করোনা বিদায় নেয়নি, ব্যায়াম জরুরি
- ইয়ামান হুসাইন রিফাত
২০২০ এর শুরুতে দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে মানুষের মধ্যে শুরু হয় বেঁচে থাকার লড়াই। ব্যাপারটা এমন হয়ে দাঁড়ায়, যে যত বেশি সুস্থ সবল, তার করোনায় মৃত্যু শঙ্কা তত কম। আর সুস্থ সবল থাকতে হলে ব্যায়ামের গুরুত্ব সবারই জানা।
করোনা মহামারীর শুরুতে লকডাউনে প্রায় সবাই ঘরবন্দি জীবন যাপন করেছে। সারাদিন বাসায় বসে থেকে অনেকেই ওজন বাড়িয়েছেন। এতে জীবন যাপনে এসেছে পরিবর্তন। তবে বর্তমানে সব আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে শুরু করায় সবাই নিজেদের কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে শুরু করেছেন। তবে অতিরিক্ত ওজন নিয়ে অনেকেই সমস্যায় পরেছেন। কাজকর্মে এসেছে স্থবিরতা। শরীরে আলসেমিও যেন জেঁকে বসেছে। সামনে শীত আসায় অনেকেই হয়তো শরীর গরম রাখার জন্য কিছুটা ব্যায়াম করার চেষ্টা করবেন। তবে নিয়মিত ব্যায়াম শরীরকে সুস্থ রাখতে অনেকটাই সহায়তা করবে।
করোনা মহামারী মানুষের জীবনকে বদলে দিয়েছে। সবাই এই মহামারী থেকে নিজেকে বাঁচাতে বদ্ধ পরিকর। তাই নিজেদের শরীরকে এই মহামারীর আক্রমণ থেকে বাঁচাতে কম বেশি সবার মধ্যেই নিজেদের সুস্থ সবল করে তোলার আগ্রহ জেগে ওঠে। বর্তমানে অনেকেই একা কিংবা দলবদ্ধ হয়ে নিজেদের সুস্থ রাখতে সকালে কিংবা বিকালে নিয়মিত হাঁটেন। অনেকে দৌড়ান, কেউ কেউ আবার সময় পেলেই ছুটে যান আশেপাশের সুইমিং পুলে। উদ্দ্যেশ্য একটাই, নিজেদের সুস্থ রাখা। ভোর হলে বা বিকালেই বিভিন্ন পার্ক কিংবা খালি মাঠে অনেককেই হাটতে কিংবা দৌড়াতে দেখা যায়। ছোট বড় সবাই প্রায় ইদানিং স্বাস্থ্য নিয়ে অনেকটা সচেতন।
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত প্যারিস বডি ফিটনেস জীমের ট্রেইনার মো. হিমেল বলেন, ‘মানুষের মধ্যে ব্যায়াম করা আর জীম নিয়ে একটু গড়িমসি দেখা যায়। অনেকেই মনে করেন জীম করলে শরীর নষ্ট হয়ে যাবে, অনেকে আবার কষ্টকর মনে করে কয়েকদিন পরেই ছেড়ে দেন। তবে শরীর সুস্থ রাখতে ব্যায়ামের গুরুত্ব অপরিসীম। আর জীম আপনাকে অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে ব্যায়াম করাকে আনন্দময় করে তোলে। সামনে শীত আসছে, আশা করি আরও অনেকেই জীমে ব্যায়াম শুরু করবেন।’
রাজধানীর একটি বেসরকারী বিশববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাইমুর বিজয় জানান, “করোনাকালে ঘরে বসে থেকে অনেকটা মোটা হয়ে গিয়েছিলাম। নিজের শরীর নিয়ে একটু খারাপ লাগতো। তাই আস্তে আস্তে দৌড়ানো শুরু করলাম এবং এর কিছুদিন পরেই জিমে যেতে শুরু করি। মাত্র দুই মাসেই শরীরে অনেকটা পরিবর্তন আনতে পেরেছি। নিজের শরীরও আগের থেকে অনেকটা সুস্থ।’’
মহামারীর আগে যারা স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন ছিলেন, তারা মহামারীকালে পড়েছেন আরেক বিড়ম্বনায়। এ প্রসঙ্গে রাজধানীর একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নেহাল জানান, ‘‘করোনার আগে নিয়মিত জীমে ব্যায়াম করতাম। দেশের বডিবিল্ডিংয়ের কয়েকটি প্রতিযোগিতায় অংশও নিয়েছি। তবে করোনার কারণে লকডাউনে সব কিছুর সাথে জিমও বন্ধ হয়ে যায়, এতে আর নিয়মিত জিমে ব্যায়াম করা হয়ে ওঠেনি। বাসায় কয়েকদিন ব্যায়াম করেছি তবে তা সেরকম কাজে দেয়নি। দীর্ঘ এই বন্ধে এখন আবার জীম শুরু করায় অনেকটা কষ্টই হচ্ছে। আবার সব প্রথম থেকে শুরু করতে হচ্ছে।’’
চিকিৎসা বিজ্ঞানীরাও বলছেন যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাদের অন্যদের তুলনায় করোনায় মৃত্যুহার অনেকটা কম। কারণ তাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যদের তুলনায় বেশি। তবে এরপরও সঠিকভাবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। কারণ করোনা সংক্রমণ হলে এটি ছোঁয়াচে হওয়ায় অন্যদের জন্যও ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই যথাযথ স্বাস্থ্য বিধি মেনে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।