রপ্তানি আয়ে বাংলাদেশের রেকর্ড
নিউজ ডেস্ক : ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩২০ কোটি ডলার। এটি গত কয়েক বছরে রপ্তানি আয়ে বাংলাদেশের একটি রেকর্ড। আর এশিয়ার অন্য দেশগুলোতে যখন মন্দাবস্থা চলছে, তখন বাংলাদেশের এ ধরনের ফলের প্রশংসায় মেতেছে বিশ্বের গণমাধ্যম।
ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিক মন্দার মধ্যে বিনিয়োগকারীরা যদি অন্য কোথায় বিনিয়োগ করতে চান তো বাংলাদেশকে বেছে নিতে পারেন। আঞ্চলিক অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না গেলেও বাংলাদেশ ডিসেম্বরে রেকর্ড পরিমাণ আয় করেছে পণ্য রপ্তানি থেকে। আর বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিশ্বব্যাংকও বলেছে, চলতি বছর ৬ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি করবে।
বিশ্বের অন্যান্য উন্নত ও উদীয়মান অর্থনীতির দেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শ্লথ হলে উন্নয়নশীল দেশ বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা ধরে রেখেছে। বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রে তাদের পণ্যের বাজার বিস্তৃত করেছে।
ডিসেম্বরে উইন গ্যালাপ তাদের জরিপের তথ্য প্রকাশ করে। এতে দেখা যায়, ২০১৬ সালে বিশ্বের ৬৮ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে আশাবাদী দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই জরিপে ৬৬ হাজারের বেশি মানুষের মত নেওয়া হয়।
সরকারি তথ্য মতে, ২০১৫ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু বার্ষিক গড় আয় দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার টাকা। তবে ২০২১ সালের মধ্যে এর পরিমাণ তিন লাখ ২০ হাজার টাকা দাঁড়াবে বলে মনে করছে ক্ষমতাসীন সরকার।
বাংলাদেশের দেশজ উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে শতকরা ২০ ভাগ। এর মধ্যে বস্ত্র খাতের অবদান শতকরা ৮০ ভাগ। আর এ খাতের দুই-তৃতীয়াংশ পণ্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে রপ্তানি হয়েছে। গত কয়েক বছরে বিভিন্ন দুর্ঘটনার পর বস্ত্র খাতের এ ধরনের ফল আরো আশা জাগিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বাজায় থাকায় রপ্তানি বাড়াতে সাহায্য করেছে। গত বছরের শুরুর দিকে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় দেশের ১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ২০১৩ সালের শেষ দিকে ও ২০১৫ সালের প্রথম দিকে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা যায়। তবে সেখান থেকে স্থিতিশীলতার দিকে ফিরেছে দেশ। এতে দেশের পোশাকশিল্প খাতের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে।
জাহিদ হোসেন বলেন, সরকার চলতি অর্থবছরে ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। তবে শুধু পোশাক রপ্তানি দিয়ে এটি হবে না। কারণ বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম। ফলে রপ্তানিতে বহুমুখীকরণ করতে হবে সরকারকে।
ক্যাপিটাল ইকোনমিকস লিমিটেডের সিঙ্গাপুরের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড্যানিয়েল মার্টিন বলেন, পণ্যের উৎপাদন খরচ ও দাম কম থাকায় বৈশ্বিক চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতি বছর বাংলাদেশের পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়ছে।