হতে চাই গেমিং এন্ট্রাপ্রেনিউর
- সাজিয়া আফরিন সুলতানা মিথিল
প্রযুক্তি একটা অস্পষ্ট রেখা তৈরি করছে কাল্পনিক জগৎ এবং বাস্তবতার মাঝে। সাধারণত তড়িৎ সংকেতগুলো অনুবাদিত হয় আমাদের মস্তিষ্ক দ্বারা। গেইমাররা গড়ে প্রতি সপ্তাহে ৭ ঘন্টা করে খেলে। লাইমলাইট নেটওয়ার্ক নামের একটি প্রতিষ্ঠান ২০০৯ সালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী তারা আরো বেশি সময় দেয় ইউটিউবে তাদের সঙ্গীদের সাথে।
এর মানে এই সুযোগকে যদি কাজে লাগানো যায় তাহলেই কিন্তু একজন সফল ক্রিড়াদ্যোক্তা হওয়া যায়। গেমিং এন্ট্রাপ্রেনার তৈরি করায় সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে পাশ্চাত্যের দেশগুলো। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতও ভর্চুয়াল রিয়েলিটি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদি কাজে লাগিয়ে তৈরি করছে বিভিন্ন গেইম। আর্গুমেন্টেড রিয়েলিটি, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি গেইমে বা বাস্তব জীবনে ব্যবহার করা হতে পারে উদ্যোক্তাদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ। দূর্ঘটনা এড়াতে এখন পাইলটদের প্রশিক্ষণও প্রাথমিকভাবে করানো হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে। তার মানে এদেশেও এই ক্ষেত্রকে আরো প্রসারিত করার মাধ্যমে লাভবান হতে পারেন গেমিং এন্ট্রাপ্রেনিউররা। এরজন্য এই সেক্টর সম্বন্ধে জানতে হবে বেশকিছু বিষয়। যারমধ্যে রয়েছে:
১. ব্লকচেইন গেইমিং
২. ক্রস প্ল্যাটফর্ম অ্যান্ড ওপেন সোর্স ডেভেলপমেন্ট
৩. আর্গুমেন্টেড রিয়েলিটি
৪. ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
গেমিং ইন্ডাস্ট্রি হচ্ছে একটি বিশাল মার্কেটপ্লেস যেটার ভ্যালু বিলিয়ন ডলারের ও বেশী। নিন্টেন্ডো সুইচ, প্লেস্টেশন, উইন্ডোজ, এনড্রয়েড বিভিন্ন প্লাটফর্ম ও ডিভাইসের জন্য নির্মাণ করা গেম এর চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ‘গেমার’ এখন একটা সম্মানজনক পেশাও বলা যায়। গেমিং কোম্পানিগুলো তাদের নতুন নির্মিত গেমগুলোতে ত্রুটি খুজে বের করতে বা ইউজার এক্সপিরিয়েন্স উন্নত করতে গেমারদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে অনেক গেমিং প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে যেখানে নানান বয়সের গেইমারদের অংশগ্রহণ ঘটে থাকে। গেইমাররা অনলাইন প্লাটফর্মে বিশেষ করে ইউটিউবে গেম লাইভ স্ট্রিমিং করে থাকেন এবং এসব স্ট্রিমিংয়ে অডিয়েন্স বা দর্শকও থাকেন প্রচুর। বিনিময়ে গেমাররা ইউটিউব থেকে প্রচুর অর্থ পেয়ে থাকেন বিজ্ঞাপন প্রদর্শন বাবদ। বিখ্যাত কিছু গেমারদের কথা বলা হলে প্রথমেই চলা আসবে পিউডিপাই (PEWDIEPIE) এবং নিঞ্জার (NINJA) কথা।
প্রযুক্তিতে যথেষ্ট জ্ঞানসম্পন্ন যে কেউই এন্ড্রয়েড গেম ডেভেলপমেন্ট শিখে আকর্ষণীয় মোবাইল গেম নির্মাণ করতে পারেন। এরপর সেটি গুগল প্লে স্টোরে পাবলিশ হলে এবং গেমটি পপুলার হলে সেটি থেকে অনেক অর্থ উপার্যন করা সম্ভব।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে আস্তে আস্তে সবই হতে থাকবে প্রযুক্তিনির্ভর। ফিল্ডে নেমে অনেককিছু করার বদলে সব হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে ঘরে বসে সহজেই। যার জন্য এখন থেকেই এইদিক নিয়ে ভাবতে হবে। বিশেষ করে যারা প্রযুক্তি নিয়ে ব্যবসা করতে ইচ্ছুক, তাদের জন্য কিন্তু এইক্ষেত্র বেশ লাভজনক এবং জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। তবে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে আর দেরি কিসের? এই সেক্টরে প্যাশন থেকে থাকলে পর্যাপ্ত ঘাটাঘাটি করে নেমে পড়ুন আর বাজারকে দখল করুন। তবে সাবধান প্যাশন এবং পর্যাপ্ত জ্ঞান ছাড়া এই সেক্টরে নামাটা কিন্তু আপনার জন্য হতে পারে নেহায়াতই বোকামি।
সূত্র: এন্ট্রাপ্রেনার ডটকম
সাজিয়া আফরিন সুলতানা মিথিল : শিক্ষার্থী, ইনোভেশন অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনারশিপ বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি