বিশ্বভারতীর উপাচার্য বরখাস্ত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এই প্রথম ভারতে কোনো কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্যকে বরখাস্ত করা হলো। আজ (১৫ ফেব্রুয়ারি) ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় এ সংক্রান্ত আদেশ দিয়েছেন। উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তের বিরুদ্ধে অসৎ আচরণ এবং দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। কবি নিজেই এর প্রথম উপাচার্য ছিলেন।
২০১১ সালে কংগ্রেস আমলে এর উপাচার্য পদে নিয়োগ করা হয়েছিল সুশান্ত দত্তগুপ্তকে। অবসরের আগে কর্মজীবনের আর মাত্র সাত মাস মেয়াদ বাকি ছিল। কিন্তু এর আগেই রাষ্ট্রপতির নির্দেশে সরে যেতে হলো তাঁকে।
অবশ্য এর আগেই বিশ্বভারতীতে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ তুলে গত নভেম্বর মাসে সুশান্তকে বরখাস্ত করার সুপারিশ করে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, বিশ্বভারতীর উপাচার্য অবৈধভাবে ২৫ জনকে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তা ছাড়া বিশ্বভারতীর উপাচার্য হিসেবে সুশান্ত দত্তগুপ্ত বেতন নেওয়ার পাশাপাশি জহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ) থেকে তিনি পেনশন তুলেছেন নিয়মিতভাবে। শুধু তাই নয়, ব্যক্তিগত আয় করে সেই হিসাবও দাখিল করেননি তিনি।
এ ছাড়া সুশান্ত দত্তগুপ্তের মদের বিলও বিশ্বভারতীকে মেটাতে হয়েছে বলে অভিযোগ। এসব অভিযোগ জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তকে বহিষ্কার করার সুপারিশ করেছিল স্মৃতি ইরানির কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়।
তবে সুশান্ত দত্তগুপ্তকে বহিষ্কার করার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আইনি দিকগুলো খতিয়ে দেখার জন্য স্মৃতি ইরানির মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি। সেই মতো আইনগত দিকগুলো খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে ফাইলটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
এরপর গত সপ্তাহে গোটা বিষয়টি বিশ্লেষণ করে সুশান্ত দাসগুপ্তের ফাইলটি আবার কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয় আইন মন্ত্রণালয়। সেখানে বলা হয়, কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয় যা সুপারিশ করেছে তা আইনগতভাবে যুক্তিসঙ্গত। আর এর ফলে আইন মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র পাওয়ার পর আবারও উপাচার্যের ফাইলটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়। আর তারপরেই রাষ্ট্রপতি সোমবার বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তকে বরখাস্তের নির্দেশ দেন।
অবশ্য এর আগেই ২০১৫ সালের ১ অক্টোবর পদত্যাগ করেছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। সেই সময় রাষ্ট্রপতির কাছে একটি পদত্যাগপত্রও জমা দিয়েছিলেন তিনি।