পাহাড়ে সফল পলাশ

পাহাড়ে সফল পলাশ

  • লিডারশিপ ডেস্ক 

রাঙ্গামাটির পাহাড়ে ড্রাগন ফল চাষ করে সফলতা পাওয়া গেছে। তাই এখানকার মাটি ও আবহাওয়া এ ফল চাষের জন্য উপযোগী বলে মনে করা হচ্ছে।
রাঙ্গামাটি সদরের সাপছড়ি ইউনিয়নের পলাশ চাকমা নামে এক চাষি জানান, প্রথমে দশটি ড্রাগন গাছের চারা থাইল্যান্ড থেকে সংগ্রহ করে এনে তিনি শখের বসে চাষ শুরু করেন। প্রথমে ছোট পরিসরে চাষ শুরু করলেও পর্যায়ক্রমে বাগান বাড়াতে থাকেন। শুরুর দিকে ফলন কম হলেও বর্তমানে প্রতি বছরই উৎপাদন বাড়ছে ড্রাগন ফলের।

তিনি জানান, আগামীতে আরো বড় পরিসরে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন ফল চাষ করার ইচ্ছা রয়েছে তার। রাঙ্গামাটি কৃষি উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় পরামর্শ পাচ্ছেন তিনি। এছাড়াও বাণিজ্যিকভাবে চারা উৎপাদন করা হচ্ছে। ড্রাগন ফলের ভবিষ্যৎ বাণিজ্যিক সম্ভাবনা নিয়ে তিনি আশাবাদী।

রাঙ্গামাটি সদরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শান্তিময় চাকমা জানান, রাঙ্গামাটির মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন ফল চাষের জন্য উপযোগী। ড্রাগল ফলের চারা রোপণ পদ্ধতি নিয়ে তিনি জানান, প্রতিটি গর্তে অবশ্যই একটি পিলার অথবা শক্ত গাছ পুঁতে দিতে হবে। প্রতিটি গর্ত তৈরির পর রোপণের আগে ১০ কেজি গোবর, ২০০ গ্রাম এমওপি, ৩০০ গ্রাম টিএসপি এবং ৩০ গ্রাম বোরন সার মাটির সাথে মিশিয়ে ১০/১২ দিন পর রোপণ করতে হবে। প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিন লিটার পানি একবারে দিলেই চলে।

DRAGON

তিনি জানান, প্রতি বছর ফল কর্তনের পর অবশ্যই মাদা (গর্ত) পরিষ্কার করে একবার গোবর ও রাসায়নিক সার পরিমিত মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে। উঁচু জমিতে যেখানে পানি জমে না সেখানে ড্রাগন ফলের চাষ ভালো হয়। জুলাই-সেপ্টেম্বরের মধ্যে ড্রাগন ফলের চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়। জুন/জুলাই মাস থেকে ফল সংগ্রহ করা যেতে পারে।

পলাশ চাকমা বাউড্রাগন ফল-২ (লাল) জাতের ড্রাগন চাষ করছেন। তার বাগানে পরিচর্যা ও দেখাশোনা করেন ইমন চাকমা। তিনি বলেন, ড্রাগন ফলের গাছে পরিমিত পরিমাণে পানি দিতে হয়। ঠিকমতো গাছের পরিচর্যা করা লাগে। ড্রাগন ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ। ফলটি পাকলে টকটকে লাল হয়। ফল খেতে খুব সুস্বাদু। ড্রাগন গাছের প্রতিটি চারা ১০০-১৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়।
তিনি জানান, অনেকে বাগান থেকে পাকা ড্রাগন ফল কিনে নেয়। এ সব ফল প্রায় ৬৫০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হয়ে থাকে। এখানকার ড্রাগন ফল দোকানেও ভালো বিক্রি হয়।

কৃষি তথ্য সার্ভিসের তথ্য মতে, ড্রাগন ফলের পুষ্টিগুণ রয়েছে ভিটামিন সি, মিনারেল এবং উচ্চ ফাইবার যুক্ত। ফলে ফাইবার, ফ্যাট এ্যাস, ক্যারোটিন, প্রচুর ফসফরাস, এসকরবিক এসিড, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন রয়েছে। ফলটি পেটের পীড়া বা লিভারের জন্য উপকারী। তাজা ড্রাগন ফল খেয়ে মানব শরীরকে সতেজ ও সুস্থ রাখা যায়।

বিশেষজ্ঞরা জানান, ড্রাগন ফল ডায়াবেটিক আক্রান্ত রোগীদের শরীরের রক্তের গ্লুকোজকে সহজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। জুস তৈরিতে এ ফলটি অত্যন্ত উপযোগী। রাঙ্গামাটির মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন ফল চাষের জন্য উপযোগী।
ড্রাগন ফলের ভবিষ্যৎ বাণিজ্যিক সম্ভাবনা রয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন কৃষি অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক হারুন-অর-রশিদ। তিনি জানান, ড্রাগন ফল কৃষিতে আনতে পারে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।

সূত্র :নয়াদিগন্ত favicon59

Sharing is caring!

Leave a Comment