পার্কের নাম ‘গ্রিন ভ্যালি’

পার্কের নাম ‘গ্রিন ভ্যালি’

  • রনি আহমেদ

দর্শনীয় সব স্থানকে বুকে ধারণ করে ইতিহাস এবং ঐতিহ্যে ভরপুর নাটোর জেলা। নাটোরের ঐতিহ্যের সৌন্দর্যকে আরও এক ধাপ রাঙিয়ে তুলেছে ‘গ্রিন ভ্যালি পার্ক’। দেশের বিপুল সংখ্যক বিনোদনপ্রেমীদের বড় বিনোদন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে নাটোরের লালপুরে প্রায় ১২৩ বিঘা ভূমির উপর নির্মিত গ্রিন ভ্যালি পার্ক। 

পার্কটি সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে গড়ে তোলা হয়েছে। এর চারিদিকেই বাহারি সব ফুলের সুবাস ছড়ানো গন্ধ যে কাউকেই মুগ্ধ করবে। এ ছাড়াও এখানে খেলাধুলা করার জন্যে রয়েছে বিশাল বড় মাঠ। এমনকি দর্শনার্থীদের জন্যে পার্কের মধ্যে রয়েছে বসার মনোরম সব জায়গা। 

যা কিছু দেখতে পাবেন

পার্কটিতে প্রবেশ করতে প্রথমেই দেখা মিলবে হরেক রকমের ফুলের। এর ডান দিকে তাকাতেই চোখে পড়বে ভাস্কর্যের ডলফিনের মুখ থেকে পানি বের হওয়ার দৃশ্য। এর সাথেই দেখা মিলবে হাতি ও তার বাচ্চাদের। এর পাশ ঘিরেই ঝাউবন বয়ে গিয়েছে, যেটা সব দর্শনার্থীদের নজর কেড়ে নেয়।

ডান দিকের সৌন্দর্য উপভোগ করতেই হঠাৎ করে চোখের নজর গিয়ে পড়বে বাম দিকের সৌন্দর্যমণ্ডিত দৃশ্যগুলোতে। যেখানে প্রথমেই দেখা মিলবে বিশাল আকৃতির ডায়নোরসরের ভাস্কর্য। এর পাশেই কাঠ দিয়ে তৈরি বিশাল আকৃতির নৌকা দেখা যায়। নৌকার উপর দর্শনার্থীরা আয়েশ করে বসে সময় কাটাতে পারেন। এছাড়াও এর চারপাশে বিভিন্ন প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় গাছের দেখা পাওয়া যায়। 

এতসব কিছু দেখতে দেখতে পশ্চিম দিকে কয়েক কদম যেতেই দেখা পাওয়া যাবে প্রায় ৩০ একর ভূমি নিয়ে কৃত্রিমভাবে গড়ে তোলা আঁকাবাঁকা লেকের, যেখানে স্পিডবোটে করে দর্শনার্থীরা সমস্ত লেক ঘুরে দেখেন। তবে এখানে সবচেয়ে বেশি মানুষকে আকৃষ্ট করে লেকের উপর নির্মিত সেতু। লেক থেকে উত্তর দিকে একটু এগুতেই দেখা পাওয়া যায় ভূতের বাড়ি। তার সাথেই রয়েছে হিমালয়ের মতো করে নির্মিত পাহাড়। আর সেখানে অবস্থিত ঝরণার পানিতে গোসল করতে ভীড় জমে অসংখ্য মানুষের। 

তবে এই পার্কের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্পট গুলো হলো শিশুদের বিনোদনের মাধ্যম প্যাডেল বোট, নাগরদোলা। তবে এখানেই শিশুদের আনন্দ থেমে থাকে না। তাদের আনন্দের অনেকটা জায়গাজুড়ে রয়েছে বুলেট ট্রেন। বুলেট ট্রেনে চড়ে তারা আনন্দের সাথে পার্কের পশ্চিম প্রান্ত থেকে দক্ষিণ প্রান্তে যেতে পারে। এসব কিছুর বাইরেও শিশুদের আনন্দের জন্যে রয়েছে ম্যারিগোরাউন্ড, হানি সুইং, পাইরেট শিপের মতো স্পট।

এতসব কিছুর পরেও দর্শনার্থীদের জন্যে রয়েছে পিকনিক এবং শ্যুটিং স্পট। যেখানে দর্শনার্থীরা এসে পিকনিক করেন। এছাড়া শ্যুটিং স্পট গুলোতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ শ্যুটিং করতে আসেন। এর বাইরেও এখানে অ্যাডভেঞ্চার রাইডস, কনসার্ট অ্যান্ড প্লে গ্রাউন্ড ও সভা-সেমিনারের জায়গা রয়েছে। এতসব সুবিধা থাকার কারণে গ্রিন ভ্যালি পার্ক দেশের দর্শনার্থীদের কাছে বিশাল এক পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। পরিবারসহ চাইলেই যে কেউ ঘুরে আসতে পারেন সৌন্দর্যমণ্ডিত পর্যটন কেন্দ্রটিতে।

যে সময় খোলা থাকে

প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত পার্কটি খোলা থাকে। আর দর্শনার্থীদের জন্যে প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা।

যেভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে নাটোরের বাসে উঠে বনপাড়া এসে নামতে হবে। বনপাড়া থেকে ৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে পৌঁছে যাবেন গ্রীন ভ্যালি পার্কে। এছাড়াও, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল মাধ্যেম দেশের যে কোনো জায়গা থেকে এই পার্কে আসতে পারবেন।

Sharing is caring!

Leave a Comment