‘সবক্ষেত্রে তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে’

‘সবক্ষেত্রে তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে’

  • লিডারশিপ ডেস্ক

সম্প্রতি বাংলাদেশ ঘুরে গেলেন ইন্টারন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেন্টস সভাপতি এবং জর্জিয়ার ককেসাস ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট কাখা শিঙ্গেলিয়া। তিনি আন্তজার্তিক পরিমন্ডলে শিক্ষা উন্নয়ন বা শিক্ষা ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দানকারী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে বিশেষভাবে পরিচিত। আইএইউপি সভাপতি ছাড়া তিনি জর্জিয়ার প্রাক্তন সংসদ সদস্য এবং টিবিলিসি এর সোশ্যাল এফেয়ার্সের প্রাক্তন মেয়র। সম্প্রতি কাখা শিঙ্গেলিয়া সমাবর্তন বক্তা হিসেবে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ৭ম সমাবর্তনে যোগ দিতে বাংলাদেশে আসেন। তাঁর একটি সাক্ষাৎকার তুলে ধরা হলো প্রমিনেন্টের পাঠকদের জন্য।


ইন্টারন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেন্টস (IAUP) কিভাবে বিশ্বব্যাপী ইউনিভাসিটি শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করছে ?

কাখা শিঙ্গেলিয়া: আইএইউপি মূলত: বিশ্ববিদ্যালয় প্রেডিডেন্ট বা ভিসি বা রেক্টরদের একটি সংগঠন যেখানে বিশ্বব্যাপী পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেডিডেন্ট, ভিসি, রেক্টরদের কণ্ঠস্বর হিসেবে কাজে করেছে। এর মূল লক্ষ্য হলো বিশেষ কর্মসূচি এবং পদক্ষেপ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সদস্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রেডিডেন্ট, ভিসি, রেক্টরদের দক্ষতা এবং ক্ষমতা বা যোগ্যতার উন্নয়ন সাধন করা। মূলত এ লক্ষ্যে আইএইউপি এর অভিজ্ঞ প্রেডিডেন্ট, ভিসি, রেক্টর তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে সদস্য প্রতিষ্ঠানসমূহের ভিসি রেক্টরগণকে বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে কর্মদক্ষতা উন্নয়নে সহযোগিতা করে থাকে। এছাড়া বিশেষ কৌশলের মাধ্যমে আইএইউপি এর প্রেসিডেন্টগণ বিভিন্ন দেশের সদস্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ পরিদর্শন করেন এবং তাদের দেশের অভিজ্ঞতার আলোকে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে সহযোগিতা বা পরামর্শ প্রদান করে থাকেন। আইএইউপির এ সেবাসমূহ সম্পূর্ণ ফ্রি। আমি মনে করি ড্যাফোডিল তথা বাংলাদেশ আইএইউপি এর সেবা গ্রহণ করতে পারে, এতে এ দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নয়ন সম্ভব।

বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ আইএইউপি থেকে কেমন সহযোগিতা পাচ্ছে?

কাখা শিঙ্গেলিয়া: আমি আগেই বলেছি আইএইউপি তার অভিজ্ঞ প্রেসিডেন্ট ও রেক্টরদের মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মশালা বা বিশেষ কোচিং এর আয়োজন করে থাকে যেখান থেকে বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নয়ন সম্ভব, যদিও আমি মনে করি বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বেশ অগ্রগতি সাধন করেছে। একই সাথে আমি মনে করি বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের আন্তর্জাতিক প্রকাশ দরকার যাতে করে উন্নত বিশ্বের সাথে অভিজ্ঞতার আলোকে কাজ করতে পারে। সুতরাং এখন এধরনের একটি সুযোগ বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে, তাই আমি মনে করি বাংলাদেশকে প্রগতিশীল দেশ হিসাবে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।২০০৫ এ প্রথম বাংলাদেশ সফরের সুযোগ হয়েছিল আমার। তখনকার বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশের মধ্যে আমি অনেক পরিবর্তন লক্ষ করছি। আমাকে বলতেই হবে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গিয়েছে। তবে আমি মনে করি বাংলাদেশে সবক্ষেত্রে তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের পরিচিত আরো বাড়বে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আরো কমবে এর বাইরে আমি মনে করি বাংলাদেশ ঠিক পথেই এগোচ্ছে্।আমি মনে করি বাংলাদেশ সমগ্র এশিয়াই একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি দেশ।

সমাবর্তন বক্তা হিসাবে আপনার অভিজ্ঞতা কি ?

কাখা শিঙ্গেলিয়া: আমি এর আগেও এর জন্য বিভিন্ন দেশে গিয়েছি এর মধ্যে বাংলাদেশে আমার অভিজ্ঞতাই সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ বলে মনে হয়েছে। আমি এখানকার আতিথেয়তা আয়োজন তরুণদের স্বত্বঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণ এবং তাদের উদ্দীপনা দেখে মুগ্ধ।আমি মনে করি বাংলাদেশের তরুণদের দেশের জন্য অনেক কিছু দেবার আছে। এদেশের তরুণদের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করা উচিত। যেমন রাজনীতি থেকে শুরু করে ব্যবসা, সামাজিক কর্মকাণ্ড সব কিছুতেই তাদের প্রতিনিধিত্ব থাকা প্রয়োজন। বাংলাদেশের এখন প্রতিটি সময় যথাযথভাবে সদ্ব্যবহার করা উচিত। এখন সময় হলো তোমাদের কাছে সব কিছু আছে, অন্যদের মতো শক্তি আছে এবং তোমাদের সেই শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।

আপনার দেশ এবং ইউনিভার্সিটির সাথে আমরা কিভাবে কাজ করতে পারি?

কাখা সিঙ্গোলয়া: আসলে আমি মনে করি বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশ। এদেশের তরুণ প্রজন্মের উন্নয়নে কাজ করতে হবে। তাদের শিক্ষার সুযোগ এনে দিতে হবে। আমি মনে করি শিক্ষা বিনিময়, যৌথ গবেষণা, শিক্ষক বিনিময়, উচ্চ শিক্ষা হাতে নিতে পারি। সেক্ষেত্রে আমার বিশ্ববিদ্যালয় সদা প্রস্তুত থাকবে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ  উন্নয়নে প্রয়োজন, সেক্ষেত্রে আমি মনে করি জর্জিয়ার সাথে পারস্পারিক সহযোগিতার পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব। আমার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান সর্বদাই প্রস্তুত থাকবে যেকোন যৌথ উদ্যোগ গ্রহণে। বাংলাদেশের তরুণ প্রজম্ম অনেক মেধাবী। জাতি হিসাবে তোমরা অনেক আবেগী, তোমরা পার না এমন কিছু কি আছে?  যেকোন ভালো উদ্যোগ তোমরা নিয়েছ তা সফল হয়েছে। শুধু প্রয়োজন যথাযথ ব্যবস্থাপনা এবং সুযোগ।

কৃতজ্ঞতা: ইত্তেফাক

Sharing is caring!

Leave a Comment