জাবিতে ১৯ বিভাগের পরীক্ষা স্থগিত, সেশন জটের আশঙ্কা
আসাদুজ্জামান, সাভার : শিক্ষকদের চলমান বেতন কাঠামোর বৈষম্যে দূরীকরণের দাবিতে আন্দোলনের কারণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ১৯ বিভাগের নির্ধারিত চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। আজ (১৬ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকর অফিস সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে থেকে জাবি শিক্ষকদের কর্মবিরতি শুরু হয়। পরে ১১ জানুয়ারি থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু হবার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের আওতাধীন দশটি বিভাগ ও দুইটি ইন্সটিটিউটের প্রায় ১৯টি ব্যাচের চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
আন্দোলন চলমান থাকলে চলতি মাসেই আরও ৬টি ব্যাচের চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিতের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন। এছাড়াও সকল বিভাগের নিয়মিত একাডেমিক কমিটি সভা, বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটির সভাসহ সকল সভাও বন্ধ রয়েছে।
পরীক্ষা স্থগিত হওয়া বিভাগগুলোর মধ্যে আছে- অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষ, পরিসংখ্যান বিভাগের প্রথম বর্ষ ও গণিত বিভাগের চতুর্থ বর্ষ, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষ, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের পিএইচডি ও মাস্টার্স, ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির দ্বিতীয় বর্ষ, আইবিএ দ্বিতীয় বর্ষ, নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ, সরকার ও রাজনীতি এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের প্রথম বর্ষ, প্রতœতত্ত¡ বিভাগের প্রথম বর্ষ, এমফিল ও পিএইচডি, বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় ও চতুর্থ এবং এমফিল ও পিএইচডির চূড়ান্ত পরীক্ষা। এছাড়া এমবিএসহ সকল ধরণের সান্ধ্যকালীন কোর্সের সকল ক্লাস-পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়েছে।
জানুয়ারি মাসে আন্দোলন চলতে থাকলে লোক-প্রশাসন বিভাগের প্রথম বর্ষ ও অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষ, ফার্মেসী ও ইতিহাস বিভাগের চতুর্থ বর্ষ, নৃবিজ্ঞান বিভাগের এমফিল এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষ চূড়ান্তপর্বের পরীক্ষা স্থগিত হওয়ার সমভাবনা দেখা দিয়েছে।
ক্লাস-পরীক্ষা না হওয়ায় শিক্ষার্থীরাও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান- ‘শিক্ষকরা কেবল নিজেদের স্বার্থই দেখছেন, আমাদের স্বার্থ তাঁরা বিবেচনায় রাখছেন না। আমাদেরকে বলি না বানিয়ে নিজেদের দাবি আদায়ে তাদের অন্য কোনো সমাধান খুঁজে বের করা উচিত।’
জাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. খবির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ আটমাস ধরে আন্দোলন করে আজ এই কঠোর অবস্থানে এসেছি। এটার জন্য আমরা দায়ী নই। শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হচ্ছে সেটা কোনভাবেই পূরণ করা সম্ভব হবে না। তাই সমস্য সমাধানের জন্য সরকারের উচিত আমাদের যৌক্তিক দাবীগুলো মেনে নেওয়া। দাবী মেনে নিলেই এই সমস্যার সমাধান মূহুর্তেই হয়ে যাবে।’