যেভাবে সাজবেন বৈশাখী সাজে
- শিমি আক্তার
পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতির প্রাণের উৎসব। জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষ সারা বছরের জড়তা, ক্লান্তি, জঞ্জাল ও আর্বজনা মুছে দিয়ে নতুন চেতনায় উদ্দীপ্ত হয়ে পালন করে এই দিনটিকে। এ উৎসবে নতুন মাত্রা যোগ করতে গ্রাম বাংলার নারীরা নতুন সাজে সজ্জিত হয়। বর্ণিল সাজসজ্জা আর পোশাকের আড়ালে নারীরা ভিন্ন রুপে আবিস্কার করতে চায় নিজেদের। কিন্তু সবাই তো আর সাজসজ্জায় সমান দক্ষ নয় তাই তাঁদের জন্য বৈশাখী সাজ নিয়ে আজকের আয়োজন।
বৈশাখী সাজের বিভিন্ন দিক :
ত্বকের যত্ন ও সাজ
- বৈশাখ মাসে রোদ ও ধুলা-বালির প্রকোপ অনেক বেশি থাকে। আর যেহেতু সারাদিনব্যাপি চলতে থাকে বর্ষবরণের বিভিন্ন আয়োজন। তাই প্রকৃতির রুক্ষ মেজাজ ও সারা দিনের ঘোরাঘুরির কথা মাথায় রেখেই সাজতে হবে বৈশাখী সাজ।
- মেকআপ কম বা হালকা করাটাই উত্তম। তবে মেকআপ যাই করুন না কেন তা দীর্ঘস্থায়ী হওয়া দরকার যাতে একটা নির্দিষ্ট সময় পরও মুখে কোন ধরনের ছোপের চিহ্ন না থাকে। এজন্য ওয়াটার বেসড মেকআপ করতে হবে।
- মেকআপের পূর্বে মুখে হালকা করে বরফ ঘষে পানি শুকালে ত্বকের রংয়ের সাথে মিলিয়ে ফাউন্ডেশন লাগাতে হবে। মুখে দাগ থাকলে সেটা ঢাকার জন্য কন্সিলার দিতে হবে। মনে রাখতে হবে মেকআপটা অবশ্যই যেন ত্বকে মিশে যায়। যেহেতু এখন গরমের সময় তাই চোখের সাজে ওয়াটার বেইজড আই লাইনার ও মাসকারা লাগাতে হবে । দিনের সাজে কম ও রাতের সাজে জমকালো ভাবটা মানায়।
- চোখ ও ঠোঁটে মেকআপের আগে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিলে মেকআপ বেশি সময় পর্যন্ত ভালো থাকবে । শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে লিপস্টিক ও আইশ্যাডো নিতে হবে। আইশ্যাডো নেওয়ার সময় চোখের নীচে লুজ পাউডার লাগিয়ে নিলে ভালো হয় তাহলে ত্বকের উপর পড়লে সহজে ঝেড়ে ফেলা যাবে। দিনের বেলায় হালকা সাজ ও রাতের বেলায় ভারি সাজে বেশি ভালো লাগে। ঘামার পরে টিস্যু দিয়ে হালকা করে চেপে ঘাম মুছতে হবে।
- নিয়মিত সানস্ক্রিন ক্রিম ও লোশন ব্যবহার করলে এটা ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সহায়ক হবে।
- ঘামের কারণে শরীর থেকে প্রচুর পানি বেরিয়ে যায় তাই পানি সাথে রাখতে চেষ্টা করুন ও বেশি বেশি পানি পান করুন।
চুলের যত্ন ও সাজ
- ত্বকের পরেই আসে চুলের যত্ন। মুখটা যতই সুন্দর করে সাজান না কেনো চুলটা পরিপাটি না থাকলে আপনার সাজটা অসম্পুর্ণ থেকে যাবে। নববর্ষের আগের দিন দুই চামচ টকদই এর সাথে একটা ডিম মিশিয়ে চুলে ম্যাসেজ করুন। ২০মিনিট রেখে হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে কন্ডিশনার দিতে ভুলবেন না ।
- চুলের সাজ বলতে শাড়ির সাথে খোঁপা বা বেণিটাই মানানসই। বেণির সাথে বিভিন্ন রকমের ফুল বা ফুলের মালা আপনার সৌন্দর্যকে আরো ফুটিয়ে তুলবে। সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে ফ্রেঞ্চ বেণি করতে পারেন বা চুল খোলাও রাখতে পারেন।
- অনেকেই আবার চুলে রং করতে পছন্দ করেন বিশেষ করে কম বয়সী মেয়েরা। অসুবিধা নেই তবে মানানসই যেন হয়। ঘরে বসেই ভালো ব্রান্ডের রং ব্যবহার করতে পারেন। আবার সুযোগ থাকলে বিউটি পার্লারে গিয়েও রং করাতে পারেন। যারা চুলে রং করে থাকেন তারা অবশ্যই নিয়মিত কালার ট্রিটেড হেযার কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।
বৈশাখি গহনার সাজ
সচরাচর গহনা বলতে এখন সবাই ছোট কানের দুলই পরে থাকে তবে বর্ষ বরণ বলে কথা। এই দিনে বৈশাখের শাড়ির বা সালোয়ার কামিজের সাথে মিল রেখে হরেক রকম গহনা আপনি পরতেই পারেন। শাড়ির সঙ্গে ভারি গহনাটা মন্দ নয়। বিডসের মালা ও ছোট ঝোলানো দুল পরতে পারেন। এছাড়া মাটির গহনাটা বেশ মানানসই। সালোয়ার কামিজের সঙ্গে ছোট কড়ির দুল ভালো লাগবে।