‘কাউকে অনুসরণ করে সফল হওয়া যায় না’
- ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
কাউকে অনুসরণ করে কখনো সফল হওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন দেশের বিশিষ্ট শিল্পপতি এবং হা-মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান একে আজাদ। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইনোভেশন অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার আয়োজিত ‘উদ্যোক্তা উন্নয়নবিষয়ক ডিআইইউ ইন্ডাস্ট্রি একাডেমিয়া বক্তৃতামালা’ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। আজ শনিবার (৩ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়টির সিটি ক্যাম্পাস মিলনায়তনে ১২ পর্বের লোকবক্তৃতামালার পঞ্চম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
একক বক্ত্রতায় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে একে আজাদ বলেন, কাউকে অনুসরণ (ফলো) করে কখনো সফল হওয়া যায় না। সফল হতে হলে নিজের ভেতরে উদ্ভাবনী শক্তি থাকতে হয়। নতুন নতুন আইডিয়া উদ্ভাবন করো এবং তা বাস্তবায়নে কঠোর পরিশ্রম করো, সফলতা আসবেই।
নিজের সফলতার গল্প শোনাতে গিয়ে এ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বলেন, ‘গার্মেন্টস ব্যবসা শুরু করেছিলাম মাত্র ২১টি মেশিন দিয়ে। এখন হা-মীম গ্রুপের কর্মীর সখ্যাই ৫০ হাজার। একদিনে এই অবস্থান তৈরি হয়নি। এর পেছনে আছে নিরলস পরিশ্রম আর সাধনা।’
বক্তৃতা শেষে ছিল প্রশ্ন-উত্তর পর্ব। সেখানে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী পিয়াস সরদার প্রশ্ন করেন, ‘যত দিন যাচ্ছে ভারতীয় চ্যানেলগুলো তত জনপ্রিয় হচ্ছে আমাদের দেশে। বিপরীতে পাল্লা দিয়ে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে দেশীয় চ্যানেল। এ থেকে মুক্তির কী কোনো উপায় নেই?
জবাবে একে আজাদ বলেন, অবশ্যই মুক্তির উপায় আছে। এ জন্য আমাদের নির্মাতাদের নতুন নতুন আইডিয়া উদ্ভাবন করতে হবে। গল্পের উপস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে হবে। সংলাপে পরিবর্তন আনতে হবে। টোট্যাল সিস্টেমটাতেই পরিবর্তন জরুরি।
এন্ট্রাপ্রেনারশিপ বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার বৃষ্টি জানতে চান, নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য একে আজাদ কোনো সাহায্য সহযোগিতার ব্যবস্থা রেখেছেন কি না।
উত্তরে তিনি বলেন, ‘না, কোনো ব্যবস্থা নেই। কারণ, কারও সাহায্য নিয়ে খুব বেশি দূর অগ্রসর হওয়া যায় না। সফল হতে হলে নিজের পরিশ্রম, চেষ্টা আর যোগ্যতা লাগে। আমি চাই, তোমরা নিজের যোগ্যতায় বড় হও।’
অপর এক শিক্ষার্থীর প্রশ্নের জবাবে একে আজাদ বলেন, দেশে যে হারে ব্যবসা বাড়ছে সেই হারে যোগ্য ও দক্ষ লোক বাড়ছে না। দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি করতে পারছে না।’
এ সময় তিনি গুণগত শিক্ষার প্রতি নজর দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ইউনির্ভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সবুর খান, উপাচার্য প্রফেসর ড. ইউসুফ মাহাবুবুল ইসলাম ও ইনোভেশন অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের পরিচালক মো. আবু তাহের।
ডিআইইউ থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমন্ত্রিত এই ১২ জন সফল উদ্যোক্তার বক্তৃতাগুলো নিয়ে পরবর্তী সময়ে একটি বই প্রকাশিত হবে, যা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ব্যবসা, অথনীতি ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য রেফারেন্স বই হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করবে। এই ১২ জন উদ্যোক্তার ওপর ডিআইইউ থেকে ১২টি প্রামাণ্যচিত্রও নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।