ফ্রিজের খাবার থাকবে আরও সতেজ

ফ্রিজের খাবার থাকবে আরও সতেজ

শিমি আক্তার : বর্তমান সময়ে আমাদের বাসগৃহে ব্যবহৃত অতিমূল্যবান সামগ্রীর মধ্যে ফ্রিজ অন্যতম ও অত্যাবশ্যকীয় একটি পণ্য। খাদ্যসামগ্রী, ঔষধ বা অন্যান্য উপাদানের বাড়তি অংশ যেন নষ্ট না হয় সেজন্য হিমায়িত করে রাখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আর এই কাজটি আমরা ফ্রিজের মাধ্যমে করে থাকি। ফ্রিজ শুধুমাত্র আমাদের খাবার সামগ্রী পচনের হাত থেকে রক্ষা করে না, আরামদায়ক জীবনযাপনেরও সহায়ক। আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা অনেক সহজ করে দিয়েছে ফ্রিজ। বর্তমান যুগে এটি ছাড়া বলতে গেলে আমরা একটা দিনও চলতে পারি না। ফ্রিজের সুফলতার জন্য এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলা উত্তম। তাহলে পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য ভালো থাকার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ভালো থাকবে আপনার ফ্রিজেরও। আসুন আমরা সংক্ষেপে জেনেনি ফ্রিজের কিছু পরিচর্যাঃ


