নিজামীর ফাঁসি বহাল
নিউজ ডেস্ক : একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির দণ্ড বহাল রেখেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। আজ (৬ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।
আপিল বিভাগ তিনটি অভিযোগে নিজামীর ফাঁসি বহাল রেখেছেন। দুটি অভিযোগে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। ফাঁসির সাজার একটি অভিযোগসহ তিনটি অভিযোগ থেকে তাঁকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
এর আগে মুক্তিযুদ্ধকালে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের নীলনকশা বাস্তবায়নকারী গুপ্তঘাতক আলবদর বাহিনীর প্রধান নিজামীকে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
ট্রাইব্যুনালে নিজামীর বিরুদ্ধে ১৬টি অভিযোগের মধ্যে আটটি প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে বুদ্ধিজীবী হত্যা, গণহত্যাসহ চারটি অভিযোগে (২, ৪, ৬ ও ১৬) নিজামীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। হত্যা, অপহরণ ও নির্যাতনের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র ও সহযোগিতা করার চারটি অভিযোগে (১, ৩, ৭ ও ৮) তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বাকি আটটি অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সেগুলো থেকে তাঁকে খালাস দেন ট্রাইব্যুনাল।
আপিলে পাঁচটি অভিযোগে (২, ৬, ৭, ৮ ও ১৬) নিজামীর সাজা বহাল রেখেছেন সর্বোচ্চ আদালত। এর মধ্যে ২, ৬ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং ৭ ও ৮ নম্বর অভিযোগে তাঁর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। আপিলে তিনটি অভিযোগ (১, ৩ ও ৪) থেকে তাঁকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
গত ৮ ডিসেম্বর নিজামীর আপিলের ওপর দুই পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়। এরপর আপিল বিভাগ রায় ঘোষণার তারিখ ৬ জানুয়ারি ধার্য করেন।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে করা এক মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন নিজামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই বছরের ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
২০১২ সালের ২৮ মে ট্রাইব্যুনাল নিজামীর বিরুদ্ধে ১৬টি অভিযোগ গঠন করে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বিচার শুরু করেন। ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর এই মামলার রায়ে নিজামীকে ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন নিজামী। গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর আপিলের শুনানি শুরু হয়। ১১ কার্যদিবস শুনানি শেষে ৮ ডিসেম্বর মামলার কার্যক্রম শেষ হয়। আজ আপিল মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।