দিনভর কর্মক্ষম থাকুন

দিনভর কর্মক্ষম থাকুন

রবিউল কমল : সবাই চায় সারাদিন কর্মক্ষম থাকতে। কিন্তু সেটি তো আর সব সময় সম্ভব নয়। কারণ সারাদিনের ক্লান্তি ভর করে আপনার উপর। তবে আপনি চাইলে এই ক্লান্তিকে বিদায় বলে সারাদিন উদ্যোমের সাথে কাজ করতে পারবেন। সেজন্য অবশ্য আপনার দৈনন্দিন রুটিনে কিছু জিনিস নতুন করে যোগ করতে হবে। সেগুলো কি হতে পারে আসুন তা জেনে নেই।


১। ঘুম:

ঘুমকে অবহেলা করা যাবে না। তাই প্রয়োজন মত ঘুমান। প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য দৈনিক ৭-৮ ঘন্টার ঘুমই যথেষ্ট। ঘুমাতে যাবার জন্য আদর্শ সময় হলো রাত ১০টা। এ সময় ঘুমালে লাভ হচ্ছে আমাদের দেহের গ্রোথ বা বৃদ্ধির জন্য নিয়োজিত হরমোন রাত ১১ থেকে রাত ১ টার মাঝে নিঃসৃত হয় যা ঘুমের সময় দেহের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে।

২। সকালের খাবার:

সকাল আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। সকালে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার খেতে হবে। কেননা এটা সমগ্র দিন চলার গ্যাসোলিনের যোগান দেবে। তাই ক্ষুধা না লাগলেও সকালে খাওয়ার চেষ্টা করুন। এক গবেষণা থেকে দেখা যায় সকালে পর্যাপ্ত খেলে আমাদের স্ট্রেস হরমোন বা করটিসলের নিঃসরণকে বাধাগ্রস্ত করে যার ফলে স্ট্রেস বা ক্লান্তি কম আসে। তাই সকালের খাবারকে একদম অবহেলা করা চলবে না।

৩। আঁশযুক্ত খাবার:

সারাদিনেরে আহারে ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম আঁশ যুক্ত খাবার থাকা উচিত। কারণ খাবারে আঁশ থাকলে তা শর্করার শোষণে দেরী করায় শর্করা দ্রুতগতিতে রক্তে প্রবেশ করতে পারে না। যা একজন ডায়াবেটিস রোগীর জন্যও খুবই দরকারী। বরবটি, সজনা, ঢেঁড়স ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণ আঁশ থাকে তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় এসব রাখা যেতে পারে। এছাড়া আপেল, জামরুল, পেয়ারা ইতাদি ফলেও আঁশ থাকে।

৪। খাবারের নিয়ম:

কম খান তবে তা নিয়মিত খান। আবার একবারে বেশি করে না খেয়ে কম করে বার বার খেতে পারেন। কারণ একবারে অধিক খাবার খেলে সেটা হজম করতে দেহের অনেক শক্তি প্রয়োজন পড়ে আর সে কারণেই ভুরিভোজের পরে আমরা ক্লান্তি অনুভব করি। প্রধান তিন আহারের পরিমাণ মাঝারি রেখে তার মাঝে মাঝে ২ বার হালকা কিছু খেয়ে নিন। তাহলে ক্লান্তি আপনাকে গ্রাস করতে পারবে না।

৫। পানি:

বেশি বেশি পানি পান করুন। পানি রক্তকে তরল রাখে এবং দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোকে সতেজ রাখে। পানির অভাবে রক্ত ঘন হয়ে যায় আর ঘন রক্ত সারা শরীরে সঞ্চালন করতে ফুসফুসের অনেক বেশি কাজ করতে হয়। ফলে আমরাও হয়ে পড়ি ক্লান্ত। তাই বেশি বেশি পানি পান করুন তাহলে ক্লান্তি কম আসবে।

৬। কফি:

ক্লান্তি এড়াতে কফির জুড়ি নেই। ১ বা ২ কাপ কফি হলেই চলে যায় সারা পার করে দিতে পারে অনেকে। আগামীকাল ভাইভা পরীক্ষা, অনেক পড়া বাকি, সারারাত জাগতে হবে, এমন অবস্থায় গরম এক মগ কফি খুব কাজে দেয়। তবে ঘুমানোর আগে এসব পানীয় পান করলে কিন্তু ঘুম নষ্ট হবে। তাই সময় বুঝে কফি পান করুন এবং ক্লান্তিকে না বলুন।

৭। গোসল:

সতেজ থাকতে ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করা বেশ উপকারী। গোসল মন উৎফুল্ল করে আর চোখের ঘুম তাড়ায় তাই খুব ক্লান্তি এলে মুখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিতে পারেন। কিছুটা হলেও ক্লান্তি দূর হবে।

৮। হাঁটা বা ব্যায়াম:

খুব ক্লান্ত লাগলে কিছুটা হেটে নিতে পারেন অথবা শরীর চর্চা করতে পারেন । গবেষকদের দাবি ক্লান্তি দূর করতে শরীর চর্চার ভালো ভূমিকা রয়েছে। শরীর চর্চা করলে শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়, হৃদয়ের গতি বাড়ে, শ্বাসপ্রশ্বাসের সাথে দ্রুত অক্সিজেন প্রবেশ করে।

৯। গান শোনা:

গানের সুর মনে এনে দেয় প্রশান্তি, আনন্দময় অনুভূতি। দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে গান বেশ ভালো টনিকের কাজ করে।

সারাদিনের কাজে মানুষের ক্লান্তি বা দুর্বলতা আসবেই। এটা স্বাভাবিক। তবে আমরা একটু নিয়ম মেনে চললে সারাদিনে ক্লান্তির পরিমাণ কিছু হলেও কমাতে পারবো।

রচনা: রবিউল কমল
মডেল: সজল
ফটোগ্রাফি: এস এম রাসেল favicon

Sharing is caring!

Leave a Comment