refrigerator

  • ১. ফ্রিজে খাবার আলগা রাখবেন না, এতে এক খাবারের গন্ধ অন্য খাবারে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বাতাস প্রবেশ করতে না পারে এমন পাত্রে রান্না করা খাবার ফ্রিজে রাখুন।
  • ২. কখনোই গরম খাবার ফ্রিজে রাখবেন না, রান্না শেষে খাবার ঠান্ডা করে ফ্রিজে রাখুন।
  • ৩. ফ্রিজে যখন ডিম রাখবেন খেয়াল করুন যেন ডিমের মোটা অংশ নিচের দিকে থাকে, তাহলে ডিম অনেক দিন ভালো থাকবে।
  • ৪. শাক-সবজি, ফলমূল বা এ জাতীয় যা কিছুই রাখুন ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে তারপর ফ্রিজে রাখুন। ধুয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখলে ফ্রিজে গন্ধ হবে না।
  • ৫. সকল ধরনের সবজি প্লাস্টিকের ব্যাগ,প্যাকেট বা কন্টেইনারে রাখুন। প্লাস্টিকের ব্যাগ,প্যাকেট বা কন্টেইনারের মুখ শক্ত করে বন্ধ করে নিন, তাহলে শাক-সবজি, ফলমূল ভালো থাকবে এবং টাটকা থাকবে।
  • ৬. কাঁচা মরিচের বোঁটা ফেলে দিয়ে প্লাস্টিকের ব্যাগ বা প্যাকেটর মুখ শক্ত করে বেধে ফ্রিজে রাখুন তাহলে অনেক দিন ভালো থাকবে।
  • ৭. বিভিন্ন ধরনের পাতা জাতীয় শাক ( যেমনঃ ধনে পাতা, লেটুস পাতা, পুদিনা পাতা ইত্যাদি) ফ্রিজে রাখার পরও শুকিয়ে যেতে পারে তাই এগুলোর গোড়া কেটে ফ্রিজে রাখুন সহজে শুকাবে না।
  • ৮. শসা ও টমেটো অনেক দিন ভালোরাখার জন্য আলাদা আলাদা প্যাকেটে রাখুন ।
  • ৯. ঔষধ রাখার জন্য ফ্রিজের ভেতর এমন স্থান নির্বাচন করুন যে জায়গা সচরাচর ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না।
  • ১০. বারবার গরম ও ঠান্ডা করা খাবার ফ্রিজে বেশি রাখবেন না, এতে ব্যাকটেরিয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে । তাই ফ্রিজে কোনো খাবার রেখে বের করার পর একবারেই গরম করে খেয়ে ফেলার চেষ্টা করুন।
  • ১১. মাছ-মাংস সংরক্ষণের জন্য চর্বি বা তেল ও ময়লা ফেলে দিয়ে তারপর ফ্রিজে রাখুন। প্রতিদিনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেটে ভাগ করে রাখুন তাতে ঝামেলা কম হবে।
  • ১২. দীর্ঘদিন মাছ-মাংস ফ্রিজে না রাখাই ভালো, তাতে খাবারের স্বাদ কমে যেতে পারে এবং যথাযথভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে না রাখলে র্দুগন্ধ ছড়াতে পারে।
  • ১৩. কিছু কিছু ফ্রিজে ডিওডোরাইজার কার্টিজ থাকে, যা ফ্রিজের অভ্যন্তরীণ গন্ধ শুষে নেয়, আপনার ফ্রিজে এই ধরনের কনফিগারেশন থাকার পরেও যদি র্দুগন্ধ লক্ষ্য করে থাকেন তাহলে আপনাকে ঐ কার্টিজটি পরিষ্কার করতে হবে। কার্টিজটি খুলে একটি গামলার (বোল) মধ্যে গরম পানিতে ৪ ঘন্টার বেশি রেখে তারপর কার্টিজটি তুলে কমপক্ষে ৮ঘন্টা শুকিয়ে পুনরায় ফ্রিজে সংস্থাপন করুন, দেখবেন ফ্রিজে আর র্দুগন্ধ ছড়াবে না।
  • ১৪. ফ্রিজ পরিষ্কার করার আগে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণকারী নবটি বন্ধ করে দিন এবং বরফ গলে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকুন। বরফ গলে গেলে ফ্রিজের ড্রয়ার, ট্রে ও অন্যান্য অংশ খুলে বের করে নিয়ে হালকা কুসুম গরম পানিতে লিকুইড সাবান মিশিয়ে খুলে রাখা তাক, ড্রয়ারসহ ভেতরের অংশগুলো পরিষ্কার করুন। প্রয়োজনে ১ টেবিল চামচ ক্লোরিন ব্লিচ ১ গ্যালন পানিতে মিশিয়ে ফ্রিজের ওয়াল, সিলিং এবং ফ্লোর পরিষ্কার করতে পারেন। ফ্রিজের বাইরের অংশ পরিষ্কার করার জন্য ভিনেগার বা মাইল্ড ধরনের ক্লিনার ব্যবহার করুন। শেষে ঠান্ডা পানিত ধুয়ে নিন তারপর ভালো করে নরম কাপড় দিয়ে মুছে শুকিায়ে নিন । ফ্রিজ পুনরায় চালু করে ১৫ মিনিট পর খাবার রাখুন।
  • ১৫. ফ্রিজ খাবার কখোনোই দেয়াল ঘেঁষে রাখবেন না। খোলামেলা জায়গায় রাখার চেষ্টা করুন, তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে ফ্রিজ যেখানে রাখবেন সেখানে যেন সরাসরি রোদ না পড়ে।
  • ১৬. বছরে কমপক্ষে একবার হলেও ফ্রিজের পেছনে অথবা নিচে থাকা কয়েল পরিষ্কার করুন। পরিষ্কার করার সময় ইলেকট্রিক সূইচ বন্ধ করে নিন। ভ্যাকুয়াম ক্লিনার বা নরম ব্রাশ দিয়ে ফ্রিজ পরিষ্কার করতে হবে।
  • ১৭. ফ্রিজের উপর কখনো ভারী জিনিস রাখবেন না।

আসুন, “ফ্রিজ” নামক এই নিত্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রটির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে সুরক্ষিত রাখি আমাদের স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষিত থাকুক আমাদের সম্পদ। favicon

Sharing is caring!

Leave a Comment