বসন্ত বাতাসেও ঠোট ফাটে

বসন্ত বাতাসেও ঠোট ফাটে

শিমি আক্তার : শীতের প্রায় শেষ হতে চলছে। মাঘের আর মাত্র কয়েকটা দিন পেরোলেই ফাল্গুন। ফাল্গুনে শীত বলবে গুডবাই। কিন্তু ঠোঁট ফাটা কি আর গুডবাই বলবে? শীতে যেমন ঠোঁট ফাটে তেমনি বসন্তেও ফাটে ঠোঁট। তাই শীতের মতোই বসন্তেও ঠোঁটকে সুরক্ষিত রাখতে ঠোঁটের পরিচর্যা করতে হয়। ঠোঁটকে সুস্থ, সতেজ ও কোমল রাখতে কীভাবে যত্ন নেবেন, চলূন সেই সংক্রান্ত কিছু বিষয় দেখে নেওয়া যাক।


কেন সমস্যা ঠোঁটে?

চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে নিন্মোক্ত কারণে ঠোঁট ফাটা বা ঠোঁটের রং কালচে হয়:

  • আবহাওয়ায় আর্দ্রতার অভাব থাকলে ও শরীরে পানিশূন্যতা দেখা যায় আর সে জন্যই হাত-পা বা শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো ঠোঁটও শুকিয়ে যায় এবং ঠোঁটে ফাটল দেখা দেয়।
  • আবহাওয়ার আর্দ্রতার অভাব ঠোঁটের রুক্ষতা বাড়ায়। ফলে ঠোঁটের লাবণ্যতা ও সতেজতা নষ্ট হয়।
  • অতিরিক্ত শীতের কারণে ঠোঁট কালচে হয়ে যেতে পারে।
  • শীতে অতিরিক্ত চা, কফি, পান ও ধূমপাণের ফলেও ঠোঁট কালচে হয়ে যেতে পারে।

যেভাবে দূর হবে কালচে ভাব

  • নিয়মিত কয়েকদিন কাঠবাদামের তেল ঠোঁটে মাখলে ঠোঁটের কালো ভাব দুর হতে পারে।
  • গোলাপ ফুলের পাপড়ি বেটে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে ২০মিনিট ঠোঁটে লাগিয়ে রাখুন, ঠোঁটের গোলাপি ভাব ফুটে উঠবে।
  • মধুর সাথে পেট্রোলিয়াম জেলি মিশিয়ে ঠোঁটে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর পরিষ্কার নরম কাপড় বা তুলা দিয়ে ধীরে ধীরে ঠোঁট মুছে নিতে হবে কারণ ঠোঁটের চামড়া নরম হয়ে থাকে, এতে ঠোঁটের কালচে ভাব দূর হবে এবং ঠোঁট গোলাপী হয়ে উঠবে।
  • কাঁচা দুধ তুলায় ভিজিয়ে আলতো ভাবে কিছুক্ষণ ধরে ঘষলে ঠোঁটের কালো ভাব দুর হতে পারে।

আর্দ্রতাযুক্ত জেলির ব্যবহার

  • ঠোঁটের চিকিৎসা করতে হয় ফেটে য্ওায়ার আগেই; ঠোঁট ফেটে যাওয়ার পর নয়। এই সময় বাইরে বের হলে আর্দ্রতাযুক্ত লিপজেল বা ক্রিম জাতীয় কিছু ব্যবহার করতে পারেন। বাজারে বিভিন্ন কোম্পানীর অনেক রকম পেট্রোলিয়াম জেলি পাওয়া যায়। ঠোঁট শুকিয়ে গেলে বা ফেটে গেলে জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজানোর মধ্যে কোনো উপকার নেই। জিভ দিয়ে ঠোঁট না ভিজিয়ে লিপবাম বা লিপজেল ঠোঁটে ব্যবহার করতে পারেন। আপনার ঠোঁট ফাটার প্রবণতা বেশি হলে সবসময় একটি লিপজেল বা লিপবাম সঙ্গে রাখবেন যাতে যখনই প্রয়োজন মনে হয় ব্যবহার করতে পারেন। এতে যেমন ঠোঁট ফাটা বন্ধ হবে আবার ঠোঁটকে সুর্যের তাপ থেকেও রক্ষা করবে।

বিভন্ন সংমিশ্রণের ব্যবহার

  • ঠোঁট ভালো রাখতে মধুর সাথে তিলের তেল মিশিয়ে ঠোঁটে লাগালে ঠোঁট কোমল থাকবে।
  • অলিভ অয়েলের সাথে গ্লিসারিন মিশিয়ে ঠোঁটে লাগালে ঠোঁটে আর্দ্রতা বজায় থাকবে। ফলে ঠোঁট ফাটবে না।
  • চালের গুঁড়োর সঙ্গে অল্প পানি মিশিয়ে কিছুক্ষণ এই মিশ্রণটি ঠোঁটে লাগিয়ে রাখুন। এতে ঠোঁটের মরা চামড়া গুলো সহজেই উঠে আসবে।

ঠোঁট রঙিন করবেন যেভাবে

  • ইদানিং মেয়েরা খুব চড়া রঙের লিপস্টিক বেশি ব্যবহার করছে। গাড় বেগুনী , লাল, কফি, জাম রঙ গুলোই বেশি চলছে । তবে একটু কালচে রঙ বা শেডের লিপস্টিকের ব্যবহারকারীর সংখ্যাটা একটু বেশিই মনে হয়। তবে দুটি রঙ একসাথে মিলিয়ে ঠোঁটে লাগালেও বেশ সুন্দর দেখায়। এ ছাড়াও দোকানে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন কোন রঙ ও ধরণের লিপস্টিক এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। পোশাকের রঙের সাথে মিলিয়ে ঠোঁটের চারদিকে গাঢ় রঙ লাগিয়ে মাঝের অংশে একই রঙের অপেক্ষাকৃত হালকা শেডের লিপস্টিক লাগালে আরও আর্কষণীয় দেখাবে।

এই আবহাওয়ায় গ্লসি বা ক্রিমি লিপস্টিক লাগানোই উত্তম। পেট্রোলিয়াম জেলি প্রথমে ঠোঁটে লাগিয়ে ঠোঁটকে আর্দ্র ও কোমল করে তার উপর ম্যাট লিপস্টিক লাগালে ঠোঁটকে শুস্কতার হাত থেকে রক্ষা করা যেতে পারে। লিপস্টিক উঠানোর সময় তুলায় অলিভ ওয়েল লাগিয়ে আলতো করে ঘষে তুলতে হবে।

Sharing is caring!

Leave a Comment