অতিবেগুনি রশ্মি থেকে বাঁচার উপায়

অতিবেগুনি রশ্মি থেকে বাঁচার উপায়

  • ডা. মাসুদা খাতুন

আমাদের দেশ বিষুবরেখার কাছাকাছি হওয়ায় সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি (আলট্রা ভায়োলেট রে অথবা রশ্মি এ ও বি) বেশি আসে। এই রশ্মি সাধারণত সকাল নয়টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত বেশি ছড়ায়। অন্যভাবে হিসাব করলে, যখন নিজের ছায়া নিজের চেয়ে ছোট থাকে—এমন সময় এই রশ্মি পৃথিবীতে বেশি আসে। এই অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি ত্বকের ওপর পড়লে নানা রকম ক্ষতি হতে পারে।

এই সূর্যরশ্মি কতটুকু ক্ষতিকর হবে, তা নির্ভর করে ত্বকের বর্ণের ওপর। ত্বকে ইউ মেলানিন বা তামাটে মেলানিনের মাত্রা বেশি বলে ক্ষতির পরিমাণ কম হয়। আর যাদের ইয়েলো মেলানিন বেশি, যেমন অস্ট্রেলীয় বা পাশ্চাত্যের অনেক দেশে ত্বকের এই ফটোপ্রোটেকশন ক্ষমতা কম। ফলে ত্বকের বিশেষ ক্ষতিও হয়ে থাকে। তাই তাদের ত্বকের ক্যানসার খুব বেশি হয়ে থাকে।

ক্যানসার ছাড়াও সূর্যের সরাসরি আলো ত্বকের আরও কিছু ক্ষতি করতে পারে। অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি ত্বকের ওপর পড়লে ত্বকের নিচের কিছু কোষ ভেঙে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ধীরে ধীরে ত্বকের টান টান ভাব নষ্ট হয়। যাঁরা সূর্যের আলোতে বেশি কাজ করেন, তাঁদের ত্বক কুঁচকে যায়, বলিরেখা পড়ে এবং দ্রুত বুড়িয়ে যায়। ত্বক দ্রুত আর্দ্রতা হারায়, তিল, মেছতা, ডার্ক স্পট ইত্যাদির কারণ হতে পারে এই অতিবেগুনি রশ্মি।

অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা কীভাবে?

সকাল নয়টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত অতিবেগুনি রশ্মি বেশি আসে। এই সময় সূর্যের আলো এড়িয়ে চলা। আর যাঁদের এ সময় বেরোতেই হয় বা হবে, তাঁরা যেন ছাতা, বড় হ্যাট, সানগ্লাস ইত্যাদি ব্যবহার করেন। সাদা বা হালকা রঙের কাপড় অতিবেগুনি রশ্মিকে মোকাবিলা করতে সাহায্য করে। আর আঁটসাঁট ও গাঢ় বা কালো কাপড় এই রশ্মিকে বেশি করে শোষণ করে। তাই এসব কাপড় না পরাই ভালো।

ঘরের বাইরে বের হওয়ার সময় সানস্ক্রিন ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করা উচিত। গাড়ির কাচ বা বাসার জানালার কাচ অতিবেগুনি রশ্মিকে প্রতিরোধ করতে পারে না। তাই এ সময় সূর্যের আলো গায়ে লাগার আশঙ্কা থাকলে সানস্ক্রিন ক্রিম বা লোশন লাগানোই ভালো।

যাঁরা ভ্রমণপিপাসু, খোলা জায়গায় ঘোরাফেরা করেন, তাঁরা অতিবেগুনি রশ্মির সংস্পর্শে আসেন। তাঁদের ত্বকের সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। তাই বেড়াতে গেলে অবশ্যই সবাইকে ত্বকের উন্মুক্ত জায়গায় সানস্ক্রিন ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করতে হবে।

ডা. মাসুদা খাতুন : চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

সূত্র: প্রথম আলো

Sharing is caring!

Leave a Comment