জিকা ভাইরাস আতঙ্কে অনিশ্চয়তার মুখে অলিম্পিক গেমস
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এবারের অলিম্পিকের আসর বসছে ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনেইরোতে। অগাস্টের ৫ থেকে ২১ তারিখ পর্যন্ত নির্ধারিত বিশ্বের বৃহত্তম এই ক্রীড়া আয়োজনটি নিয়ে ব্রাজিলবাসীর উত্তেজনায় যেন ঠান্ডা পানি ঢেলে দিয়েছে জিকা ভাইরাস আতঙ্ক। বিষয়টি যে শুধু আতঙ্কেই সীমাবদ্ধ নেই, রীতিমতো হাড়ে-মাংসে উপস্থিত, তার নজিরও বিশ্ববাসীর সামনে। আর সেকারণেই অ্যাথলিট এবং দর্শকদের রিও অলিম্পিকে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তটিকে খুবই সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করার পরামর্শ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। অস্ট্রেলীয়, রুশ, আমেরিকান ও ব্রিটিশ ক্রীড়াদল থেকে এরই মধ্যে জানানো হয়েছে তারা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। অস্ট্রেলীয় দলের মেডিকেল ডিরেক্টর ডেভিড হিউস বলেছেন, গর্ভধারণযোগ্য যে কোনো নারীর ক্ষেত্রে এ সময়টায় দারুণ সতর্কতার দরকার আছে।
তাদের গর্ভের শিশুর মাইক্রোসেফালি আক্রান্ত হওয়া এবং গর্ভধারণের সময় জিকা ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার সমূহ আশঙ্কা থেকে যায়। সুতরাং দলের কেউ যদি অন্তঃস্বত্বা থেকে থাকেন, তাহলে সবশেষ খবর অনুযায়ী তাদের ব্রাজিল যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি খুবই সতর্কতার সঙ্গে নিতে বলা হচ্ছে।
রাশিয়ার ক্রীড়া মন্ত্রী ভিতালি মুতকো জানিয়েছেন, তাদের ক্রীড়াবিদদের জন্য সবরকম সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমেরিকা ও ব্রিটিশ ক্রীড়া কর্তৃপক্ষও গভীর উদ্বেগ ও সতর্কতার কথা জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে রিও অলিম্পিক যে একটা বড় অনিশ্চয়তায় পড়তে যাচ্ছে, তাতে সন্দেহ নেই। এদিকে ব্রাজিলীয় গবেষকরা মনে করছেন এই ভয়ানক জিকা ভাইরাস আরেকটি বড় ক্রীড়া আয়োজন ২০১৪’র বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় ব্রাজিলে এসেছে। ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত এই আসরে যে লাখ লাখ দর্শক বিভিন্ন দেশ থেকে ব্রাজিলে এসেছিল তাদের মাধ্যমেই এটি ছড়িয়েছে বলে তাদের ধারণা। বিশেষভাবে পলিনেশিয়ার কথা উল্লেখ করেছেন তারা, যেখানে সেসময় জিকা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছিল। মশাবাহিত জিকা ভাইরাসের সংক্রমণে গর্ভের শিশু মাইক্রোসেফালি নামের রোগে আক্রান্ত হয়।
ফলে অপরিণত ও ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক নিয়ে জন্ম নেয় শিশুরা। আমেরিকা মহাদেশসহ ২০টি দেশে ইতোমধ্যেই মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস, যার কেন্দ্র হিসেবে ধরা হচ্ছে ব্রাজিলকে। শুধু ব্রাজিলেই ১৫ লাখ মানুষ জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং কয়েক হাজার শিশু অপরিণত ও ক্ষুদ্র মস্তিষ্ক নিয়ে জন্ম নিয়েছে।