আয়েশাদের হাতে উদ্ভাবনের ‘অস্কার’

আয়েশাদের হাতে উদ্ভাবনের ‘অস্কার’

  • লিডারশিপ ডেস্ক

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উদ্ভাবনে ‘অস্কার’ নামে পরিচিত আরঅ্যান্ডডি ১০০ পুরস্কার। যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞান গবেষণাভিত্তিক সাময়িকী আরঅ্যান্ডডি ম্যাগাজিন ৫৪ বছর ধরে এই পুরস্কার দিচ্ছে। চলতি বছর এই পুরস্কারের একটি এসেছে মানুষের কৃত্রিম ফুসফুস তৈরির সাফল্যের হাত ধরে। যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যালামস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির ‘পালমোনারি লাং মডেল (পালমো)’ পেয়েছে আরঅ্যান্ডডি ১০০ পুরস্কার।
আর উদ্ভাবনের এই অস্কারের ভাগীদার বাংলাদেশও। কৃত্রিম ফুসফুস তৈরির গবেষণা দলের একজন সদস্য হচ্ছেন ন্যানো বিজ্ঞানী আয়েশা আরেফিন। নতুন নতুন ওষুধের পরীক্ষা-নিরীক্ষা যাতে আরও নিখুঁতভাবে করা যায়, সে জন্যই মূলত এই কৃত্রিম ফুসফুস তৈরি করা। আয়েশা ন্যানো উপাদান দিয়ে এই ফুসফুসের গুরুত্বপূর্ণ অংশ অ্যালভিওলি (ক্ষুদ্র রন্ধ্রগুচ্ছ) তৈরি করেছেন।

নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ওয়াশিংটনে আরঅ্যান্ডডি ১০০ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৫ নভেম্বর পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। ২৯ নভেম্বর লস অ্যালামস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি এই পুরস্কারের তথ্য ও ছবি প্রকাশ করে। অনলাইন যোগাযোগে আয়েশা আরেফিন বলেন, টিস্যু বা কোষ প্রকৌশলের মাধ্যমে তৈরি ক্ষুদ্রাকৃতির কৃত্রিম ফুসফুস হচ্ছে এই পালমো। নতুন ওষুধের পরীক্ষা এবং মানুষের শরীরে বিষাক্ত উপাদান নিরীক্ষায় এটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে। পালমো ছাড়া আরও চারটি পুরস্কার পেয়েছে লস অ্যালামস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোর লস অ্যালামস ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে মানব শরীরের কৃত্রিম অঙ্গ তৈরির প্রকল্প অ্যাথেনায় ২০১২ সালে যোগ দেন আয়েশা আরেফিন। এই অ্যাথেনার একটি অংশ হলো পালমো। ড. রাশি এস নায়ারের নেতৃত্বে বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম ফুসফুসের মডেল বা পালমো তৈরিতে সফলতা পান।

আয়েশা আরেফিন বর্তমানে লস অ্যালামসে গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করছেন। ন্যানো প্রযুক্তি দিয়ে মানুষের কল্যাণে গবেষণা করে যেতে চান। মাস খানেক আগে তিনি তাঁর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তাঁর অভিসন্দর্ভের বিষয় ওষুধ পরীক্ষার জন্য কৃত্রিম অ্যালভিওলি নির্মাণ। আয়েশা বললেন, ‘আমার গবেষণামূলক প্রবন্ধ আগামী বছর উপস্থাপন করব। এরপর আমি পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা করতে চাই।’ এই পুরস্কার বিষয়ে আয়েশা বলেন, ‘আমার আগ্রহের বিষয় শারীরবৃত্তিক কারণে প্রাসঙ্গিক অঙ্গ তৈরি করা, যা নতুন ওষুধ পরীক্ষায় সহায়ক হবে। পাশাপাশি রোগীর ব্যবহারে লাগে এমন চিকিৎসাযন্ত্র বানাতে চাই।’

আয়েশার জন্ম চট্টগ্রামের হালিশহরে ১৯৮৮ সালের ২৪ আগস্ট। অবসরপ্রাপ্ত চাকুরে বেলায়েত হোসেন ও গৃহিণী রোকেয়া বেগমের তিন ছেলে ও দুই মেয়ের একজন আয়েশা। সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১১ সালে জিন প্রকৌশলে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন আয়েশা। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নিউ মেক্সিকোতে ২০১৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যানো প্রযুক্তি ও মাইক্রো সায়েন্স বিষয়ে পিএইচডি করছেন তিনি।

সূত্র: প্রথম আলোfavicon59-4

Sharing is caring!

Leave a Comment