নীতিমালা অনুযায়ী, এত দিন ৫:২ অনুপাতে এ পদোন্নতি দেওয়া হতো। অর্থাৎ, পদ সাতটি হলে দুজন পদোন্নতি পেতেন।
নতুন নীতিমালায় উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত সহকারী অধ্যাপকের পদ বাতিল করা হলেও আগে যাঁরা এই পদ পেয়েছেন, তা বহাল থাকবে। এ ছাড়া ডিগ্রি কলেজের ক্ষেত্রেও সহকারী অধ্যাপক পদ থাকবে। ডিগ্রিতেও প্রভাষক পদে আট বছর পূর্তিতে মোট পদের অর্ধেক প্রভাষক পদোন্নতি পেয়ে সহকারী অধ্যাপক হবেন। অন্যদিকে নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও শিক্ষকেরা বিএড বা সমমানের ডিগ্রির জন্য বেতনস্কেলের ১০তম গ্রেডপ্রাপ্ত হবেন।
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের কোনো প্রতিষ্ঠানে পদ শূন্য থাকলে সমপদে বা সমস্কেলে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় নীতিমালা করে আদেশ জারি করতে পারবে।
এর ব্যাখ্যায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বিশেষ পরিস্থিতিতে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রাখতে এটি করার কথা বলা হয়েছে। তবে এর অর্থ এই নয় যে বেসরকারি শিক্ষকেরা ঢালাও বদলির সুযোগ পাবেন।
নীতিমালায় শিক্ষক-কর্মচারীদের মূল বেতন বা উৎসব ভাতা বা বৈশাখী ভাতার নির্ধারিত অংশ সরকারের সর্বশেষ বেতন স্কেলের সঙ্গে বা সরকারের নির্দেশনার সঙ্গে মিল রেখে ঠিক করতে বলা হয়েছে। কিন্তু বিষয়টিকে কোনো কোনো শিক্ষকনেতা পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা হিসেবে উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন।
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুজন কর্মকর্তা বলেন, এখানে পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতার কথা বলা হয়নি। নির্ধারিত অংশের কথা স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। এখানে বিভ্রান্তির কিছু নেই।
সূত্র: প্রথম আলো