সিরিজ জেতা হলো না টাইগারদের

সিরিজ জেতা হলো না টাইগারদের

স্পোর্টস ডেস্ক : রেকর্ড গড়লেই কেবল জয় পাওয়া সম্ভব ছিল। কেননা টি-টুয়েন্টিতে এর আগে ১৬৪ রানের বেশি লক্ষ্যমাত্রা পেরোতে পারেনি বাংলাদেশ। শুক্রবার নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়া হলো না। জিম্বাবুয়ের ছুড়ে দেওয়া ১৮১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে তেমন কিছুই করা হলো না। বাংলাদেশ তুলল ১৯ ওভারে সবগুলো উইকেট হারিয়ে ১৬২ রান। ১৮ রানের জয় নিয়ে চার ম্যাচ টি-টুয়েন্টি সিরিজ বাংলাদেশের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিল জিম্বাবুয়েও। জিম্বাবুয়ের ছুড়ে দেওয়া ১৮১ রানের বিশাল এক লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উইকেটে আসা যাওয়ার মধ্যেই ব্যস্ত ছিলেন টাইগার ব্যাটসম্যানরা।

দ্বিতীয় ওভারেই মাদজিভার বলে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য সরকার। ৭ বলে ব্যক্তিগত ১১ রান করে আউট হন তিনি। একই ওভারের শেষ বলে সৌম্যকে অনুসরণ করেন আরেক ওপেনার তামিম ইকবালও। ১ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। দলীয় স্কোর তখন ২ ওভার শেষে ১৩ রান। তবে তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই আবারো উইকেট হারায় টাইগাররা। এবারে সাজঘরে ফেরেন গত ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরিয়ান সাব্বির রহমান। এদিন মাত্র ১ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। একই ওভারে প্যাভিলিয়নে ফেরেন সাকিব আল হাসান। তিনি আউট হন ৪ রান করে। দলীয় স্কোর তখন ৪ উইকেটে ১৭ রান। এরপর ১৪ বলে ১৮ রান করে আউট হয়ে যান ইমরুল। দলীয় রান তখন ৫৩। সেখান থেকেই নুরুল হাসানকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ান মাহমুদউল্লাহ। দুজনে মিলে খেলেন ৩৮ বলে ৫৭ রানের একটি ইনিংস। তবে এই জুটি থেমে যায় ১৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে এসে। রাজার বলে চিগুম্বুরার হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন নুরুল হাসান। ১৫ বল খেলে তিনি করেন ১৫ রান। আর নুরুল যখন আউট হন তখন টাইগারদের দলীয় স্কোর ৬ উইকেটে ১১০। এমন অবস্থায় ক্রিজে আসেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি। দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ এবং মাশরাফি। দুজনে মিলে গড়েন ২৪ রানের জুটি। কিন্তু ৪১ বলে ৫৪ রান করে ফিরে যান দারুণ খেলতে থাকা মাহমুদউল্লাহ। ২টি ছক্কা এবং ৫টি চারের সাহায্যে নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছিলেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। মাহমুদউল্লাহ যখন আউট হন তখন দলের স্কোর ৭ উইকেটে ১৩৪। টাইগারদের জয়ের জন্য তখন দরকার ছিল ২৫ বলে ৪৭ রান। এক ওভার পরেই আউট হয়ে যান মাশরাফি। ১২ বলে ২২ রান করে আউট হয়ে যান টাইগার অধিনায়ক। এরপর ১৯তম ওভারেই সাজঘরে ফেরেন আরাফাত সানি (১০) এবং আবু হায়দার রনি (১৪)। তাতেই ১ ওভার বাকি থাকতেই ১৬২ রানে থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। জিম্বাবুয়ের হয়ে ৩৪ রানে ৪টি উইকেট তুলে নিয়েছেন মাদজিভা। ১৭ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন তেন্ডায় চিশোরো। ২টি উইকেট নিয়েছেন সিকান্দার রাজা।

এর আগে, শুক্রবার সিরিজের চতুর্থ ও শেষ ম্যাচে টসে জিতে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার দলকে ফিল্ডিংয়ে পাঠান জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক এলটন চিগুম্বুরা। খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে বিকাল ৩টায় শুরু হয় ম্যাচটি। টসে হেরে বল করতে নেমে শুরুতেই জিম্বাবুয়ের ইনিংসে আঘাত হানেন টাইগার অধিনায়ক মাশরাফি। প্রথম ওভারের এক বল বাকি থাকতেই সাকিবের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন সিবান্দা (৪)। দলীয় স্কোর তখন ১ উইকেট হারিয়ে ৪ রান। রপর মাতুমবামিকে সঙ্গে নিয়ে শক্ত প্রতিরোধ গড়েন মাসাকাদজা। তবে দ্বিতীয় ওভারে আবু হায়দার রনির বলে শর্ট ফাইন লেগে দারুণ এক ক্যাচ তুলেছিলেন মাতুমবামি। কিন্তু সহজ সেই ক্যাচটি ফেলে দেন তাসকিন। এই ক্যাচ ফেলার খেসারতও দিতে হয় বাংলাদেশকে। 


মাসাকাদজা এবং মাতুমবামি মিলে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তোলেন ৫৬ বলে ৮০ রান। তবে ম্যাচের ১১তম ওভারের প্রথম বলেই মাতুমবামিকে প্যাভিলিয়নে ফেরান রনি। দলীয় ৮৪ রানে ব্যক্তিগত ৩২ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। এরপর মাসাকাদজা জুটি গড়েন ম্যালকম ওয়ালারের সঙ্গে। তৃতীয় উইকেট জুটিতে তারা ৫ ওভারে তোলেন ৬১ রান। তবে ১৬তম ওভারের প্রথম বলেই তাসকিন বোল্ড আউট করেন ওয়ালারকে। ১৮ বলে ৩৬ রান করে তিনি যখন আউট হন তখন জিম্বাবুয়ের দলীয় স্কোর ৩ উইকেটে ১৪৫। পরের ওভারেই সাকিব তুলে নেন সিকান্দার রাজার উইকেট। তাতেই টি-টুয়েন্টিতে প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে মোট ৫০ উইকেট তুলে নেয়ার রেকর্ড গড়লেন সাকিব। দলের ৪ উইকেট পড়ে গেলেও এক প্রান্ত ঠিকই আগলে থেকেছেন ওপেনার মাসাকাদজা। খেলেছেন পুরো ২০ ওভারই। করেছন ৫৮ বলে ৯৩ রান। ৫টি ছয় এবং ৮টি চারে সাজানো ছিল তার ইনিংসটি। অন্যদিকে ৫ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন চিগুম্বুরা। বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন মাশরাফি, আবু হায়দার রনি, তাসকিন এবং সাকিব। 

চার ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুটিতে দারুণ জয় তুলে নিয়েছিল টাইগাররা। তবে পরের ম্যাচটি তারা ৩১ রানে হেরে বসে জিম্বাবুয়ের কাছে। এরপর আজকের ম্যাচেও ১৮ রানে হেরে  সিরিজের ট্রফিটা জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক চিগুম্বুরার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে হলো মাশরাফিকে। favicon59  
   

Sharing is caring!

Leave a Comment