অস্ত্র হাতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক !
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের স্কুলে বেশ কয়েকটি জঙ্গি হামলার পর দেশটির শিক্ষকরা অস্ত্র ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। এনিয়ে বেশ বিতর্ক শুরু হলেও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছেন পাকিস্তানের স্কুল শিক্ষকরা। সংবাদ : এনডিটিভি।
পেশোয়ারের আখুনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাভিদ গুল। তিনি স্কুলে তার এম২০ পিস্তল নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা সকালের ক্লাস করছিল। গুল তার সোয়েটারের ভেতর থেকে একটি পিস্তল বের করে টেবিলের ওপর রাখলেন।এবিষয়ে গুল বলেন, ‘এটা একটি চীনা পিস্তল। খুব ভালোভাবে কাজ করে এটি।’
শুক্রবার পাকিস্তানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে জঙ্গি হামলায় ২১ জন নিহত হন। এসময় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ হামিদ হোসেন তালেবানদের সঙ্গে লড়াই করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচাতে নিজের অস্ত্র ব্যবহার করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, হামিদ হোসেন যদি তালেবানদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা না করতেন তাহলে আরো অনেকেই মারা যেতেন। এই কাজের জন্য এলাকায় ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন হামিদ। তবে সেই সুনাম বা খ্যাতি দেখে যেতে পারেননি তিনি। কেননা তালেবানদের গুলিতেই তো মারা যান শিক্ষক হামিদ। এদিকে এসময় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীও অস্ত্র নিয়ে তালেবানদের সঙ্গে যুদ্ধ করেন। তবে তিনি জীবিত আছেন।
২০১৪ সালে পেশোয়ারে স্কুলে জঙ্গি হামলায় ১৫০ জন শিক্ষার্থী নিহত হন। তখন থেকেই সরকার শিক্ষকদের স্কুলে অস্ত্র ব্যবহার করার অনুমতি দেয়। শিক্ষকদের অস্ত্র ব্যবহারের ওপর প্রশিক্ষণও দেয়া হয়।
এদিকে নিজের সঙ্গে পিস্তল রাখার বিষয়ে গুল বলেন, যদি কোনো জঙ্গি আমি থাকা অবস্থায় স্কুলে প্রবেশ করে তাহলে এই পিস্তল দিয়ে তাদের মোকাবেলা করতে পারবো। তিনি আরো বলেন, আমার শিক্ষার্থীদের এবং আমাকে রক্ষার জন্য এই অস্ত্র ব্যবহার করছি।
খায়বার প্রদেশের মুখপাত্র শাখওয়াত ইউসুফ জাই বলেন, খায়বারে ৬৮ হাজার স্কুল রয়েছে। ৫৫ হাজার পুলিশ রয়েছে। পুলিশের তুলনায় স্কুলের সংখ্যা বেশি। তাই পুলিশ দিয়ে স্কুলে নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য শিক্ষকদেরকে অস্ত্র নিয়ে স্কুলে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘হামলার হাত থেকে রক্ষা পেতে অস্ত্র ব্যবহার ক্ষতিকর কিছু নয়।’
এদিকে অবসরপ্রাপ্ত একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অস্ত্র নিয়ে যেসব শিক্ষক স্কুলে যান তাদেরকে ‘স্টুপিড’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘জঙ্গিদমনে দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ না নিয়ে এভাবে স্কুলে শিক্ষকদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়া ঠিক হবে না।’