আনারসের গুণাগুণ

আনারসের গুণাগুণ

রবিউল কমল: বর্তমানে প্রায় সব ঋতুতেই আনারস পাওয়া যায়। বাজারে আনারসের যে বিপুল সরবরাহ রয়েছে তার বেশির ভাগই আসে পাহাড়ি অঞ্চল থেকে। জাত, উৎপাদনের স্থান এবং জলবায়ুগত কারণে আনারসের পুষ্টিমানের কিছুটা তারতম্য হয়ে থাকে। তবে টক-মিষ্টি দুই ধরনের আনারসই স্বাদের দিক থেকে অতুলনীয়।


 

আনারসের কিছু পুষ্টিগুণ:

  • আনারসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় জিহ্বা, জিহ্বার নিচের তালু, দাঁত ও মাড়ির যে কোনো অসুখের বিরুদ্ধে এটি প্রতিরোধক বা অ্যান্টিবায়োটিকের ভূমিকা পালন করে।
  • এক পরিসংখ্যান মতে, বর্তমান বাংলাদেশে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১৩-১৫ লাখ। প্রতি বছর এর সাথে যোগ হচ্ছে প্রায় ২ লাখ নতুন রোগী। এই ক্যান্সার নিরাময় অত্যান্ত ব্যায়বহুল আর অনিশ্চিত। তবে আপনার হাতের কাছে থাকা সহজলভ্য ফল আনারস ক্যান্সার নিরাময়ে অত্যান্ত উপকারী। ব্রেস্ট, ফুসফুস, কোলন ও স্কিন ক্যান্সার প্রতিরোধে আনারস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা ডাক্তারদের দ্বারা স্বীকৃত।
  • আনারসে ভিটামিন এ, বি, সি, ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান থাকায় মানকদেহে রক্ত সঞ্চালনের ত্বরান্বিত করে।
  • আনারসে ব্যথানাশক উপাদান থাকে, যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ব্যাথানাশে প্রাকৃতিক ডাক্তারের মত কাজ করে।
  • আনারসে মানবদেহের জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্রোমেলেইন এনজাইম আছে, যা পরিপাকে সাহায্য করে পেটের অসুখ দমন করে।
  • উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যায় জর্জরিত অনেক মধ্য বয়সী মানুষ। তাদের জন্য আনারস হতে পারে অত্যান্ত ফলদায়ক পথ্য। কারণ শরীরের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনারস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • আনারস ঠাণ্ডা, জ্বর ও সর্দি ভাব দূর করতে সহায়তা করে।
  • আনারসকে কৃমিনাশক ফল বলা হয়। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে আনারস খেলে সকল প্রকার কৃমি দূর হয়।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য ও ‘মর্নিং সিকনেস’ অর্থাৎ সকালের দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে আনারস।
  • ক্ষুদ্রান্ত্রের জীবাণু ধ্বংসে আনারস অত্যন্ত উপকারী।
  • আনারসে প্রচুর পরিমাণে ‘ম্যাঙ্গানিজ’ নামক খনিজ উপাদান রয়েছে যা মানবদেহের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

তথ্যচিত্রে একটি আনারস:

দেশি জাতের একটি আনারসে সাধারণত যেসব পুষ্টি উপাদান থাকে:

  • জলীয় অংশ ——————————– ৮৯.৩ গ্রাম
  • মোট খনিজ পদার্থ ————————- ০.৩ গ্রাম
  • আমিষ ————————————- ১ গ্রাম
  • শর্করা ————————————– ৯.৩ গ্রাম
  • ক্যালসিয়াম ——————————— ১৭ গ্রাম
  • আয়রন ————————————- ১.২ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন বি-১ —————————— ০.১৭ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন বি-২ —————————— ০.০৫ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন সি ——————————– ২৬ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন এ ——————————— ২১৩৩ আইইউ
  • খাদ্যশক্তি ———————————– ৪২ কিলোক্যালরি।

প্রবাদে আছে চিকিৎসার চাইতে রোগ প্রতিরোধই উত্তম। তাই অসুস্থ হয়ে বাজারের কৃত্রিম ঔষধ সেবন না করে ভেষজ গুণ সমৃদ্ধ এসব দেশি ফল খান এবং নিজেকে সুস্থ রাখুন।

আইসটুডে এবং গবেষণা অবলম্বনে রবিউল কমলfavicon

Sharing is caring!

Leave a Comment