গরমে চাই সুস্থ ত্বক
- রিক্তা রিচি
গ্রীষ্ম মানেই প্রখর রোদ, ধুলা-বালি আর ঘাম। এই সময়ে ত্বকের প্রয়োজন একটু বাড়তি যত্ন। কারণ সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি এবং তাপের কারনে ত্বক তার আদ্রতা হারিয়ে ফেলে। তাছাড়া এই সময়ে ত্বকে ব্রণ, ফুসকুড়ি, কালচে দাগ, এলার্জি ইত্যাদি নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই স্বাভাবিক ত্বকের তুলনায় তৈলাক্ত ত্বকের একটু বেশিই যত্ন নিতে হয়। আসুন এখন জেনে নেয়া যাক প্রচন্ড গরমে আপনার ত্বককে কিভাবে সুরক্ষিত এবং দীপ্তিময় রাখতে পারবেন :
প্রতিদিন দুই বার ত্বক পরিষ্কার করুন
গ্রীষ্মের প্রচন্ড রোদে মানুষ হাঁপিয়ে উঠে। আর কাজের প্রয়োজনে বাইরে গেলে তো কথাই নেই। ঘেমে অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়। তাছাড়া রাস্তার ধুলোবালি, ময়লা ইত্যাদির কারনে ত্ব্কে দেখা যায় ফুসকুড়ি, ঘামাচির মতো সমস্যা। আর তৈলাক্ত ত্বকে বাসা বাধে ব্রণ। এসব থেকে বাঁচতে হলে দিনে অন্তত বাইরের দুইবার গোসল করুন এবং অন্যান্য সময়ে পরিষ্কার পানি দিয়ে হাত,মুখ ধুয়ে ফেলুন।
সুস্থতায় পানি
গরমে আপনাকে স্বস্থি এনে দিবে পানি। গরমে সুস্থ থাকতে প্রচুর পানি পান করুন। পানি আপনাকে তরতাজা রাখতে সহায়তা করবে। এসময়ে স্যালাইন বা লেবু মিশ্রিত পানি পান করতে পারেন। স্যালাইন এবং লেবুর শরবত আপনার শরীর থেকে ঘাম হয়ে ঝরে যাওয়া লবনের ঘাটতি পূরণ করবে। বেশী করে সালাদ এবং ফলমুল খান।
ত্বক শীতল রাখুন
গরমে ত্বক শীতল রাখা জরুরী। গরমে ত্বক শীতল রাখতে অর্ধেক শসা কুচি কুচি করে কেটে তার সঙ্গে এক টেবিল চামচ দই ব্লেন্ড করে প্যাক তৈরি করুন। তারপর এটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি গরমে আপনার ত্বককে শীতল রাখতে সহায়তা করবে, আপনি ফ্রেশ অনুভব করবেন। তাছাড়া ত্বক শীতল থাকলে ঘামাচি থেকেও রেহাই পাওয়া যায়।
রোদে পোড়া ত্বকের পরিচির্যা
গ্রীষ্মের রোদে ত্বক পুড়ে যায়, তাই ত্বকের প্রয়োজন বিশেষ যত্ন। চাইলে কিছু ঘরোয়া পরিচর্যার মাধ্যমে খুব সহজে আপনি ত্বকের যত্ন নিতে পারবেন। এজন্য প্রথমে ময়দা, দই, লেবুর রসের সংমিশ্রনে তৈরী করুন একটি বিশেষ প্যাক। এই প্যাকটি রোদে পোড়া ভাব দূর করতে দারুণ কার্যকরী। এছাড়া ত্বকের পোড়াভাব দূর করতে টমেটো ও শশার রস ব্যবহার করা যেতে পারে। টমেটো ও শসার রস ২০/২৫ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফল পাবেন।
টোনার ব্যবহার
গরমে ত্বকের যত্ন নিতে টোনার ব্যবহার করুন। বাজার থেকে ভালো কোম্পানির টোনার কিনুন। তবে সেটি যেন আপনার ত্বকের সাথে মানানসই হয়। টোনার আপনার ত্বককে সজীব রাখবে। কারণ টোনার লোমকূপ বন্ধ করে ত্বককে শীতল রাখতে সহায়তা করে। তবে চাইলে আপনি টোনারের পরিবর্তে গোলাপজল ব্যবহার করতে পারেন।
কোমল পানীয়কে না বলুন
গরমে সকলেই যেন স্বস্থি পেতে কোমল পানীয় পান করে থাকেন। কিন্তু আমরা সকলেই জানি কোমল পানীয়তে থাকা চিনি ত্বক ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই গরমে পিপাসা মেটাতে বিভিন্ন ফলের জুস, লেবুর শরবত, কাচা আমের শরবত, ডাবের পানি পান করুন। এতে শরীর পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পাবে এবং আদ্রতা বজায় থাকবে। তাই গরমে অ্যালকোহল এবং ক্যাফেইন যুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
সানস্ক্রিন এর ব্যবহার
গ্রীষ্মকালে রোদ প্রখর হয়। দুপুরে সূর্য খাড়াভাবে কিরণ দেয় বলে সরাসরি গায়ে লাগে। দুপুরের কড়া রোদে বাইরে না বেরোনোই ভালো। আর যদি কাজের প্রয়োজনে বাইরে যেতে হয় তাহলে সানব্লক ক্রিম বা সানস্ক্রিন লোশন লাগিয়ে বাইরে যান। মনে রাখবেন বাইরে যাওয়ার ২০/৩০ মিনিট আগে পুরো মুখে, হাতে এবং গলায় সান্সক্রিন ক্রিম লাগাতে হবে। সানস্ক্রিম লোশন বেশিক্ষন ত্বকে রাখবেন না। দীর্ঘসময় বাইরে থাকলে একাধিকবার সান্সক্রিন লোশন লাগিয়ে নিন।
গরমে ত্বকের উজ্জলতা হারিয়ে যায়। উজ্জলতা ফিরিয়ে আনতে আঙ্গুর বা কমলার রস দিয়ে ম্যাসাজ করুন। গরমে প্রচুর পানি পান করার পাশাপাশি ত্বকের বিশেষ যত্ন নিলে। তাহলে আপনার ত্বক থাকবে আকর্ষনীয় এবং সুরক্ষিত।
মডেল : অদিতি
1 Comment on this Post
কারনেসিয়া
খুব ভালো আর্টিকেল। এই গরম এ আমি এ টিপস গুলো ফলো করবো।