তারুণ্যের জয়ধ্বণি

তারুণ্যের জয়ধ্বণি

  • লিডারশিপ ডেস্ক

তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে যেন তারুণ্যের গাঁটছড়া বাঁধা। বিল গেটস থেকে মার্ক জাকারবার্গ—প্রযুক্তির দুনিয়া কাঁপিয়েছেন তরুণ বয়সেই। বাংলাদেশেও আছে এমন উদাহরণ। উদ্যোগ বা উদ্ভাবন দিয়ে তরুণ বয়সে সাড়া ফেলেছেন এমন কয়েকজনকে নিয়ে এই প্রতিবেদন।


মেহদী হাসান খান

অভ্র

সারা বিশ্বে যেখানে ভাষাভাষীর দিক থেকে বাংলা ভাষার স্থান চতুর্থ, সেখানে ভার্চ্যুয়াল জগতে বাংলা ভাষার প্রভাব একসময় ছিলই না। সে চিন্তা থেকেই উইন্ডোজে অপারেটিং সিস্টেমের জন্য ইউনিকোডভিত্তিক বাংলা লেখার অভ্র কি-বোর্ড তৈরি করে অমিক্রন ল্যাব। যার নেতৃত্ব দেন মেহদী হাসান খান। ২০০৩ সালের ২৬ মার্চ অভ্র চালু হলে অনলাইনে বাংলা লেখাটা সহজ হয়ে যায়। ‘ভাষা হোক উন্মুক্ত’ স্লোগান নিয়ে অভ্রের জনপ্রিয়তা তরুণ প্রজন্মের কাছে দ্রুতই বাড়তে থাকে। উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে। মেডিকেলে পড়ার সময় বাংলা লেখার জটিলতা কাটাতে সফটওয়্যার তৈরিতে নিজে নিজেই শিখে নেন প্রোগ্রামিং। ২০১১ সালে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য মেহদী হাসান খানকে বেসিস পুরস্কার দেওয়া হয়।

ওসামা বিন নূর

ইয়ুথ অপরচুনিটিস

সারা বিশ্বের বিভিন্ন ধরনের বৃত্তি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আয়োজিত প্রশিক্ষণ, ইন্টার্নশিপ এবং প্রতিযোগিতার খবর জানানো হয় অনলাইনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘ইয়ুথ অপরচুনিটিসের’ মাধ্যমে। তরুণদের সহযোগিতা করতে ‘ইয়ুথ অপরচুনিটিস’ (www.youthop.com) নামে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন ২৫ বছর বয়সী ওসামা বিন নূর। সহপ্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তাঁর বন্ধু মাকসুদ মানিকও এর সঙ্গে যুক্ত আছেন। ২০১২ সালের দিকে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ইয়ুথ অপরচুনিটিসের যাত্রা শুরু। আরও পরে এসে ওয়েবসাইট করা হয়েছে। এ বছর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী ফোর্বস-এর এশিয়ার সেরা অনূর্ধ্ব-৩০ বছরের তরুণ সামাজিক উদ্যোক্তাদের তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের ওসামা বিন নূর। শুধু ফোর্বস-এর স্বীকৃতিই নয়, এই কাজের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্তরাজ্যের রানির ‘দ্য কুইন্স ইয়াং লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০১৬’ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়ে রাজকীয় অতিথি হিসেবে ঘুরে এসেছেন যুক্তরাজ্য।

আয়মান সাদিক

১০-মিনিট-স্কুল

বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ইউটিউবের মাধ্যমে জটিল বিষয়গুলো সহজেই বুঝে নিতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের ছাত্র আয়মান সাদিক। সহজে শেখার এই উপায়টা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার চিন্তা থেকেই ২০১৫ সালে তৈরি করেন টেন মিনিট স্কুল (10minuteschool.com) নামের ওয়েবসাইট। অষ্টম শ্রেণি থেকে শুরু করে সকল বিষয়ের জটিল পাঠের সহজ সমাধান রয়েছে ওয়েবসাইটটিতে। বর্তমানে এই দশ মিনিটের স্কুলে প্রায় ২১ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে।

ফয়সাল করিম

ব্যাটল অব ৭১

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার চিন্তা থেকেই ২০১৩ সালের শেষের দিকে নিজ দলের সঙ্গে একটি ভিডিও গেম বানানোর পরিকল্পনা করেন ফয়সাল করিম। পুরো যুদ্ধের ইতিহাসকে কেন্দ্র করে তৈরি করে ফেলেন ব্যাটল অব সেভেন্টি ওয়ান নামের একটি গেম। গেমটিতে প্রথমবারের মতো জাতির জনকের ত্রিমাত্রিক চিত্র ব্যবহার করা হয়। গেমটি প্রকাশ পাওয়ার আগেই জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির সেরা অ্যাপস ও গেমস পুরস্কার ২০১৬ অর্জন করে।b3405ee5aafe5192a863f42035757806-6

মার্ক জাকারবার্গ

ফেসবুক

ফেসবুক প্রতিষ্ঠার জন্য মার্ক জাকারবার্গ সারা বিশ্বে পরিচিত। ২০০৪ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে বসে তৈরি করেন ফেসবুক। তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে হয় ওই বছরেই। এর পরের ঘটনাগুলো প্রায় সবারই জানা। মাত্র ২৬ বছর বয়সেই জাকারবার্গ টাইম ম্যাগাজিনের দৃষ্টিতে বছরের সেরা ব্যক্তিত্বরূপে নির্বাচিত হয়েছেন।

বিল গেটস

মাইক্রোসফট

শুধু নিজের মেধাকে কাজে লাগিয়ে যিনি বিশ্বের ১ নম্বর ধনী হয়েছেন, তাঁর নাম বিল গেটস। ১৯৭৫ সালে গেটসের তৈরি মাইক্রোসফট বিশ্বের সবচেয়ে বড় সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। ২০১৬ সালেও তিনি বিশ্বের ১ নম্বর ধনী নির্বাচিত হন। তাঁর বর্তমান সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৯০ বিলিয়ন ডলার।

জাভেদ করিম

ইউটিউব

জাভেদ করিম জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট ইউটিউবের সহপ্রতিষ্ঠাতা। তাঁর বাবা একজন বাংলাদেশি গবেষক। জাভেদ করিম আরবানা-শ্যাম্পেইনে ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে স্নাতক শেষ করার আগেই ক্যাম্পাস ত্যাগ করে পেপ্যালে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি রিয়েল-টাইম ইন্টারনেট জালিয়াতিবিরোধী সিস্টেমসহ পেপ্যালে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ২০০৫ সালে দুজন সহপ্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে ইউটিউব প্রতিষ্ঠা করেন করিম।

ল্যারি পেজ

গুগল

১৯৯৬ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন তরুণ শিক্ষার্থী তাঁদের পিএইচডি গবেষণার অংশ হিসেবে একটি নতুন সার্চ ইঞ্জিন বানানোর কাজ শুরু করেন। দুই বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম আর মেধায় অবশেষে ১৯৯৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর তৈরি হলো গুগল। সঙ্গে ছিল সার্গে ব্রিন। মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন অনেক বড় প্রতিষ্ঠানের মালিক হওয়ার।

সূত্র: প্রথম আলোfavicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment