দু’ চাকা থেকে চার চাকার স্বপ্ন

দু’ চাকা থেকে চার চাকার স্বপ্ন

  • লিডারশিপ ডেস্ক

সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন পুরো গ্রাম মটরসাইকেলে ঘুরে বেড়াতেন। স্বপ্নের শুরুটা সেখান থেকেই। দু চাকা থেকে চার চাকার মালিক হবেন তিনি। শুধু তাই নয়, একটি গাড়ির শোরুম থাকবে তার। যেখানে নানা ধরনের গাড়ি থাকবে। একসময় সেই ছোটবেলার স্বপ্নে ধুলো পড়ে যায়। তবে সেই ধুলো মুছে একদিন সেই স্বপ্নকেই বাস্তবে রূপ দিতে শুরু করেন গাড়ির ব্যবসা। ঘটনাগুলো বলছিলেন আসলাম শের নিয়াবাত। ‘কার সিলেকশন’ নামে গাড়ির শোরুমের স্বত্বাধিকারী। পল্টনে ছিল কার সিলেকশনের প্রথম শোরুম। এরপর বারিধারায় দ্বিতীয় শোরুম দেন তিনি। এখন চট্টগ্রাম ও খুলনাতেও তার একটি করে শোরুম আছে।

তার ব্যবসায়িক জীবনের গল্পের শুরুটা হয় ১৯৯২ সাল থেকে। তেজগাঁও কলেজের ছাত্র তখন আসলাম। ছয় বন্ধু মিলে শুরু করেন মাছের খাবারের ব্যবসা। সেই সুবাদে সিলেট ও কক্সবাজারে কয়েক বছর অস্থায়ীভাবে ছিলেন তারা। এরপর সেখান থেকে শেয়ার ব্যবসা শুরু করেন দুই বন্ধু। কিন্তু সেখানে মাঝপথে এক বড় ধাক্কার শিকার হন তারা। তবে আসলামের জীবনের মোড় ঘুরে যায় সেখান থেকেই।  শান্তিনগরে তখন একটি ক্লাব ছিল। তার সাংগঠনিক সম্পাদক তখন আসলাম। বাসাও ছিল শান্তিনগরে। কাকরাইলে সেই সময় গাড়ি ব্যবসার খুব ভালো অবস্থা। তিনি সেই এলাকায় তখন আড্ডা দিতেন। গাড়ি ব্যবসায়ী অনেকের সঙ্গে সেই সময়টায় সখ্য গড়ে ওঠে। তখনই সেই ছোটবেলার স্বপ্নের পুনরাবৃত্তি ঘটে। জমানো টাকা দিয়ে ছোট করে গাড়ি ইমপোর্টের ব্যবসা শুরু করেন। এরপর ১৯৯৬ সালে নিজেই ছোট পরিসরে পল্টনে একটি শোরুম দেন। জীবনের নতুন এক অধ্যায় শুরু হয় আসলামের। চোখের সামনে বড় বড় স্বপ্ন। একদিন তার শোরুমে নামীদামি ব্রান্ডের গাড়ি থাকবে। সেই স্বপ্নের হাতাছানিতেই রাত দিন পরিশ্রম করতে থাকেন তিনি। একসময় সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়। আসলাম বলেন, ‘গত দশ বছরে আমি ঠিক কতটুকু ব্যক্তিগত সময় কাটিয়েছি, তা হয়তো হিসেব করে বলে দেওয়া যাবে। জীবনে চলার পথে অনেক সমস্যায় পড়েছি। কখনো কখনো হতাশা ঘিরে ধরত নিজেকে। আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি আমাকে মনোবল দিয়েছেন।’

ব্যবসা করার পাশাপাশি নিয়মিত কর প্রদান করেন আসলাম। এই বছরসহ পর পর চার বছর আয়কর পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এই বছর পাঁচজন ব্যবসায়ী এই আয়কর পুরস্কার পান। যার মধ্যে একজন তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই আয়কর প্রদান পুরস্কার ব্যবসায়ীদের উৎসাহ দেয়। এটি খুবই ইতিবাচক একটি উদ্যোগ। কিন্তু সরকারের কাছে একটি অনুরোধ, এই পুরস্কার প্রদানের সংখ্যাটা আরও বাড়ানো হলে ভালো হয়।’

ব্যবসায়ীদের কাছে অবসর অভিধানের শব্দ মাত্র। পুরো সপ্তাহ অংকের হিসেবেই ব্যস্ততা চলতে থাকে। আসলাম শের নিয়াবাতের বেলাতেও চিত্রটা একই। তবে যখন খানিকটা অবসর পান, সেই সময়টা পরিবারকে দেন তিনি। এছাড়া মাঝে মাঝে গান শোনা বা ঘুরতে যান নিজেকে খুঁজে পেতে।

সূত্র: ইত্তেফাকfavicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment